বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ দিন দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদ জেলা সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় নয়া ব্লক সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। সেই তালিকা অনুযায়ী মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের দুই সাংগঠনিক জেলাতেই রদবদল হয়েছে।
কিন্তু যে কোন্দল ঠেকাতে একাধিক ব্লকে সভাপতি বদল হয়েছে, নতুনদের নাম প্রকাশের পরেও তা থামার লক্ষণ নেই। মুর্শিদাবাদ জেলার নেতাদের সঙ্গে ‘দিদি’র বৈঠকের মাঝেই ব্লক সভাপতি বদলের দাবি জানিয়ে তৃণমূলের উঁচু মহলে চিঠি দিল বিক্ষুব্ধরা।
ক্ষোভের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে বড়ঞা ব্লক। তৃণমূল প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী এই ব্লককে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে তিন জনকে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বড়ঞা উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে গোলাম মোর্শেদ জর্জকে। আর সহ সভাপতি করা হয়েছে মাহে আলমকে। দক্ষিণের সভাপতি করা হয়েছে সমীরণ মন্ডলকে।
আপত্তি উঠেছে এই সমীরণকে নিয়েই। তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ সমীরণ একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি। যদিও তাঁর স্ত্রী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। এ বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বড়ঞা উত্তরের সহ সভাপতি মাহে আলম। তিনি বলেন, “আমাকে যে পদ দেওয়া হয়েছে তাতে আমি খুশি নই। যাঁকে উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে তিনি রাজনীতির কিছুই জানেন না। একাধিক প্রধান ও ১৬জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “ ওই ব্যক্তিকে কেউ চেনে না। ওঁর রাজনীতি নিয়ে কোনও ধারণা নেই। এমন লোককে কী করে শাসক দলের ব্লক সভাপতি হিসেবে মেনে নেব?” তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, “ দলের কেউ ওকে চেনে কি না জিজ্ঞাসা করুন। ওঁকে আমরা ওই পদে মানব না।” এ কথা দলের জেলা সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছেন দাবি করে মাহে বলেন, “সভাপতি বিষয়টি এমন কেন হল তা খোঁজ নেবেন বলে জানান।”
এর আগে অখণ্ড বড়ঞা ব্লকে সভাপতি ছিলেন রবীন ঘোষ। তিনি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেল বন্দি বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার ঘনিষ্ঠ বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। বিধায়কের অনুপস্থিতিতে এলাকা দেখভালের জন্য চার জনের যে কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল তৃণমূল, সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন রবীন। যদিও সেই রবীন ‘বিজেপির সঙ্গে আঁতাত’ করে চলত বলে অভিযোগ ছিল বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীর। তবুও তাঁকে সরিয়ে বর্তমান জেলা সভাপতি ঘনিষ্ঠ সমীরণ মন্ডলকে নিয়ে আসায় জীবন ঘনিষ্ঠদের কন্ঠে আক্ষেপ ঝড়ে পড়ছে। সূত্রের দাবি, বড়ঞা উত্তরের সভাপতি ও সহ সভাপতি দু’জনেই বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব ঘনিষ্ঠ। কথা ছিল, একটা অংশে মাহে আলম ও আর একটা অংশে জর্জকে দায়িত্ব দেওয়ার। কিন্তু তালিকা প্রকাশের পর তার নাম না থাকায় ক্ষুব্ধ হন মাহে। কালীঘাটে দলের সভায় উপস্থিত থাকায় এব্যাপারে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি জেলা সভাপতির সঙ্গে।