দেবনীল সরকার, লালবাগঃ অপেক্ষার অবসান। মাঘের মিঠে রোদ গায়ে মেখে নবাবের শহরে নামল মানুষের ঢল। শিঙা বাজল শহরের রাস্তায়। শুরু হয়ে গেল দ্বিতীয় বর্ষের ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসব। শনিবার সকালে প্রভাতফেরী করে নবাবের শহর লালবাগের রাস্তায় নামলেন বাউল ফকিরেরা। সাথে সাধারণ মানুষ। পা মেলালেন বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলেই।
রবীন্দ্র সংগীত থেকে বাউল গান সবই হল। হারমোনিয়াম থেকে খোল করতাল, একতারার তানে ভাসল শহর। সবাই ইতিহাস সাক্ষী রাখতে শতাব্দী প্রাচীন হাজারদুয়ারি সামনে জড়ো হলেন। শীতের সকালে নাচের তালে মাতল খুদে থেকে প্রবীণরা। বয়স, জাতপাতের ভেদাভেদ ভুলে সকলে মাতল উৎসবের আবহে। প্রভাতফেরী সেরে সকলে জড়ো হলেন উৎসব প্রাঙ্গন আমবাগানে।
আগের বছর নবাবের জেলা মেতেছিল বাউল ফকির উৎসবে। সেবারই প্রথম। ১ ও ২ এপ্রিল বাউল ফকির উৎসবে শামিল হয়েছিলেন দুই বাংলার বহু গুণীজন । মুর্শিদাবাদ শহরের ঐতিহাসিক পার্ক আমবাগানে মাটির মঞ্চে গান গেয়েছিলেন অনাথ বন্ধু ঘোষ, মনসুর ফকির, সাধন দাস বৈরাগ্য, মাকি কাজুমিরা।
ওপার বাংলার টুনটুন ফকির বুনেছিলেন মিলনের সুর। কোনও প্রেক্ষাগৃহে নয় গতবারের মতো এবারও কোনও লোকশিল্পীরা তাঁদের মর্জি মাফিক আমবাগানে বসে গানই গাইবেন। তাঁদের জীবনের নানান গল্প শোনাবেন।
এবারও এপার বাংলার সাথে সাথে ওপার বাংলার শিল্পীরাও অংশ নেবেন ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসবে। পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে উৎসব প্রাঙ্গন সাজানো হচ্ছে। থাকছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন শিল্প সামগ্রী , সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান থেকে জেলার নিজস্ব স্বাদের খাদ্য সামগ্রী।
ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসবের মূল উদ্যোক্তা, অভিনেতা বাদশা মৈত্র জানান, “এই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষাতেই ছিলাম। আগের বছরের উৎসবের শেষ হতেই আমরা এই দিনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলাম। সকালে এত মানুষের সক্রিয় উপস্থিতি আমাদের মন মাতিয়ে দিয়েছি। দু’দিন ধরে এই উৎসব মাতিয়ে রাখবেন মনের মানুষেরা।”