‘আগে কখনও এমন অবস্থা হয়নি’, মুর্শিদাবাদের ঢাকিরা কেন এই কথা বলছেন ?
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কাশফুলগুলি মাথা নেড়ে জানান দিচ্ছে। শরতের মেঘ যেন এই বুঝি নেমে এসে তাদের ছুঁয়ে ফেলে। আকাশে বাড়ছে সাদা ভেলার আনাগোনা। বর্ষায় হিল্লোল তোলা নদীগুলিতে নেমেছে বন্যার জল। কিশোরী মেয়েটি মায়ের সঙ্গে ঘর ঝাড়তে ব্যস্ত। এগিয়ে আসছে পুজোর Durga Puja দিন। বাতাসে জোরালো শারদীয়ার গন্ধ। দোকানে, শপিং মলে নতুন জিনিস কেনার হিড়িক। নেশা লাগতে শুরু করেছে ঢাকিদের মনেও। সারা বছরের অপেক্ষা তো এই পুজোর মরসুমের জন্যেই। বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো দিয়ে যার সূচনা। একেবারে কালীপুজো পর্যন্ত চলবে মরশুম। ভোরেই ঘুম ভেঙে যায়। এই যেন সকাল হল। মহাষষ্ঠীর সকালে দুর্গা মণ্ডপে কাঁধে ঢাক নিয়ে হাজির হয়ে যাবেন । তর সইছে না। তাঁদের ঢাকের মিষ্টি আওয়াজে ঘুম ভাঙবে সবার। ঢাক বানানোর শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা তুঙ্গে। তবে তারই মধ্যে এবার উদ্বেগ মাথাচাড়া দিয়েছে। ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের Migrant Labour হেনস্থা ভয় ধরিয়েছে। বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলার শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে। কখনো পাঠানোর চেষ্টা হয়েছে বাংলাদেশে। দুর্গাপুজোয় ঢাক বাজাতে গেলে যদি মারধর করা হয়?
কী বলছেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার বাঁশচাতর গ্রামের ঢাকিরা?
Puja Preparation of Dhakis of Murshidabad ঢাকি বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘আমি ভারতের সব জায়গা ইতিমধ্যে ঘুরেছি। এবার মালয়েশিয়া যাব। মুম্বইয়ে আমাদের দুটি টিম যাবে। দিল্লিতে একটি টিম যাবে। কলকাতায় একটি টিম যাবে। আমাদের কাছে আইনি নথি আছে। আশা করি আমাদের কোনও অসুবিধা হবে না। যারা বাইরে থেকে এসেছেন তাঁরা ভয়ে থাকবেন। আমাদের কোনও চিন্তা নেই। আমরা ভারতীয়। নথি নিয়ে যাব। তবে এই ধরনের পরিবেশ আগে হয়নি। এসব রাজনীতির খেলা। স্থানীয় প্রশাসনকে আমাদের বিষয়ে বিশদ তথ্য দিয়ে যাব’।
Dhakis of Murshidabad ঢাকি লালু দাস বলেন, “আমি লন্ডন, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশ পাড়ি দিয়েছি। মুম্বইতে গায়ক অভিজিত ভট্টাচার্যের বাড়িতে ২৮ বছর ঢাক বাজাচ্ছি। আমরা মুর্শিদাবাদের স্থানীয় লোক। ৭ পুরুষ ধরে রয়েছি। শুনছি বাইরে গেলে মারধর করছে। যে কয়জন যাব পুলিশের কাছে সার্টিফিকেট নিয়ে যাব। কিছু লোক বাংলাদেশ থেকে আসছে। তারা দোষ করছে। ভুগতে হচ্ছে আমাদের। এবার ১৪ জন মুম্বই যাব। সত্যের যুগ আর নেই!’