খোদ বহরমপুরেই ধুঁকছে প্রাথমিক বিদ্যালয়

Published By: Madhyabanga News | Published On:

দেবনীল সরকার, বহরমপুরঃ ধুঁকছে জেলার প্রাইমারি স্কুলগুলি। এবার খোদ শহর বহরমপুরেও দেখা গেল সেই ছবি। একতলার এই স্কুলবাড়িতে রয়েছে তিনটি ঘর কিন্তু তালা বন্ধ। হাতে গোনা ক’জন পড়ুয়া নিয়ে একটা ঘরেই চলছে ক্লাস। আট নম্বর দয়াময়ীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৭৩ সালে শহর বহরমপুরের খাগড়া এলাকায় এই স্কুল স্থাপিত হয়। প্রায় পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত খোদ বহরমপুরের এই প্রাইমারী স্কুল আজ ধুঁকছে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মৃণ্ময় মন্ডল জানান, “২০২৪ এর নতুন শিক্ষাবর্ষে স্কুলে প্রি-প্রাইমারিতে ভর্তি হয়েছে ২ জন। প্রথম শ্রেণিতে আছে ৩ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১১ জন ও চতুর্থ শ্রেণিতে ৪ জন। এভাবেই সর্বসাকুল্যে ২২ জন পড়ুয়া নিয়ে চলছে স্কুল। যার মধ্যে অধিকাংশই অনুপস্থিত। রোজ ৬ থেকে ৭ জন পড়ুয়া নিয়েই চলছে ক্লাস এই স্কুলে।”

দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুল সামলেছেন একজন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক। নতুন শিক্ষাবর্ষে স্কুলে এসেছেন নতুন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তাতে কী? স্কুলে পাঁচটি শ্রেণি মিলিয়ে রয়েছে মাত্র ২২ জন শিক্ষক। আছে তিনটি আলাদা ক্লাসরুম। সেখানে ঝুলছে তালা, জমছে ধুলো। সব শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে একটি ক্লাস রুমেই হচ্ছে ক্লাস। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র সরকার জানান, ” স্কুলের ৫০০ মিটার এলাকার মধ্যে যে বাচ্চারা আছে তাদেরকে সেই স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। সরকার তরফে এই সার্কুলার জারি হয়েছিল। কিন্তু সেই সার্কুলার কঠোরভাবে মানা হয়না কোথাও। তাই যেসব প্রাইমারি স্কুলে হাইস্কুল যুক্ত আছে সেখানে বাচ্চাদের ভর্তি করাতে বাবা-মায়ের ঝোঁক বেশি। অবহেলায় পরে থাকে আমাদের স্কুলগুলি। আগে যে স্কুলে ছিলাম সেখানেও ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কম ছিল। আমরা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে আসতাম। এই স্কুলের এলাকাতেও তাই করতে হবে।”

স্কুলে রয়েছে মিড-ডে-মিলের রান্না ঘর। রোজ হয় রান্না। কিন্তু আগে অনেক সংখ্যক পড়ুয়াদের জন্য খাবার তৈরি করতেন। এখন তা কমতে কমতে তলানিতে। মিড-ডে-মিল কর্মী লক্ষ্মী স্বর্ণকার জানান, “প্রায় ১০ বছরের বেশি এই স্কুলে রান্নার কাজ করছি। আগে ৪০ থেকে ৫০ জনের খাবার রান্না হত। এখন কোনও দিন ১০ জন বা তারও কম।” প্রাথমিক স্কুলের বেহাল দশার বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে মিড-ডে-মিল কর্মী থেকে শিক্ষক সকলেই চাইছেন ফিরুক এই স্কুলের হাল।