এখন খবরমধ্যবঙ্গ নিউজপরিবেশবিনোদনহেলথ ওয়াচখেলাঘরে বাইরেলাইফস্টাইলঅন্যান্য

প্রতিশ্রুতিই সার, অকেজো হাত পা নিয়ে মহাকাশের সন্ধানে একাই এগিয়ে চলেছে মেধাবী আলম

Published on: September 2, 2022

PABITRA TRIBEDI: ছোট থেকেই তার অনেক প্রশ্ন। কিন্তু সে প্রশ্ন করেনি কেন জন্ম থেকে তার হাত-পা সেভাবে কাজ করে না। অন্যরা দৌড়ে বেড়ালেও সে চলতে পারে না। নিজেকে নিয়ে নয়। সে প্রশ্ন করে মানুষের স্বার্থে। অজানাকে জানার জন্য। দুই হাত, দুই পা কাজ না করায় ভালো করে হাঁটতেও পারে না। বড়োয়া বিধানসভা এলাকার সুন্দরপুর অঞ্চলের বৈদ্যনাথপুর গাঁয়ের ফুটো চাল আর এক চিলতে ঘর থেকে কিশোর আলম মহাকাশ নিয়ে প্রশ্ন করে । ছোট্ট থেকেই স্বপ্ন দেখতো। এখনো দেখছে। তবে প্রতিশ্রুতির ফানুস উড়ে গিয়েছে। কেউ কথা রাখেনি। এখন স্বপ্নের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য একাই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সে । বাবার মুদিখানার ছোট দোকানের আয়ে ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরায়।মাধ্যমিকে 89.2 শতাংশ অর্থাৎ 625 নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল ছেলেটি। হইচই পড়ে গিয়েছিল এলাকায়। বিধায়ক, রাজনৈতিক নেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছিল বাড়িতে। ভেবেছিলো এবার দিন বদলাবে। স্বপ্ন দেখার সাহস বেড়েছিল। কিন্তু, অতঃপর । প্রতিশ্রুতিই সার । তবে কীসের জোরে, কেমন করে স্বপ্নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে গ্রামের স্কুলের ফার্স্ট বয় ? তার সম্বল উচ্চ মেধা। ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লক্ষ যোজন দূরে অজানাকে জানার স্বপ্ন দেখতে লড়তে হচ্ছে তাকে একাই। সঙ্গে শুধু সাহস দিয়ে চলেছে তাঁর গৃহবধূ মা। মুর্শিদাবাদ জেলার প্রান্তিক এলাকার বিশেষভাবে সক্ষম ওই ছাত্র সায়েন্স নিয়ে ভর্তি হয়েছে কান্দি রাজ হাইস্কুলে । এখন ঘর ভাড়া নিয়ে কান্দিতেই পড়াশোনা করছে। শুক্রবার আলম চিন্তিত হয়ে জানিয়েছে, কি হবে দেখি এখন? মহাকাশ নিয়ে পড়ার ইচ্ছা। মহাকাশ জানতে খুব ইচ্ছে করে। কেমন করে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে? স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনও সুযোগ-সুবিধা, টাকা পাইনি। তার মা আলম আরা বেগম এদিন আক্ষেপের সঙ্গে জানিয়েছেন, কান্দি পৌরসভার চেয়ারম্যান ঘর ভাড়ার টাকা দেন। এছাড়া আর কারো কাছ থেকে কোনও সুবিধা এখনো পায়নি। কোনওরকমে পায়ে লেখে আমার ছেলে । ছোট থেকে এই রকম। যেটুকু চিকিৎসা করেছি তাতে কিছু হয়নি। কেউ পাশে দাঁড়ালে ছেলেটি পড়তে পারে। আলমকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে এলাকাবাসী। আনন্দ নগর জুনিয়র হাইস্কুলের পর গড্ডা হাইস্কুল । সব প্রতিকূলতা পার করে ফার্স্টবয় আলম । এখন সে পৌঁছেছে কান্দি শহরে বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত কান্দি রাজ হাইস্কুলে। তার স্বপ্ন অনেক দূরের। একাই লড়ছে — আলম। ঠিক যেভাবে, অকেজো হাত পা এর বাধা কে দূরে সরিয়ে এগিয়ে এসেছে সে।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now