পবিত্র ত্রিবেদীঃ রেল কর্তাদের নিয়ে নশিপুর রেলসেতু পরিদর্শন করলেন বহরমপুরের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী Adhir Ranjan Chowdhury । শনিবার দুপুরে তিনি ওই সেতুর কাজ দেখতে মুকুন্দবাগ Mukundabag গ্রাম পঞ্চায়েতের দিয়াড়-মাহিনগর এলাকা যান। বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় নিয়ে তিনি এলাকা ঘুরে দেখেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় বহু প্রতীক্ষিত এই রেল ব্রিজের কাজ চালু হওয়ার খবরে তিনি খুশি বলে এদিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন । মুর্শিদাবাদ রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক প্রয়াত আব্দুর রউফ খানের (এ আর খান) নাম উল্লেখ করে সাংসদ জানান, ১৯৯৬ সাল থেকে এই দাবি নিয়ে এ আর খান সাহেব (প্রাক্তন সেনাকর্মী) আমার কাছে গিয়েছিলেন। আমাকে ছবি দেখিয়ে বলেছিলেন এখানে একটা ব্রিজ ছিল। এই ব্রিজটাকে নতুন করে তৈরি করতে হবে। এখানে রেলের কনভেন্সন কমিটির চেয়ারম্যানকে আহবান করেছিলাম। অবশেষে ২০০৪ সালে এটা মঞ্জুর হয়। এখনও এটা সম্পুর্ন হয়নি তা মুর্শিদাবাদবাসীর কাছে দুর্ভাগ্যের। শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, বাংলার উন্নয়নের একটি নাম হচ্ছে নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলের সংযোগ। তাদের কাজ দেখে বুঝছি রেল তৎপর। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে বলব এটা তাড়াতাড়ি হোক। সামান্য একটু কাজের জন্যে এটা আটকে আছে। প্রশাসন তৎপর হলেই এটা হয়ে যায়। তাছাড়া পর্যটনের জন্যে শুধু নয়, দেশের কৌশলগত কারনে এই রেল সংযোগ খুব গুরুত্বপূর্ণ ।
এই বিষয়ে পুর্ব রেলের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক এদিন জানিয়েছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে এখানে কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তবে ওই রেল আধিকারিকের সামনে এদিন সেখানে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ওই রেল সেতুর কাজের জন্যে কয়েকজন জমিদাতা। তাঁদের বক্তব্য, ৯৭ জন জমি দাতার পরিবারপিছু চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।এই সংক্রান্ত লিখিত নথিও আছে। চাকরি দিয়ে কাজ শুরু হোক। তা না হলে সেতুর কাজ শুরু করতে দেব না। এই বিষয়ে জমি দাতা সঞ্জয় কুমার মন্ডল বলেন, আমাদের রেলের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল পরিবার পিছু একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের ফর্মের রিসিভড কপি আছে। রাজ্য সরকারের চুক্তির কপি আছে। একইভাবে চরন কুমার মন্ডল বলেন, আমিও জমিদাতা পরিবার। আমার বক্তব্য হচ্ছে, চাকরি দিতে হবে। না হলে পরিবার নিয়ে এসে এখানে বসে যাব। যদি আমাদের উপর দিয়ে রেল চলে যায়, তাহলে যাবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, নশিপুর রেলসেতু চালু হলে উত্তর ভারতের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের যোগাযোগ ব্যাবস্থা আরও সহজ হবে। দুর্গাপুর কিংবা হাওড়া, শিয়ালদার উপর নির্ভরতা কমবে। ফরাক্কা দিয়ে পাটনা রুটে রেল যেতে পারবে। শিয়ালদা রুটে আরও বেশি রেল চলাচল করবে। তা হলে শুধু মুর্শিদাবাদ জেলা নয়, উপকৃত হবেন নদীয়া জেলার মানুষও। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি হবে ওই এলাকার। পর্যটনের জেলা মুর্শিদাবাদের পর্যটন প্রসারের ক্ষেত্র আরো ভালো হবে। জমি জটে দীর্ঘদিন আটকে ছিল ওই কাজ। গত বুধবার মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের কাছে এই কাজের ব্যাপারে সবুজ সংকেত জানিয়ে মেল আসে বলে সুত্রের খবর। জানা গিয়েছে, তাতে বলা হয়, ওই রেল সেতুর কাজ শুরু হবে। সমস্যা মিটেছে। যা নিয়ে আশাবাদী হয় সবপক্ষ। ওই খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির হাওয়া অনুভব করা যায় সর্বত্র। কিন্তু, জমিদাতাদের এদিনের বক্তব্যে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে। তবে এদিন প্রকাশ্যেই সাংসদের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথোপকথনে রেল কর্তারা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন। জল কোন দিকে গড়াবে সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।