ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়াই হল কাল ! উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু মুর্শিদাবাদের তিন পরিযায়ী শ্রমিকের

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ মালদহর ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। সম্প্রতি ২৩ জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন মিজোরামে। আইজল থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে সাইরাং এলাকায় নির্মীয়মাণ রেলব্রিজ ভেঙে মৃত্যু হয় তাঁদের। এবং সেই রেশ কাটতে না কাটতেই, আজ শনিবারে উত্তরপ্রদেশে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদের তিন পরিযায়ী শ্রমিকের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে মাস দুয়েক আগে উত্তরপ্রদেশে গাজিয়াবাদে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়েছিলেন সামশেরগঞ্জের পাহাড়ঘাটি এলাকার গোকুল মন্ডল, বেতবোনার শুভঙ্কর রায় এবং ফরাক্কার ইমামনগরের ইসরাইল শেখ। তাঁরা একসাথেই রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন।

কিন্তু কে জানতো এবার তাঁরা আর ফিরবেন না নিজেদের পায়ে, ফিরতে হবে কফিন বন্দী অবস্থায়। শুক্রবার বহুতলে কাজ করার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হন তিন শ্রমিক। গোটা ঘটনায় পরিবারের ওপর নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতদের নাম গোকুল মণ্ডল (৪৪), শুভঙ্কর রায় (৩১), ইসরাইল শেখ (৩৩)। জানা গিয়েছে, গোকুল মন্ডলের বাড়ি সামশেরগঞ্জের ধূলিয়ান পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে পাহাড়ঘাঁটি এলাকায় ,  শুভঙ্করের বাড়ি ধুলিয়ানেরই ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেতবোনা গ্রামে এবং ইসরাইলের বাড়ি ফরাক্কা থানার অন্তর্গত ইমামনগর গ্রামে।

দ্রুততার সাথে তিনজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করে। প্রাথমিকভাবে পরিবারের কাছে খবর পৌঁছানোর পর একে একে লোক শনিবার সকাল থেকে স্থানীয়রা ভিড় করেন মৃতদের বাড়িতে। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের কাছে। পরিবার পরিজন বুঝতেই পারছে না কোথা থেকে কী হয়ে গেলো এক রাতের মধ্যে! মৃত শুভঙ্কর রায়ের দাদা দেবাশীষ রায় জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল শুভঙ্কর। নানা জায়গা থেকে ধার দেনা করে তাকে কাজে পাঠিয়ে ছিল। এখন এমনই আর্থিক অবস্থা যে কিভাবে মৃত দেহ নিয়ে আসবেন এবং তাঁর সৎকার করবেন সেটা নিয়েও বড় প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কবে মৃত দেহ পরিবার প্রিয়জনেরা ফেরত পাবেন সেই আশায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।

ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়াই তবে কাল হল! মুর্শিদাবাদ জেলার অনেক মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য কখনও ভিনরাজ্যে বা ভিনদেশেও যান পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ও সেই কারণে মৃত্যু খুবই মর্মান্তিক সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেয়। মৃত মানুষ ফিরে আসবে না ঠিক, তবে পরিবারের কাছে মৃতদেহ ফিরে আসলেই সাময়িক স্বস্তি পাবে পরিবার।