বেলাইন প্রথম সাধারণ সভা, তোপের মুখে মুর্শিদাবাদের সভাধিপতি

Published By: Madhyabanga News | Published On:

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের প্রথম সাধারণ সভাতেই অস্বস্তিতে টিম রুবিয়া সুলতানা। বিরোধী দলের তো দূরঅস্ত, নিজের দলেরই সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নাজেহাল সভাধিপতি। জেলা পরিষদের অধিবেশন কক্ষে শনিবার বসেছিল বর্তমান জেলা পরিষদের প্রথম সাধারণ সভা। সেখানে প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন ,  প্রাক্তন কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শাহনাজ বেগম সহ একাধিক শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের অপ্রিয় প্রশ্নের  মুখে পড়েন  সভাধিপতি।  তাঁদের একের পর এক প্রশ্নে আপাত নিরীহ সভা কিছুক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জবাব দিতে একসময় হাল ধরতে হয়  বর্তমান পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ , প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাসকে।

জেলার  ২৬টি ব্লকে মোট ১৫০টি  হাইমাস্ট লাইট বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রয়োজন অনুযায়ী ভাগ হওয়ার কথা সেই লাইটের। অভিযোগ উঠেছে,  জেলার দুটি ব্লকে ১৭টি করে হাইমাস্ট লাইট বসানোর অনুমোদন মিলেছে। অভিযোগের ইঙ্গিত সুতি ২ নম্বর ব্লক ও হরিহরপাড়া ব্লকের দিকে।   প্রশ্ন উঠেছে,  জেলা পরিষদের নিজস্ব সম্পত্তি বহরমপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত  রবীন্দ্রনাথ ডায়াগোনেস্টিক সেন্টারের পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে। একইভাবে  এমসিইটি কলেজের অচলাবস্তার জন্য জেলা পরিষদ কেন কাঠগড়ায়? উঠেছে সেই প্রশ্নও। যদিও মেলেনি উত্তর বলে অভিযোগ শাসক দলের প্রশ্নকর্তাদেরই। জেলাপরিষদের মাথা কে ?  রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুতের প্রয়োজনে কোথায় অভিযোগ জানাবেন জনপ্রতিনিধিরা ? সেই প্রশ্নও তুলেছেন শাসক দলের জেলা পরিষদের সদস্যরা। যদিও এসব প্রশ্নের কোনও উত্তরই দিতে চাননি সভাধিপতি।

শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদের নিজস্ব সম্পত্তি কাদের লিজ দেওয়া হয়েছে তারও বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে টাঙিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন সদস্যরা। এমনকি কর্মাধ্যক্ষরাও সাধারণ সভায় মুখ খুলেছেন তীর্যকভাবে। জেলা পরিষদ পরিচালনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে জেলাপরিষদকে ঘিরে ঠিকাদার রাজের সিন্ডিকেট জেলার উন্নয়নকে ব্যহত করছে।

এদিন শাসকদলের  ২০ জন বিধায়কের মধ্যে একমাত্র রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।  উপস্থিত ছিলেন না দুই সাংসদের কেউই। আর এসবের ফাঁক গলে খসড়া বাজেট নিয়ে কোনও আলোচনার সুযোগ পাননি সদস্যরা। সাধারণত ২১ দিন সময় হাতে থাকে খসড়া সংশোধনের। তারমধ্যেই তা সংশোধন করে আগামী অর্থবর্ষের পুর্নাঙ্গ বাজেট পেশ করা হবে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়।

এদিনের  সাধারণ সভা ও খসড়া বাজেট নির্ধারিত সময় অতিক্রম করে চারঘন্টা পেরিয়ে যায় আলোচনার টানাপোড়েনে। সভার শেষে সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা মধ্যবঙ্গ নিউজের মুখোমুখিই হতে চাইলেন না। ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক তৃণমূলও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিধায়ক কর্মাধ্যক্ষ স্পষ্টতই স্বীকার করছেন জেলা পরিষদকে ঘিরে ‘অবৈধ সিন্ডিকেট রাজ’ ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।