নিজামুদ্দিন সেখঃ রেজিনগরঃ৪ নভেম্বরঃ কবিয়াল এন্টনি ফিরিঙ্গি চারণকবি মুকুন্দদাসদের কথা আমাদের সকলেরই জানা। তবে যদি কোনদিন আসেন ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে শক্তিপুর থানার প্রসাদপুর গ্রামে , প্রকৃতির কোলে গড়ে ওঠা গ্রামে দেখবেন মাটির মানুষ মাটির সুরে বাঁধছেন মাটির গান। এই গ্রামের কবিয়াল নহিরুদ্দিন সেখ , পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ও লোকশিল্পী সংঘের জেলা শাখার সম্পাদক। তবে পথচলার ইতিহাসটাও বেশ কঠিনই বলা যায়।পেশা নয়, নেশার টানে কবি গানের জগতে পা রাখা । দেখা হতেই নহিরুদ্দিন সেখ কথায় না গানে গানে বর্ণনা করলেন জীবনপঞ্জী । নহিরুদ্দিন সেখের আড্ডার স্থান ছিল ভাগীরথীর পাড় সেখানেই বসত গানের।বন্ধু সহকারী বিরিঞ্চি ঘোষের সখ্যতা গুরু অনাদি মন্ডলের কাছে নিয়ে যাওয়া ও হাতে খড়ি তারপর গানের আসরে পথচলা আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
শিল্পীর নিজের কোথায়, গানেই তার পরিচয় দিলাম—–
“নহিরুদ্দিন ইতিকথা হৃদয়ে রয়েছে গাঁথা কত কথা স্মৃতিপটে আঁকা”
“ এরই মাঝে ভালবাসা কবি মনে একটু নেশা,
মেলামেশা এক বন্ধুর সনে , সে বন্ধু বিরিঞ্চি ঘোষ।
ছিল তার একটু দোষ, ছিল না তার মনে একটুও আক্রশ।
একদিন বন্ধু সাথে করে নিয়ে গেল গুরুর বাড়ি।
হাতে খড়ি সেদিন আমার, কবির গুরুর অনাদি মন্ডল চলার পথে সহায়-সম্বল” ।
এইভাবে শুরু হয়েছিল কবি গানের সূচনা। তারপর ধিরে ধিরে পথচলা আরও সুদৃঢ় হয়।
– আজকের দিনে কেমন আছেন এই কবিয়ালরা তার গানে উঠে এল সেই দুঃখের ছবি ——
“ আমরা বড় দুদ্দশায়, একটু বেচে থাকতে চাই।
শিল্পীগনে নিবেদনে প্রার্থনা জানাই।
দেশের প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী যারা দেশের আরধ্য।
আমাদের মনের আকুতি জানাই, এই সরকারের প্রতি।
ব্যবস্থ গ্রহনে যাবে দুর্গতি—-
সরকারের যা নিয়মনীতি প্রচারে আছি বাধ্য।
ভেবে নহিরুদ্দিন কয় শেষ সম্ভল সহায়,
সরকারের সাহচর্য ঠিক পাব নিশ্চয়,
নিশ্চিত মোদের হবে যে জয় ত্রান পাব যথাসাধ্য” ।
সত্যিই ভালো নেই ওরা, আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে কবি গানের লড়াই আজ অতীত পাতার জীর্ণতা ছাড়া আর কিছুই নয়
জীবন এবং জীবিকার টানে কেউবা ধরেছেন অন্য পেশা। কেউ আবার কোন রকমে গান গেয়ে গেয়ে চালাচ্ছেন তাদের জীবন কিন্তু আর কতদিন আর কতদিন এভাবে চলবে জানেন না তারা। একসময় হয়তো তাদের উত্তরসূরিরা এই গানটিকে মুখ ফেরালেন হারিয়ে যাবে কবিয়ালরা এমনই আশঙ্কা তাদের।















