মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ তিন মাসের ফুটফুটে মেয়ে। কথা ছিল হেসে-খেলে বড় হওয়ার। কিন্তু কী পরিণতি হল তার? শুনে শিউড়ে উঠছেন সকলে। মুর্শিদাবাদের ডোমকলে তিন মাসের কন্যা সন্তানকে আছড়ে মেরে খুন করল বাবা, মা। রবিবার এমনই অভিযোগ উঠেছে । অভিযুক্ত বাবা রিন্টু শেখ ও মা বেলুয়ারা বিবিকে রবিবারই গ্রেফতার করেছে ডোমকল থানার পুলিশ। পরিবার সূত্রে দাবি, নেশায় আসক্ত ছিলেন রিন্টু শেখ। সেই নেশাই জেরেই কি কন্যা সন্তানকে শেষ করে দিল দম্পতি? তিন কন্যা সন্তান নিয়ে কি জেরবার ছিলেন তাঁরা? নাকি ছিল অন্য কোন সমস্যা?
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে অশান্তি লেগেই থাকতো পরিবারে। কখনও নেশা নিয়ে, কখনও সম্পর্কের টানা পোড়েন। তবে, পরপর তিনটি মেয়ে হওয়ায় বাড়ে অশান্তি। অভিযুক্ত রিন্টু শেখ পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ, রবিবার তিন মাসের একরত্তি মেয়েকে আছাড় মারেন রিন্টু নিজেই। তারপর মেয়েকে লুকিয়ে রাখা হয় ঘরেই। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই সব জানাজানি হয়ে যায়।
তিন মাস আগে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন বেলুয়ারা বিবি। তার আগে আরও তুই কন্যা সন্তান রয়েছে ওই দম্পতির। তবে সেই দুই শিশু কন্যা থাকে ঠাকুমা, ঠাকুরদার কাছে। কন্যা সন্তানের জন্মের পর বাড়ি আসেনি রিন্টু। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাড়ি ফেরেন তিনি। তারপর ফের শুরু হয় সাংসারিক অশান্তি। মৃত শিশুর ঠাকুরদা দুবের শেখের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবারই শিশুর মা-বাবাকে গ্রেফতার করেছে ডোমকল থানার পুলিশ।
সোমবার ধৃত দম্পতিকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বহরমপুরে জেলা আদালতে পাঠায়। ধৃতদের ৫ দিনের পুলিশি হেফাজিতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অসচেতনার জেরেই এই ঘটনা বলে মনে করছেন মনোবিদ ডাঃ অরুণিমা চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, “ওই পরিবারে তীব্র অভাব ছিল। এটা খুব দুর্ভাগ্যের যে এখনও কন্যা সন্তান অনেকের কাছে অভিশাপ। এই দৃষ্টিভঙ্গির বদল প্রয়োজন।”মেয়েদের নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদল না হওয়ার কারণেই এখনও এই জেলায় বাল্য বিবাহ একটি জ্বলন্ত সমস্যা।
কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যক্ষা সুজাতা ব্যানার্জি বলেন, “আজও মেয়েদের বোঝা হিসেবে দেখা হচ্ছে এটা বিপদের।এই রকম ঘটনা আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়। কন্যা সন্তান যে পরিবারের সম্পদ সেটা সকলকে বোঝানো দরকার।”