দলে কারও মৌরশীপাট্টা চলবে না, ব্লক সভাপতি ও বিধায়কদের একসঙ্গে চলার পরামর্শ ‘দিদি’র বৈঠকে

Published By: Madhyabanga News | Published On:

বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ ‘দিদি’কে কাছে পেয়ে ফের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তবে দু-এক কথা বলার পরেই দিদি তাকে থামিয়ে এই মূহুর্তে অনেকবেশি গুরুত্বপূর্ণ বিজেপির মোকাবিলা করা। এখন নিজেদের মধ্যে ঝগড়া ঝামেলা করবার সময় নয় বলেও তাঁকে বুঝিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।‘দিদি’র পরামর্শ শুনে বৈঠক থেকে বেড়িয়ে হুমায়ুন অবশ্য বলেন “আমাদের এখন এককাট্টা হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। ব্লক সভাপতিদের নিয়ে অন্য কোনও অভিযোগ বা অনুযোগ করবার জন্য এই বৈঠক ছিল না।”

মমতার পাশাপাশি এদিন বৈঠকে বিধায়কদের ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে নিয়ে একযোগে কাজ করবার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নওদার ব্লক সভাপতি সফিউজ্জামান শেখ বলেন, “ অভিষেকদা বলেছেন, দলের সামনে জেলা সভাপতির মতো ব্লকে দলের সামনে থাকবেন ব্লক সভাপতিরাই।”

জেলার উত্তর কি দক্ষিণ অধিকাংশ জায়গাতেই ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে বিধায়কদের বনিবনা হচ্ছে না। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে অন্য কোনও রাজনৈতিক দল নয় তৃণমূলের এক পক্ষ আর এক পক্ষের বিরোধীতায় নেমেছে। বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের  অনুগামী আর ওই বিধানসভার দুই ব্লক সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান ও নজরুল ইসলামের অনুগামীরা। একইভাবে নওদার বিধায়ক সাইনা মমতাজের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে নওদার ব্লক সভাপতি সফিউজ্জামান শেখের অনুগামীরা।

সম্প্রতি বড়ঞাতে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার জেল হেফাজত ইস্তক এলাকা দখলকে ঘিরে ব্লক ব্লকে গোষ্ঠীকোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছে। দিন দুয়েক   আগে তৃণমূল ভবন থেকে নয়া ব্লক সভাপতিদের যে তালিকা বেড়িয়েছে সেখানে বড়ঞাকে উত্তর ও দক্ষিণ দুটি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। সেখানে বড়ঞা উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে গোলাম মোর্শেদ জর্জকে। আর সহ সভাপতি করা হয়েছে মাহে আলমকে। দক্ষিণের সভাপতি করা হয়েছে সমীরণ মন্ডলকে। আপত্তি উঠেছে এই সমীরণকে নিয়েই। মাহে আলম বলেন, “আমাকে যে পদ দেওয়া হয়েছে তাতে আমি খুশি নই। যাঁকে উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে তিনি রাজনীতির কিছুই জানেন না। একাধিক প্রধান ও ১৬জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি।”

See also  জলে ভাজা সিঙ্গারা ! খাচ্ছেন তো ? Murshidabad fruit

এর আগে অখণ্ড বড়ঞা ব্লকে সভাপতি ছিলেন রবীন ঘোষ। তিনি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেল বন্দি বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার ঘনিষ্ঠ বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। বিধায়কের অনুপস্থিতিতে এলাকা দেখভালের জন্য চার জনের যে কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল তৃণমূল, সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন রবীন। সূত্রের দাবি, বড়ঞা উত্তরের সভাপতি ও সহ সভাপতি দু’জনেই বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব ঘনিষ্ঠ। কথা ছিল, একটা অংশে মাহে আলম ও আর একটা অংশে জর্জকে দায়িত্ব দেওয়ার। কিন্তু তালিকা প্রকাশের পর তার নাম না থাকায় ক্ষুব্ধ হন মাহে।

যদিও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব এই মূহুর্তে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সূত্রের দাবি, বিধায়কদের আরও বেশি সংযত হয়ে সকলকে নিয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কড়া ভাষায় অভিষেক বলেছেন, “এলাকায় কারও মৌরশী পাট্টা বরদাস্ত করবে না দল। সবাইকে কাঁধে কাঁধ রেখে লোকসভায় তিনে তিন করতে হবে।”