New Primary Syatem প্রাথমিকে শিক্ষা ব্যবস্থার হাল ফেরাতে নয়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পর্ষদ। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে নতুন ‘ক্রেডিট বেসড সিমেস্টার সিস্টেম ‘ Credit Based Semester System । এই পদ্ধতিতে এখন থেকে বছরে একবার নয়, বরং দু’বার পরীক্ষা নেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ West Bengal Board of Primary Education এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন এই নতুন পদ্ধতিতে হবে।
পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, নতুন পদ্ধতিতে সিলেবাসে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষাগুলি পুরনো পাঠ্যক্রম অনুযায়ী হবে, তবে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিকের সিলেবাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। শিক্ষা দফতরের অনুমতি ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে।
New Primary Syatem নতুন কী হচ্ছে ?
নতুন পদ্ধতির অনুযায়ী, এবারে পরীক্ষার সিলেবাস দুটি সেমিস্টারে বিভক্ত হবে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রথম সেমিস্টার এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় সেমিস্টার হবে। প্রথম সেমিস্টারে মোট ৪০ নম্বরের পরীক্ষা হবে, যেখানে ২০ নম্বর দেওয়া হবে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি, আচরণ এবং ক্লাসে অংশগ্রহণের উপর, আর ২০ নম্বর থাকবে বিভিন্ন প্রজেক্টের ভিত্তিতে। দ্বিতীয় সেমিস্টার হবে সম্পূর্ণ লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে, তবে সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসছে। এবার প্রশ্নপত্র তৈরি করবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, যা রাজ্যের সমস্ত স্কুলের জন্য একযোগভাবে প্রযোজ্য হবে।
New Primary Syatem এছাড়া, শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ক্রেডিট স্কোর’ চালু করা হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য এক বছরে ৩৭৬ ঘণ্টা ক্লাসের ভিত্তিতে ‘ক্রেডিট স্কোর’ দেওয়া হবে, যা সর্বোচ্চ ১৩.৫ নম্বরে নির্ধারিত হবে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রতি বছর ৪৬০ ঘণ্টা ক্লাস নেওয়া হবে, এবং এই তিন শ্রেণির জন্য সর্বোচ্চ ‘ক্রেডিট স্কোর’ থাকবে ১৬.৫।
পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ” সরকারের সাহায্যে আমরা এ ধরনের সাহসী পদক্ষেপ করতে পেরেছি। ছোট থেকে এ ধরনের মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে গেলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতে কোনও অসুবিধা হবে না “। পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার জানান, ” আমরা চাই বুনিয়াদি শিক্ষা আরও শক্তিশালী হোক। সর্বভারতীয় স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও দ্রুত এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।” এই নতুন ব্যবস্থা শিক্ষার মান উন্নয়ন ও ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রস্তুতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে রয়েছে সমালোচনাও।
New Primary Syatem ইসলামপুরের স্কুল শিক্ষক অনিমেষ দত্ত জানান, “নতুন ক্রেডিট বেসড সেমিস্টার সিস্টেম শিক্ষার গুণগত মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। এটি শুধুমাত্র পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন করছে না, বরং শিক্ষার্থীদের ক্লাসে অংশগ্রহণ এবং আচরণকেও মূল্যায়ন করছে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের দায়িত্ববোধের প্রতি সচেতন হবে এবং তাদের পাঠ্যক্রমের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে।”।
New Primary Syatem যদিও বহরমপুরের শিক্ষিকা মাধুরী রায়ের দাবী, “নতুন এই সেমিস্টার সিস্টেমে পরীক্ষার চাপ কমানোর পরিবর্তে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য দুটি আলাদা পরীক্ষা হওয়ার ফলে তারা দুইবারই চাপ অনুভব করবে। বিশেষত ছোট শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এটা একটা বিভ্রান্তিকর ব্যবস্থা হয়ে উঠতে পারে, যেখানে তারা নিজেদের পুরো মনোযোগ দিতে পারবে না।