নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ হাতে আর দিন সাতেকও সময় নেই। মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। চলছে হাইমাদ্রাসার পরীক্ষাও। তারমধ্যেই স্কুল কলেজে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। কুমোর পাড়াতেও তুঙ্গে ব্যস্ততা। সামনের বুধবার বাসন্তী পঞ্চমী। ওইদিন সরস্বতী পুজো। বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীত-কলা বিভাগের দেবী সরস্বতী। সেই দেবীর মুর্তি তৈরির মাটির কাজ প্রায় শেষ। রঙের প্রলেপ পড়েছে প্রায় সব জায়গায়। তবে বহরমপুরের খাগড়া, সৈদাবাদ একাধিক এলাকা ঢুরে জানা গেল, দুর্গাপুজো বা কালীপুজো এমনকি বহরমপুরের বিখ্যাত ভৈরব পুজোর মতো এই পুজোয় আগাম বায়না তেমন হয় না। অধিকাংশ বাড়িতেই সরস্বতী পুজো হয়। ফলে শিল্পীরা অনেকেই নিজেদের পছন্দমতো মুর্তি বানান। সেই মুর্তি পড়ুয়ারা কিনে নিয়ে যায়। এক ফুট থেকে পনেরো-বিশ ফুটের মুর্তিও তৈরি করেন শিল্পীরা। তবে সব যে স্কুল কলেজেই যায় তা নয়। কিছু বারোয়ারী পুজোও হয়।
করোনাকালে জোর ধাক্কা খেয়েছিলেন মৃৎশিল্পীরা। খাগড়ার মৃৎশিল্পী তাপস দাস বলেন, মুর্তি সব সময় যে ছাঁচের হয় তা নয়। কখনও হাতে জমানো মুর্তিও তৈরি হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে খড়ের কাঠামোতেই স্কুল কলেজের জন্য সরস্বতী ঠাকুর তৈরি করা হয়। তবে মুর্তি তৈরির খরচ আগের তুলনায় খুব একটা বাড়েনি বলেই মত তাঁর। হিসেব নিয়ে জানা গেল, একটু ভালো মানের দেড় ফুট থেকে দুফুট হাতে জমানো মুর্তির দাম দেড় দু-হাজার ছুঁতে পারে। তবে এই ধরনের মুর্তির ক্রেতা কম। বড় যে মুর্তিগুলো তৈরি হয় তার দাম পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। মুর্তির অনুপাতে সেই দাম ছুঁতে পারে পঞ্চাশ হাজারও।
স্কুলে পুজোর বাজেট সাধারণত নাগালেই থাকে। পুজোর জন্য খরচ কম বেশি হাজার পঞ্চাশের মধ্যে থাকে। কোথাও তার বেশিও হয়। তবে কলেজের খরচ তুলনামুলকভাবে বেশি হয়। বহরমপুর গার্লস কলেজের অধ্যাপক মুনমুন পাল বাগ বলেন, “ সরস্বতী পুজোয় কমবেশি লাখ তিনেক টাকা খরচ হয়।” তবে প্রতি বছর জাঁকজমক করে সরস্বতী পুজো হয় বহরমপুর টেক্সটাইল কলেজে।
পুজো একদিন হলেও.তিনদিনের বিভিন্ন প্রদর্শনী থাকবে পুজো উপলক্ষে। প্রতি বছরই থিমের পুজো করেন কলেজের পড়ুয়ারা। কলেজের পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য পদ্মনাভ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এবারের থিম ইউনিটি ইন ডাইভারসিটি।” সেই পুজোতেও বাজেট চার লক্ষ টাকা বলে দাবি করেন পদ্মনাভ। ইতিমধ্যে তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। তৈরি হয়েছে প্রতিবেশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে নিমন্ত্রণ জানানোর বিশেষ আমন্ত্রণ পত্রও।তবে সরস্বতী পুজোর পরের দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা তাল কেটেছে পুজোয়। পুজোর পরের পরের দিন থেকে শুরু পরীক্ষা শুরু হওয়ায় উচ্চমাধ্যমিকের পড়ুয়াদের মন ভার।