নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ ২০০৯সাল, তখন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কান্দিবাসীর কথা চিন্তা করে কান্দির উপর দিয়ে নতুন রেল লাইনের কথা ঘোষণা করেন তিনি। রেল সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার চৌরিগাছা স্টেশন থেকে সাঁইথিয়া স্টেশন পর্যন্ত ওই রেল লাইন হওয়ার কথা ছিল। পরে অনুমোদনও মিলেছিল। কিন্তু ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ তৈরির কাজ আজও শুরু করা যায়নি জমি জটের কারণে। একাধিক সামাজিক সংগঠন থেকে রাজনৈতিক সংগঠন সেই জট কাটানোর আবেদন জানিয়ে রেলের কাছে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু কোনও কিছুতেই কিছু হয়নি বলে দাবি। সেই জট কাটাতে মাস তিনেক আগে রেল রাজ্যকে চিঠিও দিয়েছে। কিন্তু এখনও জট না কাটায় হতাশ কান্দিবাসী।
এবার অধরা সেই সাটুই চৈরিগাছা স্টেশন থেকে কান্দি পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ শুরু করার জন্য রেলমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানালেন বিজেপি-র বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার। দিল্লি রেলভবনে বুধবার শাখারভ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের হাতে মুর্শিদাবাদের চৌরিগাছা থেকে কান্দি রেল স্থাপনের প্রকল্প এবং জেলার অন্যান্য রেল প্রকল্পের আবেদন গুলি তুলে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়।
কান্দিতে রেল লাইনের প্রয়োজনের কথা প্রথম উসকে দিয়েছিলেন কান্দির ‘রাজাবাবু’ অতীশ সিংহ। কান্দি এলাকার বাসিন্দাদের ট্রেন ধরার জন্য কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার সালার কিংবা খাগড়াঘাট স্টেশনে যেতে হয়। সেই কারণেই তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে দাবি এলাকাবাসীর। জেলার উপর দিয়ে পূর্ব রেলের দু’টি শাখার রেল লাইন গেলেও কান্দির উপর দিয়ে কোনও রেল লাইন না যাওয়ায় দীর্ঘ তিরিশ বছর ধরে রেল লাইনের দাবি জানিয়ে আসছে ওই মহকুমার মানুষজন। মালদহের প্রয়াত সাংসদ এবিএ গণিখান চৌধুরী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন পূর্বরেলের সালার থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত একটি রেললাইনের ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই লাইনও ঘোষণাতেই আটকে আছে। বাস্তবের মুখ না দেখায় ২০২৩ এর শেষ লগ্নে পৌঁছেও কান্দির বাসিন্দারা আজও রেল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত।এদিন শাখারভ বলেন, “কেন্দ্রীয় বাজেট শেষ হলেই উনি এলাকা পরিদর্শনের জন্য একটি সমীক্ষক দল পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি ওই কাজ শুরু হবে।” যা শুনে কলেজ পড়ুয়া খড়গ্রামের বিমল মন্ডল বলেন, ” এই রেললাইনটা হওয়া জরুরী।” এমন আশার কথা বারংবার শুনেছেন বলে দাবি করেন কান্দি মহকুমার বাসিন্দা দেবব্রত সরকার। এদিন তিনি বলেন, ” আমার জ্ঞান হওয়া ইস্তক শুনে আসছি এই রেল লাইন হওয়ার কথা। চল্লিশের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আর এক কথা শুনতে ভাল লাগে না।”