Rash festival দুর্গাপুজো, দীপাবলি, জগদ্ধাত্রী পুজো কাটিয়ে আর কিছু দিন পরেই রাস উৎসবে মেতে উঠবেন বাংলার মানুষ। পড়ন্ত হেমন্তে হাল্কা শীতের পরশে চাঁদের আলোয় পালিত হয় রাসপূর্ণিমা৷ বৃন্দাবন, মথুরা-সহ অন্যান্য বৈষ্ণব মন্দিরে পালিত হয় এই পুণ্যতিথি৷ তবে এই বাংলার রাস উৎসবের বৈচিত্র কিছু কম নয়। এবছর রাসপূর্ণিমা পড়েছে কার্তিক পূর্ণিমা অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর৷ নদীয়ার শান্তিপুর নবদ্বীপ মূলত দুই জায়গার রাসযাত্রা খুবই সমাদৃত। নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদের রাস উৎসবে সেভাবে জাকজমক না থাকলেও কান্দি রাজবাড়ি ও নশিপুর জাফরাগঞ্জ আখড়ায় দুশো বছরেরও বেশি সময় ধরে রাস উৎসব পালিত হয়ে আসছে। পশ্চিমবঙ্গে রাস উৎসবগুলোর মধ্যে নবদ্বীপের রাস অন্যতম। এখানকার রাসের বিশেষত্ব হল বিশাল আকারের মূর্তি। কথিত আছে, অদ্বৈতাচার্য শান্তিপুরে ও শ্রীচৈতন্যদেব নবদ্বীপে রাস উৎসবের সূচনা করেছিলেন।
Rash festival আনুমানিক ৫০০ বছর আগে অদ্বৈত আচার্যের হাত ধরে প্রথম শুরু হয়েছিল শান্তিপুরের রাসযাত্রা। শান্তিপুরের রাশের অন্যতম আকর্ষণ রাইরাজা। শান্তিপুরের রাস উৎসবের কেন্দ্রে যিনি থাকেন তিনি হলেন বড়ো গোস্বামীবাড়ির শ্রীরাধারমণ জিউ। ঐতিহ্যবাহী বড়ো গোস্বামীবাড়ির বিগ্রহদের নিয়ে এবং অন্যান্য বিগ্রহ নিয়ে শোভাযাত্রা শান্তিপুর পরিক্রমা করে। সেই শোভাযাত্রা দেখার জন্য ভিড় করেন দূরদূরান্তের মানুষজন। নবদ্বীপের রাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আলাদারকম ঐতিহ্য। এখানের রাস উৎসবে শাক্ত ও বৈষ্ণব ধারার মিলন ঘটে। নামে রাস উৎসব হলেও এক তিথিতে পূজিত হন নানা দেবদেবী।
Rash festival রাস পুর্নিমা উপলক্ষে রাস উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে মুর্শিদাবাদের কান্দি রাধাবল্লভ মন্দিরে, কথিত আছে এই উৎসব প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন। মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, সকালের সূর্য উদয় হওয়ার আগে থেকে রাস উৎসব শুরু হয় কান্দি রাজ বাড়ির রাধাবল্লভ মন্দিরে। ওই দিন ভোর থেকেই মন্দিরে দর্শনার্থীরা ভিড় করতে শুরু করেন। টানা তিন দিন ধরে রাস উৎসবের কারণে বিশেষ পুজো হয় এই মন্দিরে। শহরের বাসিন্দারা ছাড়াও বহড়া, আনুখা, পাঁচথুপি, গোকর্ণ-সহ বহু গ্রামের বাসিন্দারা মন্দিরে ভিড় করেন। রাসের দিন থেকে পরপর তিন দিনের বিশেষ পুজোয় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নয় বার ভোগ নিবেদনের রেওয়াজ আজও ধরে রেখেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের জাফরাগঞ্জ আখড়ার রাসযাত্রা উৎসব ঘিরে মেতে ওঠে নসিপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা। রাস উৎসব উপলক্ষে আখড়াকে আলোকমালায় সাজিয়ে তোলা হয়। আখড়ার ভিতরে মন্দিরে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার রাসলীলার দৃশ্যকে পুতুলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। নশিপুর আখড়ার রাস উৎসব দেখতে নশিপুরের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ জন।