Paintings and Sculptures Exhibition ‘আমার শহরে আমি’ সুদীপ রায় Sudip Roy! জলরঙের জাদুতে হল ইচ্ছে পূরণ

Published By: Imagine Desk | Published On:

Paintings and Sculptures Exhibition  এই শহর তাঁর নিজের, কাছের। সেই শহরেই ইচ্ছেপূরণ হল অবশেষে। দীর্ঘ চল্লিশ বছরের ছবির জগতের কাহিনীকে তুলে ধরলেন এই শহরেই। বিখ্যাত চিত্র শিল্পী সুদীপ রায় Sudip Roy নিজের শহর বহরমপুরে এলেন বললেন- ‘আমার শহরে আমি’। এই শীর্ষক নামেই তাঁর চিত্র ও ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়ে গেল বহরমপুর শহরে বুধবার সন্ধ্যায়। ৯ জানুয়ারি থেকে ১০ ই ফেব্রুয়ারি অবধি এই প্রদর্শনী চলবে বহরমপুরের ব্যারাক স্কোয়ারে। চিত্র শিল্পী সুদীপ রায়ের চিত্র ও ভাস্কর্য প্রদর্শনী ঘিরে শিল্পানুরাগিদের উচ্ছ্বাস উদ্বোধনী পর্বেই।

Painting by Sudip Roy

 

Sudip Roy is an Indian artist whose works include water colours and abstract paintings.

Paintings and Sculptures Exhibition  শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় ছবিতে ধরা পড়েছে চাঁদনী রাতের স্নিগ্ধতা, ভারতের বিভিন্ন শহর যেমন মুম্বই, কলকাতা, হায়দ্রাবাদের ব্যস্ত জীবনধারা, বিভিন্ন জীবনযুদ্ধের মুগ্ধকার সারাংশ। প্রতিটি ছবিতেই মানবজীবনের আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছে, চাহিদা, বেদনা, দুঃখ, সংহতির বার্তা স্পষ্ট। শিল্পীর শক্তিশালি রঙের খেলায় জীবন্ত এদেশের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও। এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মুর্শিদাবাদ জেলা শাসক রাজর্ষি মিত্র।

চিত্র প্রদর্শনী জুড়েই বিস্ময়! জলরঙে সুদীপ রায়ের অনুরাগ জাদুকরী দক্ষতা শিল্প ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী বলেই মনে করছেন শিল্পানুরাগিরা। প্রদর্শনীতে এসে মুর্শিদাবাদ জেলা শাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন , ” যে কোন শহরেই শিল্পের ক্ষেত্রে মিউজিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিউজিয়াম অফ আর্ট এন্ড ফাইন আর্টস যেকোন শহরকে আলাদা উচ্চতায় নিয়ে যায়! এটা তৈরি করার ক্ষেত্রেও চেষ্টা থাকবে আমাদের”।

Paintings and Sculptures Exhibition  ছবিতে আলো আঁধারির ব্যবহার, বিশ্ববিখ্যাত ডাচ চিত্র শিল্পীদের আঁকা ‘ রাত্রির জীবনযাত্রা স্টাডি’ ছবিকে মনে করিয়ে দেয়। শিল্পীর শিল্প সৃষ্টিতে উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রদেশের ব্যবহারিক জীবন। প্রদর্শিত ছবিগুলিতে স্থান পেয়েছে শ্রমজীবী নারীদের কাহিনীও । বছরের শুরুতেই এক অভিনব চিত্র প্রদর্শনীর সাক্ষী থাকল এ শহর।

