Women’s Safety নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সকলের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। নারীদের নিরাপত্তা একটি মৌলিক মানবাধিকার। নারীর নিরাপত্তার অভাব তাদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। লিখলেন প্রবীর সেন।
প্রবীর সেনঃ আরজি কর কাণ্ড R G Kar Medical College and Hospital নারীদের নিরাপত্তায় নতুন কিছু প্রশ্ন আমাদের সামনে এনে দিয়েছে। মনে করিয়ে দিয়েছে, আজকের সমাজে নারীর নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারীরা সমাজের অঙ্গ, তারা পরিবারের মূল ভিত্তি, এবং সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু, কিছু সমাজে নারীদের নিরাপত্তা এখনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাই নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সকলের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই সময় আমরা অনেকেই প্রতিবাদে পথে নামছি। পথে নামা দরকার। এই সময় আমাদের সচেতনও হতে হবে।
নারীদের নিরাপত্তা একটি মৌলিক মানবাধিকার। নারীর নিরাপত্তার অভাব তাদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। সবাইকে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার অধিকার আছে, এবং নারীরা এর বাইরে নয়। ভারতের সংবিধানও Constitution of India এই বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।নারীরা যখন নিরাপদ থাকেন, তখন তারা সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভালভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখে। নারীরা পরিবারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে পরিবারের শান্তি বজায় থাকে, যা সামগ্রিক সামাজিক স্থিতিশীলতার পক্ষে সহায়ক।
নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের সকলকেই সচেতন হতে হবে এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। এটি কেবল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্ব নয়, বরং সমাজের প্রতিটি সদস্যের দায়িত্ব। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। স্কুল, কলেজ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদান করতে পারে। সরকার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির উচিত নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করা এবং তাদের কার্যকর বাস্তবায়ন করা।
সমাজের সকল স্তরের মানুষের উচিত নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহানুভূতি প্রদর্শন করা। পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী, এবং সম্প্রদায়ের সদস্যরা নারীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় সাহায্য করতে পারেন। নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে হবে। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নারীদের উপর নির্ভরশীলতা কমায় এবং তাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে।
নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কেবল নারীদেরই নয়, বরং সমাজের প্রতিটি সদস্যের দায়িত্ব। এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সবার সচেতনতা, সহযোগিতা, এবং নিরলস প্রচেষ্টা প্রয়োজন। একত্রে কাজ করলে আমরা একটি নিরাপদ এবং সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে পারব যেখানে নারীরা নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারবেন। নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি নিশ্চিত করতে আমরা সকলেই দায়িত্বশীল। নারীদের নিরাপত্তা শুধু আইন বা নীতিমালার বিষয় নয়, এটি আমাদের মানবিক দায়বদ্ধতা।
( নিবন্ধকার সমাজকর্মী। মতামত ব্যক্তিগত)