মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ বাল্য বিবাহ নিয়ে এতো সচেতনতার পরেও হুঁশ ফিরছে না সাধারণ মানুষের। এবং এরই মাঝে আরও একবার নওদায় বাল্যবিবাহ রদ করল প্রশাসন, কন্যাশ্রীযোদ্ধা ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। জানা গিয়েছে নওদায় মধুপুরের ডাঙাপাড়ায় বাসিন্দা নবম শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ে ঠিক করেছিল পরিবার। গোপনে সেই খবর পেয়ে মঙ্গলবার নাবালিকার বাড়িতে হাজির হয় ব্লক প্রশাসন, পুলিশ , কন্যাশ্রীযোদ্ধা ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। পরিবারের সদস্যদের বোঝান হন বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে। পড়ে পরিবার বুঝতে পেরে প্রশাসনকে মুচলেখা দেয় সাবালিকা হলেই তবেই মেয়ের বিয়ে দেবেন।
রাজ্যজুড়ে বেড়ে চলেছে বাল্য বিবাহের সংখ্যা। এবং পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ জেলাতেও দেখা যাচ্ছে এই আশঙ্ক। প্রান্তিক পিছিয়ে পরা জেলায়, শিক্ষার হার কম হওয়ার কারণে খুব কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় এখানকার মেয়েদের। যার ফলে পরবর্তীতে নানান সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্ত ঘটনাই, ঘটছে নাকের তলা দিয়ে। গত এক দশকে বাল্যবিবাহ রুখতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কমিশন। তা গোটা দেশে সারা ফেললেও বাংলায় বাল্যবিবাহ এখনও উদ্বেগজনক।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সুপার ভাইজার, কিবরিয়া হোসেন জানান, “আমরা এই বাল্য বিবাহের কথা জানতে পেরেই তৎক্ষণাৎ বেড়িয়ে পরি। এবং এসে দেখি এই মেয়েটির বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যার বয়স এখনও ১৮ হয়নি। এইমত পরিস্থিতিতে আমরা বাড়িরলোককে বোঝায় এবং তাদের কাছ থেকে একটি মুছলেখা নিয়ে রাখি। যদি তাঁরা এরপরেও এই মেয়ের বিয়ে দিয়ে যায় তাহলে কঠিন দণ্ডনীয় অপরাধের কারণে। জেল হবে এবং জরিমানাও।”
জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার সাম্প্রতিক রিপোর্ট (২০১৯-২০) অনুযায়ী, এ রাজ্যে ৪২ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়। দেশের শিশু অপহরণ ও পাচারের ৬৯ শতাংশের শরিকও এই রাজ্য। ইউনিসেফ বা সরকারি কর্তারা দেখছেন, নানা চেষ্টা সত্ত্বেও বাল্য বিবাহের পরিস্থিতি আদৌ পাল্টায়নি। অনেকেই মনে করেন অতিমারির কারণে এই বাল্যবিবাহের প্রবণতা উল্টে বেড়েছে।