Paintings and Sculptures Exhibition ‘আমার শহরে আমি’ কেই খুঁজে পেতে চেয়েছেন বিখ্যাত শিল্পী সুদীপ রায়। বলেন, ” এই শহরটা আমার, আপনার আর দশ জনেরও। এই শহর থেকেই বড় হয়েছি। এই শহরের প্রত্যেকটা রাস্তা, গাছপালা, নদী সব আমার পরিচিত। অসংখ্য বন্ধু, শিল্পরসিক যারা থাকেন তাঁদের সাথে প্রায়শই আলোচনা হয়। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এই স্বপ্নটা আমার যেমন ছিল তেমনই আমার শিল্পী বন্ধুদেরও প্রবল ইচ্ছে ছিল। ওঁদের প্রেরনাকে পূর্ণ রূপ দিতে সব থেকে বেশী সহযোগিতা করেছেন মুর্শিদাবাদের বর্তমান জেলা শাসক রাজর্ষি মিত্র।”। তিনি আরও বলেন, ” পৃথিবীর নানান জায়গায় গিয়েছি এত সুন্দর জায়গা প্রদর্শনীর জন্য কোনদিন পেয়েছি বলে মনে হয়না। এই প্রদর্শনী আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রদর্শনী হবে কারণ জলরঙের প্রদর্শনী এত বড় আকারের কোনদিন করি নি। নতুন ভাবে কিছু কাজও করেছি, আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে। সকলের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনী শুধু আমার নয় আমাদের সবার।”

 


Paintings and Sculptures Exhibition দুদিনের এই প্রদর্শনীতে প্রচুর ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। প্রতিটি ছবি যেন এক একটি কাহিনীকে তুলে ধরেছে। স্টিল লাইফ স্টাডি ছবিগুলি যেন সিনেমাটোগ্রাফারের মতো এক গভীর দর্শন এনে দিয়েছে। পুরনো দেওয়ালে প্রজ্বলিত লন্ঠনের আলো যেন দীর্ঘশ্বাস বুকে রেখে হাহাকারকে লুকিয়ে আশার বীজ বুনে দেয়। দীর্ঘ যাত্রাপথের এক শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির সম্ভার নিয়ে এই প্রদর্শনী বলেই জানান চিত্র শিল্পী। ব্যারাক স্কয়ার সংলগ্ন স্থানে চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী পর্বে শিল্প, ভাস্কর্য চাক্ষুস করলেন লোক সংস্কৃতি গবেষক শক্তিনাথ ঝাঁ, বিশিষ্ট গবেষক, সংগ্রাহক রমাপ্রসাদ ভাস্কর সহ শহরের শিল্পানুরাগিরা। মুর্শিদাবাদের শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে নানান তথ্য তুলে ধরলেন অতিথিরা। এই চিত্র প্রদর্শনী মুর্শিদাবাদ জেলাকেও নতুন ভাবে চিনতে সাহায্য করবে বলেই মনে করেন শিল্পানুরাগিরা।

Paintings and Sculptures Exhibition জলরঙের একজন সুদক্ষ শিল্পী সুদীপ রায় তাঁর শৈল্পিক অভিযাত্রাকে এই শুদ্ধতার সন্ধানে চালিত করেছেন বেশ কয়েক দশক আগে থেকে। ১৯৮০-র দশকে তাঁর শিল্পযাত্রার সূচনা হয়েছিল অবয়বী ছবির চর্চার মধ্য দিয়ে। নিসর্গের ছবির ভিতর দিয়ে প্রকৃতির তন্ময়তার কেন্দ্রটির সন্ধান করতেন। জ্যামিতিক কোলাজের শৈলী নিয়েও নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তারপর ধীরে ধীরে বিষয়ের বহিরবয়বকে দ্রবীভূত করতে করতে নিরবয়বে পৌঁছেছেন। আশির দশকেরই অন্তপর্বে যে প্রকল্পের সূচনা, তা আজ বহু ধারায় পল্লবিত হয়েছে। বহরমপুর শহর তাঁর জন্মভূমি হলেও ১৯৯০-এর দশকের শেষ পর্ব থেকে তিনি দিল্লিতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। দিল্লিকে ভিত্তি করে সারা দেশেই এখন তাঁর শিল্পের বিস্তার।