Murshidabad Zila Parishad যে সভা ২ বছরে হওয়ার ছিল ২৪ বার। সেই সভা হয়েছে মাত্র ২ বার। এমনটাই ছবি মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের জেলাতেও মৎস ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ স্থায়ী সমিতির। পঞ্চায়েত দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতি মাসে ১ বার স্থায়ী সমিতির সভা ডাকার কথা ছিল কর্মাধ্যক্ষের । কিন্তু সভা হয়ছে মাত্র ২ বার। এই সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ভরতপুর ২ ব্লকের মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে সুমন। বাকি সদস্যরা হলেনঃ রাজিব হোসেন, ফতেমা খাতুন, সেনেহারা বিবি সেখ, শ্রাবণী মাঝি সরকার। একই হাল বাকি স্থায়ী সমিতিরও কোনটির সভা হয়েছে ৩ বার, কোনটির ৪ বার। প্রশ্ন উঠছে স্থায়ী সমিতির গুরুত্ব নিয়ে ? এই প্রশ্নের মাঝেই মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে হবে সভা। উপস্থিত থাকবেন মুর্শিদাবাদের জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া।
আরও পড়ুনঃ Murshidabad News: ভোটের আগে ৯৩ বছরের সোহরাব জেলা পরিষদের মেন্টর, কো মেন্টর শাওনি
Murshidabad Zila Parishad স্থায়ী সমিতির সভা নিয়ে প্রশ্ন
Murshidabad Zila Parishad আগের সাধারণ সভায় উঠে আসা একাধিক প্রশ্নে জর্জরিত হয়েছে রুবিয়া সুলতানার ( Rubiya Sultana ) নেতৃত্বাধীন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ ? সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখ সেই সাধারণ সভায় তৃণমূলের সদস্যরাও প্রশ্ন তুলেছিলেনঃ কেন ছয় মাস পর ডাকা হচ্ছে সাধারণ সভা ? এবার আর ছয় মাসের বিরতি নিতে হয় নি। তার আগেই সভা ডাকা হয়েছে। তবে এবার প্রশ্ন উঠছে জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতির বৈঠকের গুরুত্ব নিয়েই।

Murshidabad Zila Parishad যেখানে প্রতি মাসে ১ বার স্থায়ী সমিতির সভা হওয়ার কথা সেখানে কোথাও সভা হয়েছে ২ বছর ৪ বার কোনও সমিতির সভা আবার ২ বছরে মাত্র ২ বার হয়েছে। ২০২৩ এর ১৪ অগস্ট সভাধিপতি নির্বাচন এবং সহকারী সভাধিপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে । ২০২৩ সালের ১৯ শে সেপ্টেম্বর গঠিত হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের ৯ টি স্থায়ী সমিতি । ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হয় স্থায়ী সমিতিগুলির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইনের ১২৫ (৪) এবং ১৭২ (৫) ধারা অনুযায়ী স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষদের কাজ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে সভা না করেই সেই হচ্ছে কীভাবে ? মুর্শিদাবাদের উন্নয়নে কীভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে জেলা পরিষদ ? প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের জেলা পরিষদের দলনেতা আব্দুল্লাহিল কাফি । তিনি বলেছেন, ” স্থায়ী সমিতির এত গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু কোনও কাজই হচ্ছে না”।
Murshidabad Zila Parishad দীর্ঘ ২ বছরের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অর্থ, সংস্থা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা স্থায়ী সমিতির বৈঠক হয়েছে মাত্র ৫ বার। এই সমিতির মাথায় রয়েছেন জেলা পরিষদ সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা, সমিতিতে রয়েছেন সহ সভাপতি আতিবুর রহমান।
জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির বৈঠক হয়েছে ৪ বার। এই স্থায়ী সমিতির সদস্যরা হলেনঃ রানিনগর ১ এর কার্তিক চন্দ্র দাস, লালগোলার জেলা পরিষদ সদস্য মহম্মদ মোতাহার হোসেন, খড়গ্রামের রোশনারা বেগম, বেলডাঙা ২ ব্লকের বাঁশরী ঘোষ এবং বড়ঞার আনারুল হোসেন।

Murshidabad Zila Parishad মাত্র ৩ বার বৈঠকে বসেছে পূর্ত সড়ক ও পরিবহণ স্থায়ী সমিতি। এই স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস। মুর্শিদাবাদ জুড়ে গ্রামীণ রাস্তার বেহাল দশা বারবার উঠে এসেছে আলোচনায়। তাও ২ বছরে মাত্র ৩ বার বসার সময় পেয়েছে এই স্থায়ী সমিতি। এই সমিতির বাকি সদস্যরা হলেনঃ মগরেব সরকার, মহম্মদ আজমাউর সেখ, তাজিমুদ্দিন খান এবং সামসের আল মোমিন। কৃষি সেচ ও সমবয়া স্থায়ী সমিতির বৈঠক হয়েছে ৫ বার। এই সমিতির কর্মাধ্যক্ষা ওজিফা বেগম। স্থায়ী সমিতিতে রয়েছেন আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী, প্রশান্ত সরকার, সুস্মিতা দাস, হাফিজ মহাবুব মুর্শিদ।
