নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ মহালন্দিতে আচমকা উট দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন বাসিন্দারা। খবরটা পাঁচ কান হতে সময় নেয়নি। তবে তা যে বেআইনিভাবে এলাকায় ঢুকেছে তা মালুম হয়নি কারও। আল্লারাখা শেখ নামে এক ব্যক্তিকে নভেম্বরে পুলিশ ধরার পর সকলেই টের পান।
বহরমপুর কাদাই এলাকার বাসিন্দা কালীদাস দেবনাথ অবশ্য খবরটা শুনে বলেন, “ভাইফোঁটার দিন মধুপুরের রাস্তায় আমার চোখের সামনে দিয়ে উট নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন এক বৃদ্ধা। কৌতুহল না চেপে জানতে চেয়েছিলাম কোথায় যাচ্ছেন। উত্তরে সেলিম আলী জানিয়েছিলেন মহালন্দি থেকে উট নিয়ে ইসলামপুর যাচ্ছেন। তাঁর জন্য তাঁকে ১৫০টাকাও দেওয়া হয়েছে।” প্রায় ১০ ফুট লম্বা এবং ৮ ফুট চওড়া ওই প্রাণীকে টেনে নিয়ে যেতে সেলিমের ক্ষতবিক্ষত হাত দিয়ে রক্ত ঝড়তেও দেখেছেন কালীদাস। তিনি আরও বলেন, “মহরমের আগে পরেও বহরমপুরের রাস্তায় উট হেঁটে যেতে দেখেছি।”
ইতিউতি খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন উটগুলি মহালন্দি থেকে ‘বিক্রি’ হচ্ছে। সেখানকার কারও কারও মরুরাজ্যের এই প্রাণীকে ঘরের গোয়ালে বেঁধে রাখার শখও জেগেছিল মনে। কিনতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু যা দাম হেঁকেছিলেন বিক্রেতারা তা নাগালের বাইরে। তবুও দুটি উট কিনে নিয়েছিলেন জনা দু’য়েক ব্যক্তি। খোঁজ নিয়ে জানা গেল মোট ১৬টি উট রাজস্থান থেকে বেআইনিভাবে নিয়ে এসেছিলেন অসাধু ব্যবসায়ী আল্লারাখা শেখ। কান্দি থানার পুলিশ জানায়, একটি একটি করে ধাপে ধাপে উটগুলি বিক্রি করবার জন্য জেলায় নিয়ে এসেছিলেন আল্লারাখা। তারজন্য কয়েকজন এজেন্টও যুক্ত ছিলেন।
সেই সব উট আদালতের নির্দেশে বুধবার রাজস্থানে উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। বেআইনি সেই উট জেলা থেকে মরু রাজ্যে পাঠানো হয়েছে চারটি ট্রাকে করে। উটের খাবার দাবারের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে দু’জন পুলিশ ও দু’জন পশু চিকিৎসক, একজন ভিডিওগ্রাফার। খোঁজ নিয়ে জানা গেল বৃহস্পতিবার বিহারের সীমানা পেরিয়েছে উট। এতকিছু করতে প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের খরচ হয়েছে আট লক্ষ টাকা। সূত্রের দাবি, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ জেলাশাসক।