নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ বছরের শুরুতেই রাজ্য জুড়ে পালন হচ্ছে স্টুডেন্টস উইক। বহরমপুরেও কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলে শুক্রবার ছিল এই স্টুডেন্টস উইক-এর চতুর্থ দিন। ৫ই জানুয়ারি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ২০২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্য আজ সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছিল কৃষ্ণনাথ কলেজ। যেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চেয়ারম্যান ডঃ কল্যাণ রুদ্র। এছারাও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা সহ আরও বিশিষ্টজনেরা।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাপতি রুবিয়া সুলতানা জানান, “এখানে যে সমস্ত স্কুল এসেছে তারা প্রতেকেই খুব ভালো ভালো পরিবেশ সংক্রান্ত মডেল বানিয়েছে। এবং যে সমস্ত কাজের মডেল এখানে বানান হয়েছে। তার বেশকিছু আমাদের জেলায় জেলা পরিষদের তরফ থেকে করা হয়েছে বা হচ্ছে। বাচ্চাদের এই ভাবনা যে এত সুদূর প্রসারী সেটা না দেখলে বুঝতে পারতাম না।” এছাড়াও আয়োজন করা হয়েছিল বিজ্ঞান প্রদর্শনীর। যেখানে কৃষ্ণনাথ কলেজের ৫টি ডিপার্টমেন্ট সহ জেলার মোট ২০টি স্কুল অংশগ্রহন করেছিল। এই প্রদর্শনীর মূল লক্ষ ছিল পরিবেশকে কীভাবে বাঁচানো যায় সেই নিয়ে বিভিন্ন মডেল।
কৃষ্ণনাথ কলেজের ফিজিওলজির বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিতলি কাদের সহ তার আরও চার সহপাঠীরা মিলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ওপর একটি মডেল বানিয়ে ছিল। এমনই ভূগোল বিভাগের তরফ থেকে বানানো হয়েছিল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট মডেল। এমনই আরও চমৎকার মডেল নিয়ে এদিন সারাদিন প্রদর্শনী চলেছে। সেই মডেলগুলির ওপর ভিত্তি করেই পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফ থেকে দেওয়া হয় প্রাইজও।
কৃষ্ণনাথ কলেজের প্রিন্সিপ্যাল সুজাতা বাগচী ব্যানার্জি জানান, “আমাদের কলেজ যেমন স্টুডেন্টস উইক পালন করছে। পাশপাশি আজ ৫ই জানুয়ারি আমরা কৃষ্ণনাথ দিবস পালন করছি। এইদিনটি আমরা কৃতি পড়ুয়াদের পুরস্কৃত করছি। এবং সাইন্স এক্সিবেশান চলছে যেটি পশ্চিমবঙ্গ পলিউশন বোর্ডের সঙ্গে মিলিতভাবে করা হয়েছে।”
কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকেই পড়াশোনা করেছেন মাস্টারদা সূর্য সেন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলনের শহীদ আবুল বরকত। এছাড়াও বহু কৃতি মানুষজন এই কলেজ থেকেই পড়াশোনা করেছেন। সেই কলেজ থেকে এই রকম পরিবেশ বাঁচানোর আন্দোলনকে সামনে রেখে যে প্রদর্শনী করা হয়েছে সেই নিয়ে আশাবাদী পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চেয়ারম্যান ডঃ কল্যাণ রুদ্র। তিনি জানান, “এই কলেজ বহু ইতিহাস বহন করে চলেছে। এবং সেই কলেজেই পরিবেশ নিয়ে এই কর্মসূচি অবশ্যয় পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম পথ প্রদর্শক হতে পারবে।”
পরিবেশ বাঁচাতে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে একটি ভালো পরিবেশ দিতে দরকার পুনব্যবহৃত জ্বালানীর ব্যবহার শুরু করা। পাশপাশি সমাজকে আরও সচেতন করা জানালেন চেয়ারম্যান। তিনি আরও বলেন, “আমাদের আরও ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এবং পাশাপাশি আমরা বহুল পরিমাণে বর্জ্য পদার্থ তৈরি করি। সেটা নিজেদের সচেতন হয়ে কমাতে হবে।”
মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন কলেজ থেকে শুরু করে স্কুলগুলি নিজেদের মতন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছে। এই কর্মসূচির প্রথম দিন বহরমপুর গার্লস কলেজে বহরমপুরের এসডিও-এর উপস্থিতিতে আয়োজন করেছিল স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা সভা। সাতদিন ব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে স্টুডেন্টস উইক পালন হচ্ছে কৃষ্ণনাথ কলেজে।