নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে মহম্মদ সেলিমের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। জেলা তথা রাজ্য সেই দিকে তাকিয়ে থাকলেও তা শেষ মূহুর্তে ভেস্তে যায় । যদিও সরাসরি এই বৈঠকের কথা স্বীকার করে নি কংগ্রেস ও সিপিএমের জেলা স্তরের কোনও নেতা। কলকাতায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বুধবার বলেছিলেন, বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে। আসন বন্টন নিয়ে প্রদেশ কংগ্রসের সভাপতির সঙ্গে কথাবার্তার ইঙ্গিতও সেলিমের কথায় ছিল স্পষ্ট। যদিও অধীরও স্পষ্ট কোনও কথা না বলায় দিনভর রাজনীতির আঙিনায় আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল এই দুই দল।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই বৈঠক না হওয়ায় ফের চর্চায় ফিরেছে দু-দল। দুই দলের আগাম কথাবার্তা হয়ে থাকলেও কেন এই বৈঠক ভেস্তে গেল তা অবশ্য খোলসা করেনি কোনও দলই। আজ বৃহস্পতিবার দলের কর্মসূচি উপলক্ষে মুর্শিদাবাদে এসেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। এদিন সেলিম বলেন, “ধৈর্য্য ধরুন বৈঠক হবে। এই সময় অধীর বাবুর জেলায় আছেন আর আমারও জেলা কমিটির বৈঠক থাকায় দু’জনের দেখা হতে পারে বলে কথা হয়েছিল। কিন্তু তখন আমাদের আনারুল ইসলামের ঘটনা ঘটেনি। আজ আমারও কর্মসূচি ছিল, অধীরবাবুরও কর্মসূচি ছিল তাই বৈঠক হয় নি।” যদিও সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের এই সরল দাবি সহজভাবে মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল।
আসন সমঝোতার আগেই সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলার দুটি আসন চেয়ে নেওয়ার কারণেই কী বৈঠক পিছিয়ে গেল? উঠছে প্রশ্ন। বৈঠকে যাওয়ার আগে মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর আসন দুটি দলের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের কাছে চাইবে সিপিএম, সংবাদমাধ্যমে এই দাবি চাউর হয়ে গিয়েছিল। বদলে মালদহের দুটি আসন ছেড়ে দেওয়ার কথাও সিপিএমের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে প্রস্তাব দেওয়া হবে সে কথাও উঠেছিল। কিন্তু শুধুমাত্র বহরমপুর আসন ছাড়া অন্য জেলার অন্য দুটি আসন কংগ্রেস যদি সিপিএমকে ছাড়ে তাহলে তৃণমূলের সঙ্গে সেই শর্তে জোট বাঁধতে অসুবিধা ছিল না কংগ্রেসের, দাবি তাদের। এই দরকষাকষি এড়িয়ে যেতেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভেস্তে দেওয়া হয়েছে বৈঠক? উঠছে প্রশ্ন।
তবে জোট সঙ্গী দুই দলের নেতাকর্মীদের দাবি, বাম-কংগ্রেস যদি মালদহ আর মুর্শিদাবাদে আসন বন্টন নিয়ে নিজদের মধ্যে কোনও “ঝামেলা” না করে তাহলে এর ফল হবে সুদূরপ্রসারী। তবে এদিনের বৈঠক ভেস্তে যাওয়া প্রসঙ্গে অধীর বলেন, “ সেলিমকে জিজ্ঞেস করবেন। বৈঠকের কথা সেলিম ঘোষণা করেছেন। আমার জানা নেই।” তাঁর সঙ্গে সেলিমের বা বামেদের এই বিষয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি বলে দাবি অধীরের।