Sutapa Chowdhury সুতপা চৌধুরী হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ রদ করল আদালত। আগেই এই মামলায় দোষী হয় সুশান্ত চৌধুরী। তার ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। বুধবার ফাঁসি রদ করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের Debangsu Basak ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪০ বছরের আগে সাজা মাফ চেয়ে আবেদন করা যাবে না। এছাড়া দোষীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
Sutapa Chowdhury ২০২২ সালের ২রা মে ভরসন্ধ্যায় ছাত্রী খুনে আঁতকে উঠেছিল শহর বহরমপুর । সেই খুনের ১৫ মাস পর হয় অপরাধীর সাজা ঘোষণা । বহরমপুরে কলেজ ছাত্রী খুনে অপরাধীর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে বহরমপুরের আদালত। ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট অবশেষে ফাঁসির সাজা শোনালেন বহরমপুরের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের অতিরিক্ত ও জেলা দায়রা বিচারক Santosh Kumar Pathak সন্তোষ কুমার পাঠক । ফাঁসির সাজা ঘোষণার পরেও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে সুশান্ত। সাজা কমানোর আর্জিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় দোষী সুশান্ত। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। বুধবার বিচারপতি ফাঁসির সাজা রদ করে নজিরবিহীন রায় দেন।
২০২২ সালের ২ মে, সোমবার সন্ধ্যায় ৬ টা ৩৫ মিনিটে বহরমপুরের গোরাবাজারে অভিজাত পাড়ায় ঘটেছিল সেই হাড় হিম করা ঘটনা। ভরসন্ধ্যায় নিজের মেসের বাইরে খুন হন বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী। মালদার বাড়ি থেকে বহরমপুরে পড়তে এসেছিলেন তিনি।
জানা গিয়েছে, সেদিন এক বন্ধুর সাথে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন সুতপা। সিনেমা দেখে ফেরার সময় সুতপার পিছু নেয় সুতপারই প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত। মেসের সামনে আসতেই হামলা করে সে।
Sutapa Chowdhury কী ঘটেছিল সেদিন ?
Sutapa Chowdhury খুনের ছবি ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়। খুনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শমসেরগঞ্জের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে সুশান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।ঘটনার ৭৫ দিনের মাথায় বহরমপুর আদালতে সুতপা হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। অভিযুক্ত সুশান্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় (খুন) ও ২০১ ধারায় ( প্রমাণ লোপাট) চার্জশিট দাখিল করা হয়। আদালতে জমা পড়ে ৩৮৩ পাতার চার্জশিট। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, পুর্বপরিকল্পিতভাবেই খুন করা হয় কলেজ ছাত্রীকে।
খুনের আগে অনলাইনে একটি খেলনা বন্দুকও কিনেছিল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী। হত্যার মওকা খুঁজতে বহরমপুরে একটি মেসে থাকতেও শুরু করেছিলেন সুশান্ত।আইনজীবিদের দাবি, খুনের উদ্দেশ্যেই বহরমপুরে এসেছিলেন সুশান্ত।
অভিযুক্ত সুশান্তকে খুনের পর নিজের চোখে পালাতে দেখেন দুই সাক্ষী। জানা যায়, খুনের পর পাঁচিল টপকে পালায় সুশান্ত। এরপর যায় তার মেসে। সেখান থেকে বেড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল সে। খুনের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যা ৬ টায় মেস থেকে বেড়িয়েছিল সুশান্ত। ফের মেসে ফেরে সন্ধ্যা ৭ টায়। তারপর সেখান থেকে ফের পালায় সুশান্ত। জানা গিয়েছে, কলেজ পড়ুয়া সুতপার দেহে ছিল ৪২ টি আঘাত। আঘাত গুরুতর হওয়াতে ঘটনাস্থলেই হয় মৃত্যু। প্রত্যক্ষদর্শীরা সুতপাকে বাঁচানর চেষ্টা করলে পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখায় সুশান্ত। দেয় খুনের হুমকিও। পরে যদিও পুলিশ জানায়, ঐ বন্দুক আসলে খেলনা বন্দুক।
Sutapa Chowdhury সুতপা চৌধুরীর পরিবারের অভিযোগ, ২০১৭ সাল থেকেই একাধিকবার অশান্তি সৃষ্টি করেছিল সুশান্ত। তদন্তে উঠে এসেছে, সুতপা চৌধুরীর উপর রাগ ও হতাশা থেকেই এই খুন। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যা বয়ান দেওয়ারও চেষ্টা করে সুশান্ত। তবে লাভ হয় নি। শুনানি চলাকালীন ৩৪ জনের সাক্ষী গ্রহণ করেছে আদালত। তদন্তে রয়েছে একাধিক ‘ইলেকট্রনিক এভিডেন্স’ ও। রয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ, এক সাক্ষীর নেওয়া ভিডিও ফুটেজ, অভিযুক্তের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন, কল রেকর্ড।জানা গিয়েছে আগে সুশান্তর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুতপা চৌধুরীর। সুতপা সেই সম্পর্ক ভেঙে বেড়িয়ে আসতেই এই কান্ড ঘটায় অভিযুক্ত।
Sutapa Chowdhuryসেই সুতপা চৌধুরী হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ রদ করল আদালত। আগেই এই মামলায় দোষী হয় সুশান্ত চৌধুরী। তার ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। বুধবার ফাঁসি রদ করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ।