বিশেষ সংবাদদাতাঃ এসে গিয়েছে শ্রাবণ মাস। অথচ দক্ষিণ বঙ্গে বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টির অভাবে সমস্যায় চাষী থেকে সাধারণ মানুষ। সীমান্তবর্তী জনপদ জলঙ্গির Jalangi পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে পদ্মা Padma River | তবে এ বছর অবাক করা ব্যাপার!মূলত বর্ষায় Rainy Season জল বাড়ে পদ্মার | সুবিধা হয় পাট চাষীদের । এই সময়ে পদ্মায় বিভিন্ন রকমের ছোট মাছ Padma Local Fishes পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর জল বাড়েনি । ছোট,বড় কোনো ‘নদীর মাছ’ই বাজারে নেই। বড় রুই,কাতলা, ইলিশ যা আসছে সবই বাইরে থেকে।
জলঙ্গি অঞ্চলে আশেপাশে অনেক গুলো বিল, ঝিল, দামুস রয়েছে । সেখানেই পাট চাষীরা পাট পচাতে দেন। যদিও বর্ষার দেরিতে এ বছর পাট চাষেও বিঘ্ন ঘটেছে । অগত্যা পদ্মা নদীতেই পাট পচাতে হচ্ছে। জলের গভীরতা কমে গেছে, পাট পচানোর ফলে জল নষ্ট হয়ে গেছে, মাছ মারা যাচ্ছে, এমনটাই জানাচ্ছে স্থানীয় মৎসজীবীরা। জলঙ্গির মাছ বাজার স্থানীয় মানুষ ও মৎসজীবী ও বিক্রেতাদের উপার্জনের জায়গা । সাধারণ মানুষের মধ্যে বরাবরই ছোট মাছের চাহিদা ব্যাপক। কিন্তু ছোট মাছ কোথায়?
স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ মন্ডল জানান, “বড়ো পদ্মার, বিলের মাছে এখন পাট পচা গন্ধ! কী করে খাবো ! বড়ো মাছ তো রোজ খাওয়া যায়না ”। বড়ো পদ্মাও জলঙ্গি থেকে অনেকটাই দূর, সময় সাপেক্ষ, রোজ যাওয়াও সম্ভব নয়, তাই রোজ ছোট মাছও বাজারে আসছে না, আসলেও তার পরিমান খুব অল্প। জলঙ্গির অনেক মৎস্যজীবী ও মাছ বিক্রেতা এই মাছ বিক্রি করেই নিজেদের সংসার চালান । বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায় ভাটা পড়েছে । দাম বেড়েছে বহু মাছের । বাজারে খন ট্যাংরা ৬০০ টাকা কেজি, জিওল ৮০০ টাকা কেজি, বেলে ৩৫০ টাকা কেজি, পুঁটি ১২০ টাকা কেজি, ময়া মাছ ১৫০ টাকা কেজি । দাম বেড়েছে পদ্মার কুচো চিংড়িরও।
এ বছরের বর্ষার দেরি ও পদ্মার জল শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়ে এক ভূগোলের শিক্ষক জানাচ্ছেন,“শুধু মাত্র বর্ষার দেরি নয়, ফারাক্কা ব্যারেজ থেকেও সেই পরিমানে জল ছাড়া হয়নি এখনো। তাছাড়া বর্ষা আসলে পদ্মা এই সময় অন্য ভয়াল রূপ ধারণ করে!” এর পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন,“এই পদ্মার জলেই আসে পাশের অনেক খাল বিল পুষ্ট হয়। যদিও এ বছর সেখানেও জল নেই ”। জুলাই মাসের শেষ লগ্নে এসেও বর্ষার দেখা নেই। শুধু কি ছোট মাছ ; ভালো ইলিশ মাছও বাজারে নেই! বড়ো ইলিশের দাম প্রায় ২৫০০, ছোট ইলিশ ১৪০০ থেকে ১২০০ টাকা । মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের বাইরে এখন মাছের দামও । জলঙ্গির মৎসজীবী থেকে মাছ বিক্রেতা সকলেই এখন অপেক্ষা করছেন কবে বর্ষা আসবে!