Berhampore Loksabha: ঘরের বনাব বাইরের ? ভোটের ক্রিজে লড়াই কেমন বহরমপুরে ?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

Berhampore Loksabha ২০২৪ সালের ভোটের সাথে কী  মিল  ১৯৯৮ সালের নির্বাচনের  ? সৌরভ গাঙ্গুলীর ভাষায়   “ ব্রেট লি”  অধীরকে  আউট  করার জন্য ময়দানে পাঠান । অপরদিকে  রানিং ক্রিজে ডাক্তার   নির্মল সাহাও ছক্কা হাঁকানো জন্য ছটফট করছেন ।

 

Berhampore Loksabha অদ্ভুত সমাপতন ! ২৬ বছর  আগে ১৯৯৮ সালেও  ২০২৪ সালের মতো দুই “ঘরের ছেলে”  থুড়ি ,  দুই ঘরের মাষ্টারমশাইয়ের সাথে  বহিরাগত প্রার্থীর লড়াই হয়েছিল।  তফাত  শুধু  সেই  বহিরাগত প্রার্থী  বিজেপির   কর্ণেল সব্যসাচী  বাগচী । তিনি  ছোটোবেলায় আরএসএসের ট্রেনিং’এর সাথে    এনসিসির  ট্রেনিং করে  লড়াকু সৈনিক হতে চেয়ে  কর্নেল হয়েছিলেন।  কিন্তু আসল যুদ্ধে  জিতলেও ভোট যুদ্ধে  কিন্তু  চ্যাম্পিয়ন  হতে  পারেনি ।   কিন্তু  ফার্স্ট রানার আপ  হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ।   আর এবারের ভোটে গুজরাটের বদোদরার লড়াকু ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান ( Yusuf Pathan)  স্বপ্ন দেখতেন, দেশের জার্সি গায়ে দিয়ে  চ্যাম্পিয়ন  হবেন ।  সেই  স্বপ্ন  পুরণ করে  এবার  সুবেবাংলা বিহার উড়িষ্যার সদর শহর  বহরমপুর দখল করতে ভোটের ময়দানে নেমেছেন।  বাইশগজ ক্রীজে  সৌরভ গাঙ্গুলীর ভাষায়   পাঁচ পাঁচ বারের, “আনবিটেন ব্রেট লি”  অধীর চৌধুরীরকে (Adhir Ranjan Chowdhury)  কে আউট  করার জন্য নেমেছেন।  এই গরমে  অল আউট ওয়ার্ম আপও  শুরু  করেদিয়েছেন। অপরদিকে  রানিং ক্রিজে ডাক্তার   নির্মল সাহাও ছক্কা হাঁকানো জন্য ছটফট করছেন ।

১৯৯৬ থেকে  ১৯৯৯ সালের মধ্যে  তিন তিনবার অকাল লোকসভা নির্বাচন দেখে ভারত। ত্রিশংকু লোকসভায় তিন তিনজন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কিন্তু  কেউই বেশিদিন টিকতে পারেননি ।  ফলে ১৯৯৮ ফের অকাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত  হয়। সারা দেশের সাথে  মুর্শিদাবাদ , জঙ্গিপুর ও বহরমপুর লোকসভা আসনগুলিতে  নির্বাচন অনুষ্ঠিত  হয়। সেবার  কিন্তু  মুর্শিদাবাদের তিনটি আসনই বামেরা দখল করে।

বহরমপুরে ফের জিটিআই স্কুলের মাষ্টার মশাই প্রমথেশ মুখোপাধ্যায়, মুর্শিদাবাদে  মইনুল হাসান, জঙ্গিপুরে আবুল হাসনাত খানরা প্রথম বার জয়ী হন।  তবে  ১৯৯৮ সালেও  অবাক কান্ড ঘটে।  সেবার বিজেপির বহিরাগত প্রার্থী  কর্ণেল সব্যসাচী বাগচী  সবাইকে তাক লাগিয়ে কংগ্রেসের ভূমিপুত্র  প্রদীপ মজুমদারকে  তৃতীয় স্থানে ঠেলে দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসেন ।  যদিও আর এসপির  প্রমথেশ মুখোপাধ্যায়  ১লাখ ২৩ হাজার ১৬৯ ভোটে জয়ী হন।

