মুর্শিদাবাদে দলের কোঁদলে লাগাম টানতে কঠোর হচ্ছেন সভাপতি অপূর্ব

Published By: Madhyabanga News | Published On:

বিদ্যুৎ মৈত্র , বহরমপুরঃ তাঁর পর্যবেক্ষণ, দলের এক অংশ দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকের খবর ‘পাচার’ করে বাইরে। আর তা ‘দাবানল’এর মতো ছড়িয়ে পরে নেতা থেকে নেতায়। এমনকি সংবাদমাধ্যমেও সেই খবর পৌঁছে দেওয়ায় যুক্ত দলেরই সেই সব ‘কালীদাস’রা। দলের লাগাতার আকছাআকছির পেছনে তাদের দায়ও কম নয়। সেই সব ‘পাচারকারী’দের ধরতে কড়া হুঁশিয়ারী দিয়েছেন তৃণমূলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকার।

সামনের ছ’তারিখ বাবরি মসজিদ ধবংসের দিন শহীদ মিনারে সংহতি দিবস উদযাপন করবে তৃণমূল। সেখানে কয়েক লক্ষ্য লোকের জমায়েতে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে দল। আর তা পূরণে জেলা থেকে কর্মী সমর্থকদের যত বেশি সংখ্যায় হাজির করানো যায় তার নির্দেশও এসেছে তৃণমূল ভবন থেকে। সেই প্রস্তুতির খুঁটিনাটি জানতে রবিবার জেলায় এসেছিলেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সভাপতি মোশারফ হোসেন। ওই দিন বিকেলে রাজ্য নেতার সামনেই অপূর্ব বলেন, “ যে বা যাঁরা দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকের কথা বাইরে প্রচার করবে, প্রমাণ সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এমনকি আইনী ব্যবস্থার পথেও হাঁটবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এদিন এপ্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “দলের মধ্যে শৃঙ্খলা থাকা জরুরি। এটাও সেই শৃঙ্খলারই অঙ্গ। তবে হুঁশিয়ারি নয় অনুরোধ করা হয়েছে।”

দলের একাংশ অবশ্য পাল্টা একটা যুক্তি দেখাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, “সর্বস্ব প্রচারের যুগে সাবধানতাই হোক আর অসাবধানতাই হোক দলের কথাও প্রচার হয়ে যায়। দলের কথা তো আর অর্ধাঙ্গীনীর সঙ্গে আলোচনা করার নয়। সবারই অনুগামী আছে। তাদের সঙ্গে দলের সিদ্ধান্ত আলোচনা করতে হয়। তখন হয়ত অনিচ্ছাকৃতভাবেই কেউ বাইরে বলে ফেলে। সেখান থেকে কথা পাঁচ কান হয়। সবার স্বভাব তো একরকম নয়।”  তাঁদের আরও যুক্তি “অনেক সময় খাতা কলমের বদলে দলীয় নির্দেশ ফোনে রেকর্ডিং করে নিলে সুবিধা হয়। সেই সময়ও দলের অনেক কথা রেকর্ড হয়ে যায় অজান্তেই। এমনকি শীর্ষ নেতাদের কারও কারও কাছ থেকে এই ঘটনা ঘটেনি অতীতে এমন নয়।” তবে সেই সব শীর্ষ নেতারা এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিলে দলের ‘গোপন’ কথা চাউর কম হবে বলেও মনে করেন তাঁরা। ডেভিড অবশ্য বলছেন “দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে সবাইকে মোবাইল বন্ধ করেই ঢুকতে হবে। সব জায়গায় এটাই নিয়ম।”

এখনও এক পক্ষ পেরোয়নি। দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। ঘর গোছানো তো দূর। সংবর্ধনার পালাই শেষ হয়নি এখনও। তারমধ্যেই দলনেত্রীর বিশেষ অধিবেশনে যোগ দিয়ে কলকাতা থেকে ঘুরে এসেছেন। কথা হয়েছে সুব্রত বক্সির মতো প্রথম সারির কয়েকজন নেতার সঙ্গে। কিছু ‘সাজেশন’এর আদান প্রদান হয়েছে মাত্র। সেখান থেকে ঘুরে এসে দল চালানোর ‘পরিকল্পনা’ নিয়েছেন তিনি। তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য দলের কোন্দলে রাশ টানা।

লোকসভা নির্বাচন আর মেরেকেটে মাস ছয়েক। তাই জেলা কমিটি ব্লক কমিটির এখনই অদলবদল করে নতুন করে ‘অশান্তি’ চাইছেন না ‘পোড় খাওয়া’ বিধায়ক। তাই আপাতত ‘হুমকি’ দিয়েই রাশ টানা শুরু করলেন ডেভিড।