Murshidabad Zila Parishad শিক্ষা সংস্কৃতি তথ্য ও ক্রীড়া বিষয়ক স্থায়ী সমিতির সভা হয়েছে মাত্র ৩ বার। এই সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নওদার তৃণমূল নেতা সফিউজ্জমান সেখ। বাকি সদস্যরা হলেনঃ অশেষ কুমার ঘোষ, আঞ্জুমারা খাতুন, দুধ কমল দাস, রাজ্জাক হোসেন। মুর্শিদাবাদের মতো জেলায় যেখানে বাল্য বিবাহ এবং মায়েদের স্বাস্থ্য একটি বড় ইস্যু সেখানেও ৩ বার বৈঠকে বসেছে শিশু ও নারী উন্নয়ন, জনকল্যাণ ও ত্রাণ স্থায়ী সমিতি। এই সমিতির মাথায় রয়েছে কর্মাধ্যক্ষ ইতি সাহা। সমিতিতে রয়েছেন সরস্বতী বাগদী, ইসারুল সেখ হোক, রুমা ব্যানার্জি, তহমিনা বিবিরা।
Murshidabad Zila Parishad বন ও ভূমি সংস্কার বিষয়ক স্থায়ী সমিতির বৈঠক হয়েছে ৩ বার। জেলার ফরাক্কা থেকে লালগোলা নদী ভাঙনে পুনর্বাসন নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। এই কাজে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল এই স্থায়ী সমিতির। এই সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার। কিন্তু ২ বছরে মাত্র ৩ বার বৈঠকে বসেছেন সমিতির সদস্যরা। এই সমিতিতে রয়েছেন হাজিকুল ইসলাম, সাজিবা খাতুন, সাবিরা খাতুন, আশা খাতুন বিবি। দুই বছরের ৪ বার সভা করেছে খাদ্য ও সরবরাহ বিষয়ক স্থায়ী সমিতি। এই সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মন্টু রহমান, স্থায়ী সমিতিতে রয়েছেন মমতাজ বিবি, ভারতী হাঁসদা, ফতেমা বিবি, কামরুল হাসান মিল্টনরা।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র শিল্প, বিদ্যুৎ ও অচিরাচরিত শক্তি বিষয়ক স্থায়ী সমিতি সভা করেছে ৪ বার। এই সমিতির সদস্যঃ আলিয়ারা বিবি ( কর্মাধ্যক্ষ), শ্রাবনী মোদক হালদার, কৃষ্ণ চন্দ্র মার্জিত, মনোজ দাস, আহসান হাবিব পারভেজ। জেলা পরিষদের সদস্যরা জানাচ্ছেন এর মধ্যে স্থায়ী সমিতির প্রথম বৈঠকতে তো উন্নয়নের কোন বিষয় নিয়ে আলোচনাই হয় নি। আর ২ বছরে জেলা পরিষদের সাধারণ সভাও হয়েছে মাত্র ৫ বার। এত বিশাল জেলায় সাধারণ সভা নিয়ে এত অনীহা কেন ?
Murshidabad Zila Parishad পঞ্চায়েত ও গ্রামন্নোয়ন জানিয়ে দিয়েছে, কর্মাধ্যক্ষদের দায়িত্ব
পঞ্চায়েত ও গ্রামন্নোয়ন জানিয়ে দিয়েছে, কর্মাধ্যক্ষদের দায়িত্ব হল সংশ্লিষ্ট স্থায়ী সমিতির জন্য ১ টি ৫ বছরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
সেই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা থেকে প্রতি বছরের জন্য একটি বাৎসরিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। পরিকল্পনা তৈরির এই প্রক্রিয়ায় পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েতের ও জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সমিতির প্রস্তাবগুলিকে ( না আসলে আনিয়ে নিয়ে ) গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিবেচনা করতে হবে। আগামী আর্থিক বছরের জন্য বাজেট প্রস্তুত করতে হবে। বাজেট বার্ষিক পরিকল্পনার ভিত্তিতে তৈরি করতে হবে। মাসে অন্তত একবার স্থায়ী সমিতির সভা করতে হবে।
স্থায়ী সমিতিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের নিয়মিত রূপায়ণ ও তদারকি অবশ্যই করতে হবে। স্থায়ী সমিতির সচিবের সহায়তায় ত্রৈমাসিক রিপোর্ট তৈরি করে সভাপতি/ সভাধিপতি এর কাছে পেশ করতে হবে। এই রিপোর্ট অর্থ সংস্থা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা স্থায়ী সমিতিতে আলোচিত হবে ও পঞ্চায়েত সমিতি/ জেলা পরিষদের পরবর্তী সাধারণ সভায় পেশ করা হবে।
Murshidabad Zila Parishad রিপোর্টে স্থায়ী সমিতিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের অগ্রগতি ( আর্থিক ও কাজের ) কতটা হয়েছে, কতটা হয়নি । কেন হয়নি এইসব বিষয়ের উল্লেখ থাকবে।
প্রয়োজন মত স্থায়ী সমিতির সাথে যুক্ত / কাজের সাথে সম্পর্কিত আধিকারিকদের কাছ থেকে প্রকল্পের / কাজের নির্দেশিকা বুঝে নিতে হবে ও রূপায়ণ বিষয়ে পরামর্শ বিবেচনা করতে হবে। আধিকারিকের কোনো পরিকল্পনা, প্রয়োজন, অভিনব প্রচেষ্টা থাকলে সেগুলিকে মর্যাদা ও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করতে হবে।
এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য, স্থায়ী সমিতির কার্যক্রমের সাথে যুক্ত সরকারি বিভাগগুলির সাথে বা সরকারি বিভাগ থেকে পরিচালিত কাজের সাথে স্থায়ী সমিতির কাজের সমন্বয় সাধন করতে হবে। আধিকারিকের অফিসে গিয়েও প্রয়োজনে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, Murshidabad Zila Parishad -এর স্থায়ী সমিতির সভাই তো ঠিক সময়ে হচ্ছে না। এতো সব কাজ হচ্ছে কীভাবে ?














