POLY HOUSE: পালং ফলিয়ে সাত লক্ষ আয় বহরমপুরের আব্দুলের

Published By: Madhyabanga News | Published On:

রামচন্দ্র বিশ্বাস, বহরমপুরঃ “মন রে কৃষিকাজ জান না / এমন মানব জমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা।” আবাদ করলে চাষের জমিতেও যে বাস্তবে সোনা ফলতে পারে তা হাতে নাতে করে দেখালেন আব্দুল মোহিত খান। চাষে লাভের থেকে ক্ষতি বেশি, হরবখত এ কথা শুনতেই অভ্যস্ত কান। কিন্তু সেই অভ্যাসে ছেদ টেনে একই জমিতে বিকল্প ভাবনার উদয় ঘটেছে আব্দুলের চিন্তায়।

উদ্যান পালন দপ্তরের সহযোগিতায় ২০১৫ সালে বহরমপুর ব্লকের ভাকুড়ি-২ পঞ্চায়েতের বাণীনাথপুর এলাকায় ১৩ জন কৃষক তৈরি করেছিলেন ৪টি পলি হাউস। সেখানেই অন্যান্য বছরের মতো এবারও পালং চাষ করেছিলেন সেই কৃষক। সেই শাক বিক্রি করে তাঁর আয় হয়েছে ৭ লক্ষ টাকা। আব্দুলের দাবি ওই চাষ করতে তাঁর খরচ হয়েছে  ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা।

পলি হাউস কী?

পলিথিনের ছাউনি পলি হাউস। সাধারণত দুশো মাইক্রনের পলিথিন ব্যবহার করা হয় এই ছাউনি তৈরি করতে। প্রতিনিয়ত আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। এই অবস্থায় চাষের বিকল্প হয়ে উঠেছে পলি হাউস। যার মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত করা  যায়। জলের পাইপ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেচ ব্যবস্থাও। কৃষকরা এখন পলিহাউস চাষে গভীর আগ্রহ দেখাচ্ছে কারণ এটি বেশি লাভজনক এবং ঐতিহ্যবাহী খোলা চাষের তুলনায় এর ঝুঁকি খুবই কম। এছাড়াও, এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে কৃষকরা সারা বছর ধরে ফসল ফলাতে পারে।

আর এই পলি হাউসই মুখে হাসি ফুটিয়েছে আব্দুলের মতো চাষিদের। এখানে সাধারণত ক্যাপসিকামের চাষ করেন আব্দুলরা। যেহেতু পালং চাষে কম সময় লাগে তাই ক্যাপসিকাম চাষের ফাঁকে যে সময় থাকে  সেই সময়ে পালং চাষ্ করেন। সেই পালংই এবার  ‘লটারি’ দিয়ছে আব্দুলকে।  সেই গল্পই শোনাচ্ছিলেন  আব্দুল।

তিনি বলেন “আমরা এখানে ক্যাপসিকাম চাষ করি। সাত মাস  ফসল ফলতে লাগে। জুনের আধাআধি পর্যন্ত ফসল থাকবে। অক্টোবর ও নভেম্বর এই দুমাস লাগে ক্যাপসিকাম লাগাতে। এই চাষে জৈব সার বেশি লাগে। খুব অল্প পরিমাণ রাসায়নিক সার লাগে। ”

ক্যাপসিকাম উঠে গেলে দু-তিন দফায় পালং শাক চাষ করেন আব্দুল। তাতেও ভাল লাভ হয়। সেই পালং থেকেই এবার সাত লক্ষ টাকা আয় করেন। ক্যাপসিকাম তিনি বহরমপুরের পাইকারি বাজারে বিক্রি করেন। পালং বিক্রি হয় তাঁর বাড়ি থেকেই। নিজেরাই বীজ কিনে চারা তৈরি করেন। ৩০-৩৫ দিন পরে প্রথম দফার পালং তুলে নেন। দিন সাতেক পরে সেখানে আবার পালং চাষ করেন। আব্দুল আরও বলেন “বছরে চারটি পলি হাউস থেকে গড়ে আট লক্ষ টাকা আয় হয়। খরচ সর্বোচ্চ দু-লক্ষ টাকা।“