বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ হরিহরপাড়ার বাসিন্দাএকজন মায়ের সদ্যোজাত সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বুধবার। সেদিন মায়ের বয়স ছিল ১৭ বছর ৩ মাস ১৬দিন। ১৬বছর বয়সে তার বিয়ে হয়। এক বছরের মধ্যেই সন্তানসম্ভবা হন তিনি। সাড়েপাঁচ মাসে অপরিণত সন্তান প্রসব করেন। সেই সন্তানের ওজন হয় ৪৬০ গ্রাম। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে জন্মানোর ২৪ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় সেই পুত্র সন্তানের।
বাল্যবিবাহ ঠেকাতে সরকারের উদ্যোগ যে ঢক্কানিনাদেই শেষ তা ফের একবার প্রমাণ করলমুর্শিদাবাদ।হরিহরপাড়ার ওই কিশোরীর মতো অঘটন আকছার ঘটছে মুর্শিদাবাদের গ্রাম-গঞ্জে। বৃহস্পতিবার একটি তথ্য সামনে আসে মাত্র। দেখা যায়, একদিনে হরিহরপাড়ার ওই সদ্যোজাত শিশুসহ ছ’জন কম ওজনের শিশুর মৃত্যু হয়েছে ওই হাসপাতালে। যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। রাজনীতির অলিন্দেও তরজার আওয়াজ। সেখানেও দায় ঠেলাঠেলির কসরত। তবে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে দৈনিক গড়ে তিন থেকে চারজন শিশুরমৃত্যুহয়। যার অধিকাংশই কিশোরী বয়সে মা হওয়ার কারণে। আর তা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে কর্তাদের।
চলতি সপ্তাহের মঙ্গল থেকে শুক্রবারে ১০জন সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। যাদের অধিকাংশই কম ওজনের শিশু ।এই ঘটনার তদন্ত করতে এসে রাজ্য পরিবার পরিকল্পনা আধিকারিক চিকিৎসক অসীম দাস মালাকার বলেন, “একজন চারশো গ্রামের বাচ্চা ছিল। সে পাঁচ মাস মায়ের গর্ভে ছিল। আর একজন ছিল ন’শো গ্রামের। তাদের বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসার কোনও ত্রুটি ছিল না। “ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অমিত দাঁ এদিন বলেন, “ ১৬-১৭ বছরের মেয়ে মা হচ্ছেন।যার ফলে কম ওজনের পাশাপাশি জন্মগত ত্রুটি নিয়ে সন্তানের জন্ম হচ্ছে।” তিনি বলেন, “ কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়া ঠেকাতে আরও প্রচার করতে হবে। আশাকর্মীদের আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।” পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার কমিশনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য প্রসুন ভৌমিক বলেন, “বাবামায়েরা ছেলেদের প্রতি যতটা যত্নবান হন, মেয়েদের প্রতি ততটা নন। এই ভয়াবহ সামাজিক অভিশাপেই একজন বাচ্চার গর্ভে আর একজন বাচ্চা জন্মাচ্ছে।”সবাই
সবটা জানেন? তবু এত শিশু মৃত্যুর দায় কার? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।