এখন খবরমধ্যবঙ্গ নিউজপরিবেশবিনোদনহেলথ ওয়াচখেলাঘরে বাইরেলাইফস্টাইলঅন্যান্য

Cyclone Mantha: সাইক্লোন মোন্থা ভিজিয়ে দিল বহরমপুরকে

Published on: October 30, 2025
Cyclone Mantha

                              এই বৃষ্টির কি প্রভাব পড়বে ফসলে?

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ গত কয়েকদিন ধরেই বহরমপুরে বাতাসের দূষণ সূচক খারাপ জায়গায় ছিল। কালীপুজো, দীপাবলিতে শব্দ বাজি, আতস বাজির দাপটে তা উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছে যায়। অনেকেই শ্বাসকষ্টের রোগী, শিশু, অসুস্থদের সতর্ক করছিলেন। জগদ্ধাত্রী পুজোর নবমীতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টের সময় বৃষ্টিতে শহরকে দেখে মনে হচ্ছিল, ‘ক্লিন, গ্রিন অ্যান্ড ফাইন’ বহরমপুর (Berhampore)। সৌজন্যে সাইক্লোন ‘মোন্থা’ (Cyclone Mantha)। মনে হচ্ছিল কোথাও দূষণ নেই। সব ধুয়ে গিয়েছে। রাস্তাও ফাঁকা। যানজট নেই। বারাক স্কোয়ার সংলগ্ন টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে দাঁড়িয়ে সেই সময় শহরটাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল। আগ্রহভরে এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স (একিউআই) পরীক্ষা করে বাতাসে দূষণের মান দেখলাম। গুগল দেখাচ্ছে ৮৮। অর্থাৎ খারাপ নয়। মাঝামাঝি। বোঝা গেল তবে এখনও পুরোপুরি ‘ক্লিন’ হয়নি। হোক না আরেকটু বৃষ্টি।

আরও পড়ুনঃ Murshidabad Potato ফড়েরা খাচ্ছে দই, খরচ বাড়ছে কৃষিকাজে, দুশ্চিন্তা নিয়েই শুরু আলু চাষের

Cyclone Mantha
ঘূর্ণিঝড় মোন্থার জেরে বাংলায় বৃষ্টি হবে তার আবহাওয়া বাণী ছিলই। গতকাল, বুধবার রাতেও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। এদিন বহরমপুরে মেঘলাই ছিল দিনভর। বৃষ্টি কি হবে না তা নিয়ে দোলাচল ছিল। বেলা আড়াইটের পরে বৃষ্টি শুরু। বিকেল গড়াতেই মুষল ধারে বৃষ্টি নামল।
সন্ধ্যা যেন দ্রুত নেমে আসতে চাইছে মনে হল। হঠাৎ দ্রুত গতিতে একটি বাইক পাস দিয়ে চলে গেল। বাইকে এক তরুণ ও তরুণী ছিল। ছিটনো জলে ভিজিয়ে দিল। হেমন্তের বিকেলে এই বৃষ্টিতে শহরটাকে অন্যরকম দেখাচ্ছে। মনে পড়ল সকালেই জয় গোস্বামীর কবিতার লাইন পড়ছিলাম, ‘চুল থেকে নখ ভিজিয়ে দিয়ে…সবাই এখন বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়। বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়।’ চোখে পড়ল টেক্সটাইল মোড় থেকে পুলিস লাইনের দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার ডান দিকে পোস্ট অফিস। হঠাৎ কীভাবে লক্ষ্য করলাম, একেবারে ভিজে গিয়েছে। শুকনোই তো থাকে। এখন তো আর চিঠিপত্র আসে না। কোনওরকমে ছাতার নীচে মোবাইল খুলতেই ভেসে উঠল খবর-সাইক্লোন মোন্থা। নিজেই ভেঙে নিয়ে মনে মনে বললাম, ‘মন-থা’।
বাইরে বেরিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে একসা হয়ে যান অনেকেই। টেক্সটাইল মোড়ে ট্রাফিকের সিগনাল রেড। একটিতে ৪৭ ও একদিকে ২২ লেখা। তর সইছে না। ফাঁকা রাস্তায় ট্রাফিকের কী প্রয়োজন? ভিজে দাঁড়িয়ে থাকতে অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন। ট্রাফিকের লাল আলো যেন ওই আবহাওয়ায় মানান সই হচ্ছে না। শুধুই সবুজ দেখতে চাইছে মন। বৃষ্টির ছিটে থেকে বাচতে সিভিকও ট্রাফিক পোস্টের আরও ভিতরের দিকে ঢুকতে চেষ্টা করছিলেন। অনেকেই বলে থাকেন ভাগীরথীর পাড়ের বহরমপুর শহরকে আমরা সবুজ দেখতে চাই। কিন্তু যান সহ বিভিন্ন কারণে দূষণের পরিমাণ বাড়ছে।
আবর্জনা বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এখানে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন। ফলে ভিড় বাড়ে। পুরোপুরি জঞ্জাল্মুক্ত হয়নি বহরমপুর তা রাস্তায় ঘুরলেই টের পাওয়া যায়। সব বহরমপুরবাসীরী বোধ হয় একটাই সুর, ক্লিন, গ্রিন অ্যান্ড ফাইন বহরমপুর।
এদিন টোটোগুলিতে দেখা গেল সবাই পলিথিনের ঢাকা নামিয়ে যাচ্ছেন। যাত্রীরা জবুথবু হয়ে বসে। দেখে বোঝা যাচ্ছিল শীত আসন্ন। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে যায়। স্বাভাবিকভাবে এবার ঠান্ডা পড়বে বলে আলোচনাও শুরু হয়েছে বাড়িতে-বাড়িতে। মন্থার দাপটে অন্ধ্রপ্রদেশে তাণ্ডব চলেছে। তবে বাংলায় এই বৃষ্টি মাঝারি প্রভাব রেখে গেল।
এই বৃষ্টিতে কৃষকদের অনেকে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পাকা ধান নিয়ে। অনেকে আগেই ধান ঝরিয়ে নিচ্ছেন। শনিবার থেকে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হবে। ধান বস্তায় ভরে রাখার প্রস্তুতি শুরু। সেই ধান ভিজে গেলে সমস্যা। পেঁয়াজের বীজ অনেকে আগলে রেখেছেন ঢাকা দিয়ে। আবার যেসব সব্জি জলের অভাবে সমস্যায় ছিল তাঁদের উপকার হবে। এর বেশি বৃষ্টি না হলে পোয়াবারো আলু ও সর্ষে চাষিদের।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now