Teacher Recruitment: কোলে সন্তান নিয়ে এসেছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলতে বলতে চোখে জল ধরে রাখতে পারলেন না সেই মা। ২০২২ সালে টেট পাশ করেছেন, কিন্তু এখনও জোটেনি চাকরি, মেলেনি বিজ্ঞপ্তিও। বহরমপুর খোদ শিক্ষা মন্ত্রী থেকে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতিকে হাতের নাগালে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন চাকরি প্রার্থীরা। শনিবার এমনই ছবি উঠে এল বহরমপুর স্টেডিয়ামে।
বহরমপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৩৯ তম রাজ্য বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যে বিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানে এসে টেট পাস চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন শিক্ষা মন্ত্রী থেকে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। এই নিয়েই উত্তপ্ত হল বহরমপুর স্টেডিয়াম চত্বর। কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হল সেই অনুষ্ঠান। শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে নাগালে পেয়ে টেট পাশ চাকরি প্রার্থীরা শূন্য পদে নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তির দাবি তোলেন ২০২২ সালের টেট পাশ পরীক্ষার্থীরা। যদিও এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ” পর্ষদ এবছর ১০০০০ শিক্ষককে চাকরি দিল। আমরা পর্ষদকে বলেছি আপনারা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দিন। চাকরি তাঁরা দিয়েছে। একবার আদালতে গিয়ে দেখুন আমাদের বিরুদ্ধে। আমার ধারণা আমরা জিতব। ”
সীমান্তবর্তী লালগোলা থেকে নিজের সন্তান কোলে এসেছিলেন ২০২২ সালের টেট পাশ চাকরি প্রার্থী নূর নিশা। সাথে ছিলেন আরও দু’জন। তাঁরা সকলেই টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৬ই ফেব্রুয়ারিতে, ২০১৭ সালে টেট পাস পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ হয়েছে। বহরমপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদ থেকে সেই কাউন্সিলিং হয়েছে। তবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে প্রতিযোগিতা। এর মাঝে ২০২৩ সালেও হয়েছে টেট পরীক্ষা। যদিও তার রেজাল্ট এখনও বের হয়নি। তাই ২০২২ সালের পরীক্ষায় পাশ করা প্রার্থীরা তাঁদের বঞ্চনার দাবি নিয়েই এদিন ক্ষোভ উগড়ে দেন সংবাদ মাধ্যমের সামনে। লালগোলার টেট পাশ চাকরি প্রার্থী হামিদা বানু জানান, ” আমরা দু’বছর আগে পাশ করেছি। আমাদের চাকরির নোটিফিকেশন না দিলে, আরও কম্পিটিশন বাড়বে। আমরা পাশ করে আর ক’দিন বসে থাকব? স্যারের কাছে এসেছিলাম নোটিফিকেশনের দাবিতে। আমাদের বয়স তো বসে নেই। আমাদের একটাই রিকুয়েস্ট ছিল শিক্ষামন্ত্রী ও পালবাবুর কাছে ভোটের আগে আমাদের ইন্টারভিউয়ের নোটিফিকেশনটা প্লিজ দিন। ”
বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির সাথে কথা বলেন তাঁরা। পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল তাঁদের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। এসবের মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বহরমপুর স্টেডিয়াম চত্বর। তারই মাঝে মাঠের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ খেলার মাঠে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে যদিও পর্ষদ সভাপতি মেধার ভিত্তিতেই দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস দেন। তিনি জানান, ” টেট পরীক্ষা ও নিয়োগ দুটো আলাদা নিয়মে হয়। টেট হয় টেটের নিয়মে আর নিয়োগ হয় শূন্যপদের ভিত্তিতে। টেট পাশ চাকরি পাবার কোনও সার্টিফিকেট না। যারা টেট পাশ করেছে, তাঁরা যে সবাই চাকরি পাবে এর কিন্তু কোনও গ্যারেন্টি নেই। সাথে টেট পাশ করলেই যে সাথে সাথে তাঁদের ইন্টারভিউতে ডাকতে হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। যারা পাশ করেছে তাঁদের এই মুহূর্তে নোটিফিকেশন দিলে যারা যোগ্য তাঁদের নিয়োগ আটকে যেতে পারে।