Murshidabad নাবালিকা বিয়ে থেকে কিশোরী মাতৃত্ব , মুর্শিদাবাদ জেলার এখন চিন্তার কারণ। স্কুল ছেড়ে বিয়ে হচ্ছে, শহর থেকে মফস্বল, গ্রামে গঞ্জে যে ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বেড়েছে বাল্য বিবাহের সংখ্যা। স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে অপুষ্ট শিশু প্রসবের হার। শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি। এই পরিস্থিতিতে মুর্শিদাবাদ জেলাকে বাল্যবিবাহ ও স্কুলছুট মুক্ত করতে ময়দানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হল কর্মশালা ও আলোচনা সভা। যেখানে জেলার প্রায় ২৫০ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। হরিহরপাড়া এবং বহরমপুর দুটি ব্লক থেকে হাজির ছিলেন স্বনির্ভর দলের প্রায় ৫০০ জন সদস্য। সচেতনতা বাড়াতে হাতিয়ার এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠী। বাল্যবিবাহের কুফল, সামাজিক, অর্থনৈতিক প্রভাব, আইনি পদক্ষেপ- তথ্য চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। মুর্শিদাবাদ জেলা শাসক, অতিরিক্ত জেলা শাসক, CWC চেয়ারম্যান, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড, মহিলা পুলিশ স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক, ডিআরডিসি কর্তা, স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন কর্মকর্তারা এক ছাদের তলায় এই কর্মযজ্ঞে সামিল।
Murshidabad কর্মশালার মূল উদ্দ্যেশ্য কী ছিল?
Murshidabad মুর্শিদাবাদ জেলা শাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘ কেবলমাত্র সচেতনতা সভা নয় একটা উদ্দ্যেশ্য আছে। উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে বহরমপুর এবং হরিহরপাড়া এই দুটি ব্লককে বাল্যবিবাহ মুক্ত কীভাবে করা যায় নির্দিষ্ট একটি সময়সীমার মধ্যে। ‘ বাল্যবিবাহের কী পরিণতি! যে বিষয়ে জেলা শাসক বলেন, ‘ যার ক্ষতি হয়েছে সেই জানে। ‘ জেলার পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি। জানান, ‘ মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ২২% Teenage Pregnency। বহরমপুরে প্রায় ৩১%, হরিহরপাড়ায় প্রায় ৩৪%। সারা রাজ্যের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় সবথেকে বেশী শিশু মৃত্যুর হার।’ সচেতনতা প্রসঙ্গে জানান, খবর আসছে। পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে রুখে দাঁড়াচ্ছে। POCSO কেস হচ্ছে।’
Murshidabad স্বনির্ভর দলের সদস্যদেরও নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বাল্যবিবাহ আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি CWC চেয়ারপার্সন সোমা ভৌমিক জানান, এখন কারও মনে কোন ভয় নেই। আমরা অকুতভয়। যেখানেই বাল্যবিবাহের খবর, কোন শিশুর উপর অত্যাচারের খবর, সেখানেই সকলে মিলে ঝাপিয়ে পড়ে নতুন জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের মধ্যে একটা মেলবন্ধন রয়েছে জেলাতে। Self Help Group এর মহিলারা তাদের ক্ষমতাবলে উঠে এসেছেন।
Murshidabad একদিকে বাল্যবিবাহ মুক্ত মুর্শিদাবাদের অঙ্গীকার, অন্যদিকে এই জেলার দুটি গ্রামকে মডেল হিসেবে তুলে ধরা হয়। কর্মশালা মঞ্চে এদিন দুটি গ্রামকে বাল্যবিবাহ মুক্ত গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। খিদিরপুর পঞ্চায়েতের খিদিরপুর কলোনীকে এবং হরিদাসমাটি পঞ্চায়েতের কৃষ্ণমাটিকে বাল্যবিবাহ মুক্ত গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয় মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের তরফে।
১২ জন কন্যাশ্রি যোদ্ধাকে সম্মানিত করা হয়। যারা গত তিন মাসে নিজের নিজের এলাকায় সাহসিকতার সাথে ৪০ জন নাবালিকা বিয়ে রোধ করেছে।
Murshidabad পুলিশ আধিকারিক থেকে স্বেচ্ছা সেবী সংস্থার কর্তা, কর্মশালা মঞ্চ থেকে তুলে ধরেন নানান বিষয়। উঠে আসে বাল্য বিবাহের কুফল, আইনি জটিলতা। বাল্যবিবাহ থেকে কিশোরী গর্ভাবস্থা- সম্প্রতি উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান সামনে এসেছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। ফলে বাল্যবিবাহ দূরীকরণে সমাজ সচেতনতার প্রক্রিয়াকে চালু রাখার অঙ্গীকার নেওয়া হয়। District Rural Development Cell এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ডঃ সুকান্ত সাহা জানান, সকলের মধ্যে সচেতনতা বোধ জাগিয়ে তোলাই ছিল কর্মশালার লক্ষ্য। দুটি ব্লকের ওপর নজর রাখা হয়। সামনে আসে তথ্য। প্রয়োজন আরও বেশী সচেতনতার। কন্যাশ্রি যোদ্ধারাও যাতে আগামী দিনে বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সমন্বয় রেক্ষয়ে সংগঠিতভাবে কাজ করতে পারে তার জন্যও এই কর্মশালা।