Winter Food: শীতে শরীর চাঙ্গা কীভাবে ? আবহাওয়া বদলে খবার বদলান

Published By: Imagine Desk | Published On:

Winter Food মুর্শিদাবাদ জেলায়  গত কিছু দিন ধরে শীতের অনুভূতি স্পষ্ট। ডিসেম্বরের শুরুতেই হঠাৎ শীতের প্রকোপে আবহাওয়ার বদল দেখা দিয়েছে। একদিকে যেমন শহরের বিভিন্ন এলাকা শীতের স্বাদ পাচ্ছে, অন্যদিকে গ্রামীণ এলাকার জনজীবনও এই ঠাণ্ডায় কিছুটা কাবু হয়ে পড়েছে। এই শীতকালীন পরিবেশে শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। শীতকালীন খাবার শরীরকে সতেজ ও শক্তিশালী রাখে এবং ঠাণ্ডা জনিত বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। তাই আসুন, জানি এই শীতে কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত এবং কীভাবে শরীরকে সুস্থ রাখা যায়।

১. গরম পানীয়:

শীতকালে গরম পানীয় খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই থাকে। সর্দি-কাশি কিংবা ঠাণ্ডা লাগা থেকে বাঁচতে গরম পানীয় অত্যন্ত কার্যকর। গরম চা, কফি, দুধ, কিংবা আদা-তুলসী পাতা দিয়ে তৈরি পানীয় শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। বিশেষ করে আদা ও তুলসী পাতা ঠাণ্ডা জনিত রোগ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। এছাড়া, তুলসী পাতা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাংগাল, এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে।

 

২. পুষ্টিকর ডাল ও শাক-সবজি:

Winter Food শীতকালে শাক-সবজি এবং ডালের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এসব খাবারে রয়েছে ভিটামিন Vitamins  , মিনারেল Minerals  , ও ফাইবার, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শীতকালে বিশেষ করে পালং শাক, মেথি, শীতকালীন কুমড়া, ও ব্রোকলি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, এবং ভিটামিন সি, যা শীতকালীন ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়া, গরম গরম ডাল ও স্যুপ শীতে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে।

Winter Food বাদাম, মিষ্টিও খেতে পারেন নির্ভয়ে

৩. বাদাম ও মিষ্টান্ন:

শীতে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়, ফলে শরীরের জন্য বেশি ক্যালোরি প্রয়োজন। এই সময়ে বাদাম, বিশেষ করে আখরোট, পেস্তা, এবং কাঠবাদাম খুবই উপকারী। এগুলো শরীরকে উষ্ণ রাখার পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডের জন্যও ভালো। শীতে নানা রকমের মিষ্টান্ন যেমন রসবড়া, পেথার, ও খিচুড়ি ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে, যা শরীরকে শক্তি দেয় এবং শীতের ঠাণ্ডা দূর করতে সহায়তা করে।

 

৪. গরম তরল খাবার:

শীতে গরম খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গরম স্যুপ, হালুয়া, খিচুড়ি, এবং অন্যান্য তরল খাবার শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে এবং হজম প্রক্রিয়াকেও সহজ করে। এই খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও পুষ্টি উপাদান থাকে, যা শরীরকে শক্তিশালী রাখে। বিশেষ করে মাটির পাত্রে রান্না করা খিচুড়ি শীতকালে খাওয়ার জন্য আদর্শ। এতে থাকা ভাত, ডাল, ও মশলা শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।

 

৫. ফলমূল:

Winter Food শীতকালে কিছু বিশেষ ফল পাওয়া যায়, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যেমন, কমলা, মাল্টা, আনারস, শিমলা মিষ্টি, আপেল ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শীতকালে সাইট্রাস ফলের উপকারিতা অনেক বেশি। এসব ফল শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের জন্যও ভালো।

 

৬. মাংস ও মৎস্য:

Winter Food শীতে মাংস ও মাছের চাহিদা বেড়ে যায়। বিশেষ করে খাসির মাংস, মুরগির মাংস  এবং তাজা মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, যা শীতকালে শরীরের শক্তি ও তাপমাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। মাছ, বিশেষ করে রুই, কাতলা, এবং তেলাপিয়া অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া, মাটন বা মুরগির কষা মাংসও খাওয়া যেতে পারে, যা গরম ও পুষ্টিকর।

 

৭. দুধ ও দুধজাত খাবার:

Winter Food দুধ ও দুধজাত খাবার শীতকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি শরীরকে সুস্থ রাখে। গরম দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে এবং শক্তি প্রদান করে। শীতে দই, পনির, ও ছানা খাওয়াও শরীরের জন্য উপকারী।

 

৮. তেল ও ঘি:

শীতকালে তেল ও ঘি শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই সময় আমাদের শরীর তেল ও ফ্যাটের অতিরিক্ত চাহিদা মেটায়। ঘি এবং তেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। এই সময় রুস্তিক পিঠে, ঘি দিয়ে ভাজা পিঠে, সেমাই, বা পাটালি গুড়ের মিষ্টান্ন খাওয়া যেতে পারে।

 

৯. হালকা মশলা:

Winter Food শীতকালে হালকা মশলা যেমন দারচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, শুকনো আদা ইত্যাদি শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া, মশলা শরীরের হজম ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং ঠাণ্ডা ও কাশি-সর্দি থেকে মুক্তি দেয়।

 

 

Winter Food শীতকালে শরীরকে সুস্থ রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গরম খাবার, পুষ্টিকর শাক-সবজি, বাদাম, ফলমূল, এবং পরিমিত মাংস ও মাছ খেলে শরীর সুস্থ এবং শক্তিশালী থাকে। তাই, মুর্শিদাবাদ অঞ্চলের শীতল আবহাওয়ায় এসব খাবারের মাধ্যমে নিজের শরীরকে ভালো রাখুন এবং সুস্থ থাকুন।