নিজস্ব সংবাদদাতা, জলঙ্গিঃ শীতকালে বাজারে দেখা যায় সবজি থেকে হরেক রকম ফলের রমরমা। এরকমই এক ফল হল মাল্টা। মাল্টা আসলে কমলার মতোই দেখতে একটি ফল। ভিটামিন সি তে সমৃদ্ধ এই ফলে রয়েছে একাদিক কার্যকরী পুষ্টিগুণ। তবে কমলালেবুর সাথে এর পার্থক্য আছে। কমলা যেরকম কোয়াতে হয়। মাল্টা তা নয়। মূলত থাইল্যান্ডের একটি বিশেষ ফল জাম্বুরা (Citrus maxima) এবং কমলা (Citrus reticulata) এই দুই ফলের সংকরায়নের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে মাল্টা। বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য তথা পারিপার্শ্বিক দেশেও মাল্টা একটি জনপ্রিয় ফল। এবার মুর্শিদাবাদের মাটিতেও হদিশ মিলল মাল্টা ফলের। জলঙ্গির ভাদুরিয়াপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান। নিজের বাড়িতে ও নার্সারিতে মাল্টা চাষ করে তাক লাগিয়েছেন। প্রথমে শিক্ষকতা করতেন মিজানুর, তারপরে বেশ কিছুদিন করেছেন ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ , কিন্তু কোনও কাজই ধারাবাহিকভাবে করতে মজা পাননা, জানান মিজানুর। এখন প্রায় ২২ বছরেরও বেশি সময় ধরে মেতেছেন গাছপালা, প্রকৃতি নিয়ে। নিজের কাজ নিয়ে বরাবরই পরীক্ষামূলক গবেষণা করেছেন তিনি। যে চাষ আবহাওয়াজনিত কারণে এখানে করা সম্ভব না, সেই চাষ করেই তাক লাগিয়েছেন বছর ৫৫ -এর এই গাছপ্রেমী।
মাল্টা ফলে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ জানাচ্ছেন মিজানুর। এটি সর্দি, নাক বন্ধ থাকা, টনসিলের সমস্যা, গলাব্যথা, জ্বর , হাঁচি-কাশি, মাথাব্যথা, ঠান্ডাজনিত কারণে দুর্বলতা, এই জাতীয় সমস্যাগুলি দূর করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস মাল্টার জুসে অনেক পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। মাল্টার ভিটামিন সি উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি কোলন ক্যানসার ও ব্রেস্ট ক্যানসারের অন্যতম সেল প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও সরবত ও স্কোয়াশে ব্যবহার করা হয় মাল্টা, যা একটি উপাদেয় পানীয়ও। ভিটামিন সি’র পাশাপাশি শর্করা, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন রয়েছে এই ফলে।
বর্তমানে ফলের বাজারে মাল্টার চাহিদাও বাড়ছে। বাড়ির ছাদ বাগান থেকে নার্সারিতে মাল্টা চাষ থেকে লাভজনক আয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। জলঙ্গি ডোমকল রাজ্যসড়কের পাশে ভাদুরিয়াপাড়া এলাকায় রয়েছে মিজানুর রহমানের নার্সারি। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তাঁর নার্সারি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিচিত। সেখানে আসাম, দার্জিলিং ত্রিপুরা, মণিপুর সহ বিভিন্ন প্রদেশ থেকে চাষিরা এসে চারা নেন তাঁর থেকে। গাছ নিয়ে সদা ব্যস্ত থাকেন প্রকৃতি প্রেমী মিজানুর রহমান।