১৯৯৮ সালের নির্বাচনের সাথে ২০২৪ সালের এবারের নির্বাচনেও বেশ মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। এবারে য়েমন তৃণমূল কংগ্রেসের  ভিন রাজ্যের ক্রিকেটার প্রার্থী  ইউসুফ পাঠান  ভোটিং ক্রিজে নেমেই তাক লাগিয়েছেন । ঠিক  তেমনই ১৯৯৮ সালে  বহরমপুরে বহিরাগত আনকোরা প্রার্থী  কর্ণেল সব্যসাচী বাগচী  আসল যুদ্ধের  রণাঙ্গন থেকে অবসর নিয়ে  ভোট যুদ্ধে  নেমে  হইচই ফেলে দিয়েছিলেন । বিজেপির তারকা মন্ত্রী প্রয়াত প্রমোদ মহাজন বহরমপুরে  ঘাঁটি  গেড়ে  ওয়ার রুম বানিয়ে ভোট পরিচালনা করেছিলেন । সদ্য  প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী  অটল বিহারি বাজপেয়ীও বিজেপিপ্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করেছিলেন ।   তার  ফল ও মিলেছিল হাতেনাতে ।   কর্ণেল বাগচী  পেয়েছিলেন  ২৬,২৬১০ টি ভোট  আর বহরমপুর কলেজের অধ্যাপক, বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান  সদালাপী  জনপ্রিয় সকলের প্রদীপ মজুমদারকে মাত্র ১৮৮৯৮৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে চলে য়েতে  হয়েছিল ।

সেবার বিজেপি  অটল বিহারি বাজপেয়ী  “পার্টি ইউথ এ ডিফারেন্স”-এর নেতৃত্বে   “ আবকি বারি / অটলবিহারী”   স্লোগান তুলে  বামেদের শক্তদূর্গ হিসেবে পশ্চিম বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে জোট  বেঁধে ভোটের লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিল  ।  আর এবারে সেই  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর টিমের  ইউসুফ পাঠান, অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদির  টিমের  নির্মল সাহা ব্রেট লি অধীর চৌধুরীকেও আউট করতে উঠে পরে লেগেছেন।

১৯৯৮ সাকে  কি কেন্দ্রে, কি রাজ্যে ক্ষমতাহীন ছিল  কংগ্রেস দল। এবারেও বহরমপুর লোকসভার অধীনে সাতটি বিধানসভায় একটিতেও নেই কংগ্রেস ।    বরং ৬টিতে তৃণমূল কংগ্রেস ও একটিতে বিজেপির বিধায়ক।   ৫ টিতেই বিজেপি  দ্বিতীয়, আর কংগ্রেস সাতটিতেই তৃতীয় স্থানে ।   তবুও  ব্যাটিং ক্রিজে ব্যাটসম্যানের নাম  “আনবিটেন” ব্রেটলি-অধীর “।

১৯৯৯ সালে  সব অংক ভুল প্রমাণ করে জিতেছিলেন  অধীর এবার ষষ্ঠ ম্যাচ খেলতে নেমেছেন বহরমপুরের  ব্রেট লি ।   দেখা য়াক তিনি নট আউট ?  না আউট  হন  ইউসুফ পাঠানের লেগব্রেক বলে । রেজাল্ট জানতে হলে ৪ জুন  পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে!  তবে কিভাবে তিনি প্রথমবার ১৯৯৯ সালে   বহরমপুরের বাম দুর্গ দখল করেছিলেন  তার হালহকিকত জানতে পড়তে হবে পরের পর্ব।