Parthenium ঋত্বিক দেবনাথঃ বছর কয়েক আগেও কদাচিৎ রেল লাইন বা রাস্তার ধারে দেখা যেত এই ঘাসের মতো আগাছাগুলি দেখতে পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে বহরমপুর শহরের আনাচে-কানাচে গিজ গিজ করছে পার্থেনিয়াম । স্কোয়ার ফিল্ডের আশেপাশে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে এই গাছের সংখ্যা ক্রমশ্য বেড়ে চলেছে। ঘাসের মতন দেখতে হলেও আদতেও এটি ঘাস নয়। পাশাপাশি দেখতে সুন্দর এই গাছগুলি চামড়ার সমস্যার থেকে শুরু করে শ্বাস কষ্টের মতন মারাত্মক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এছাড়াও গবাদি পশুদের ওপরও চরম প্রভাব ফেলে বলে জানান পরিবেশকর্মী সজল বিশ্বাস। পার্থেনিয়ামের বিজ্ঞানসম্মত নাম পার্থেনিয়াম হিসটেরোফিরাস । সচারাচর উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় জন্মায় এই গাছ । এবং সেখানেই বহুল পরিমাণে দেখাও যায়। ঘাসের মতন দেখতে এই গাছ আসলে ভারতীয় নয়। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৯৫০-এর দিকে আমেরিকা ভারতকে প্রথম গমের কন্টেনার পাঠায় হয়। সেই গমের সঙ্গেই অজান্তে আসে পার্থেনিয়াম গাছের বীজ । তারপরেই ভারতে ইনভেসিভ অর্থাৎ দ্রুত গতিতে সর্বত্র ছড়িয়ে পরে । ভারতে ১৯৬৮ সালে প্রথম পার্থেনিয়াম থেকে ঘটিত রোগের কথা জানা যায়। যেটি পার্থেনিয়াম ডার্মাটাইসিস রোগ নামে পরিচিত।
এছাড়াও সূর্যের আলো, মাটির জল সব ব্যবহার করছে পার্থেনিয়াম গাছ। তাই সেখানকার ইকো সিস্টেমও নষ্ট করে দেয়। পাশপাশি বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ এটি। কারণ একটি পার্থেনিয়াম থেকে ২৫ হাজারের বেশি রেণু বাতাসে ছড়িয়ে দিতে পারে, ফলে সেটা বায়ুকে ক্রমশ দূষিত করছে। এবং সেই রেনু নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরে গেলে তার তৈরি হচ্ছে নানান শারীরিক সমস্যার।
কীভাবে একজন সাধারণ মানুষ বুঝবে ? তার পার্থেনিয়াম থেকে অ্যালার্জী হচ্ছে। ডাঃ সুপ্রতীক চক্রবর্তী জানান, রোগীদের সমস্যা হলে প্রশ্ন করা হয় পার্থেনিয়াম গাছ বাড়ির বা কর্মস্থলের আশেপাশে থাকছে কিনা। সেভাবেই জানা যায়। বর্তমানে ভারতে প্রায় ৪০% গাছ থেকে হওয়া অ্যালার্জীর মূল কারণ এই পার্থেনিয়াম। এই গাছ ২ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এবং চোখের নিমিষে জঙ্গলে পরিণত হয়ে যায়। এছাড়াও এক বছরে ৪ বার ফুল দেয় । এবং এই বর্ষা এবং শীতকালে দ্রুত গতিতে ছড়ায়।এই গাছ থেকে পরিবেষ রক্ষা করার একটাই উপায়। কেটে ফেলা এছাড়াও খুব সহজেই খাদ্যলবণ ব্যবহার করে এই গাছগুলিকে মেরে ফেলা যেতে পারে। তবে এই গাছ পুড়িয়ে ফেলতে গেলে আরও বিপদ হতে পারে বলেই জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা।