নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সৃষ্টি হয় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। হাসপাতালের সিকিউরিটি ইনচার্জ উদয় নারায়ণ গোস্বামীকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান হাসপাতালের কর্মচারীরা। হাসপাতালের নিরাপত্তার কাজে নিযুক্ত ছিলেন প্রায় ১২০ জন নিরাপত্তা কর্মী। অভিযোগ কোনও রকম নোটিশ না দিয়েই তাদের একসঙ্গে কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এই ঘটনায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিকিউরিটি ইনচার্জ উদয় নারায়ণ গোস্বামীকেই দায়ী করেছেন বিক্ষোভরত কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে এই পদের জন্যে লোক নিয়োগ করেছেন উদয়বাবু। বুধবার এই অভিযোগের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিকিউরিটি ইনচার্জকে ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ, হয় ধাক্কাধাক্কি থেকে হাতাহাতিও। উদয় নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “করোনাকলে এই ১২০ জন কর্মী যোগদান করেছিল। তখন সমস্ত নিয়ম মেনেই চুক্তিভিত্তিক কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু ২০২২ সালে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারপরে ওঁরা কাকে টাকা দিয়েছেন? এই সমস্ত বিষয়ে আমি কিচ্ছু জানিনা।”
পাল্টা বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ করোনার সময় প্রায় ১২০ জনকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিকিউরিটির কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল। কয়েক মাস কাজ করার পর তাঁদের হঠাৎই কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়। কাজে যোগদানের আশ্বাস মিললেও সেই কাজ ফিরে পাননি তাঁরা। বুধবার হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয় কাজ হারানো কর্মীরা। যদিও বিক্ষোভকারীদের দাবি মানতে নারাজ সিকিউরিটি ইনচার্জ। বিক্ষুব্ধ কর্মী প্রিয়াঙ্কা রায় জানান, ‘‘আজ আড়াই বছর ধরে এখানে কাজ করছি, তখন কোন রকমের এক্স আর্মি এখানে ডিউটি করেননি। কিন্তু পরবর্তীকালে পরপর উনি (সিকিউরিটি ইনচার্জ) টাকা নিয়ে লোক নিয়োগ করেছেন। আমরা আজ এতদিন ধরে এখানে কাজ করছি সেটা কোন ব্যপার না ওঁর কাছে। রাতারাতি আমাদের কাজ থেকে বার করে দেওয়া হল। কোন রকমের নোটিশও দেওয়া হয়নি।’’
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ড. অমিত দান, এই বিষয়ে অবগত নন বলে জানান। ওই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়োগপত্র নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। যে সংস্থা এই সমস্ত সিকিউরিটি স্টাফদের নিয়োগ করেছেন তাদের অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিকিউরিটি ইনচার্জকে আটক করেছে বহরমপুর থানার পুলিশ। মেডিক্যাল কলেজের বিক্ষুব্ধ অবস্থার জেরে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিষেবাও।