বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ একশো দিনের টাকা বকেয়া রেখেছে কেন্দ্র। এই অভিযোগ তুলে কলকাতায় ধর্না দিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা নয়, আবাস যোজনা সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চনার অভিযোগে সরব ঘাসফুল শিবির। মঙ্গলবার সেই কেন্দ্রেরই এজেন্সী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরটের প্রায় ২২ জন আধিকারিক মুর্শিদাবাদ জেলায় পা রাখলেন সশব্দে। বহরমপুর সহ রাজ্যের আরও চার জায়গায় এদিন তাঁদের সদর্প পদার্পণ অবাক করে রাজ্যবাসীকে। তার কারণ এবার রাজ্যে ইডি হানার লক্ষ্য কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রী নন। এবার তাঁরা খানা তল্লাশী করতে আসেন খোদ আমলার ঘরে। আর তাতেই সরগরম মুর্শিদাবাদের রাজনীতি।
মঙ্গলবার সকালে বহরমপুরের মধুপুরের কালীবাড়ির পথে দুই সরকারি কর্মীর বাড়িতে ইডি কর্তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসেন। একশো দিনের কাজের টাকা নয়ছয় করার মামলা দায়ের হয়েছে মুর্শিদাবাদের দুই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। তাঁদের মধ্যে একজন প্রাক্তন পঞ্চায়েত কর্মী রথীন্দ্রনাথ দে ও অন্যজন মুর্শিদাবাদ জেলার MGNREGA-র বর্তমান নোডাল অফিসার সঞ্চয়ন পান।
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র এই ঘটনায় তবে সরকারি আধিকারিকদেরকেই দায়ি করছেন। তাঁর মতে, ” দেহ বাদ দিয়ে মাথা হয় না কি?” তিনি এও বলেন, “দুর্নীতির সঙ্গে আমলাদের যোগ থাকতেই হবে।” তবে সেই আমলা কতটা স্বেচ্ছায় সেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আর কতটা চাপে পড়ে যুক্ত হয়েছেন তা অবশ্য তদন্তের ব্যপার বলেই জয়ন্ত মনে করেন। আর সেখানেই উৎকোচের আমদানি হয় বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, “ইডি তথ্য প্রমাণ নিয়ে একবার কেন তদন্তের স্বার্থে কোনও একজন দুর্নীতিগ্রস্থের বাড়িতে পাঁচবার তদন্তের জন্য যেতে পারে তাতে আমাদের কী বলবার থাকতে পারে।”
আর এক ধাপ এগিয়ে বিজেপি’র বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, “এতো ট্রেলার হ্যায়। পিকচার আভি বাকি হ্যায়।” তিনি দাবি করেন, “গুটি গুটি পায়ে ইডি সিবিআই মুর্শিদাবাদে পা ফেলতে শুরু করেছে। পাপ বাপকেও ছাড়ে না। তৃণমূলের নেতাদের কথায় এইসব আমলারা গরীবের পেটে লাথি মেরে নিজেরা সেই টাকা ভোগ করেছে। সব বেরবে। অপেক্ষা করুন।”
তবে বিজেপি বা কংগ্রেসের কথায় অতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না তৃণমূলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সংগঠনের জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার। তিনি বলেন, ” কেউ অন্যায় করলে নিশ্চিত শাস্তি তাঁর বরাদ্দ। কিন্তু কজনের বিরুদ্ধে কী করতে পেরেছে সিবিআই, ইডি? এখন মুখ্যমন্ত্রী গরীবের ঘরে একশো দিনের কাজের টাকা পৌঁছে দিচ্ছেন। একদিন তাদের বাড়িতেও সিবিআই ইডি হানা দিতে পারে।”