Murshidabad Rain: দ্রুত গতিতে ছুটে আসা কালবৈশাখী। সঙ্গে আকাশভাঙা বৃষ্টি। ঠিক এমনই একটা মুহূর্তের অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন মুর্শিদাবাদের কৃষকরা । মুর্শিদাবাদ জুড়ে পাট চাষে সাধারণ ভাবে ব্যবহার করা হয় ‘নবীন’ প্রজাতির বীজ । জমিতে সেই পাট বীজ ছড়ানোর জন্য চৈত্রের মাঝামাঝি থেকে মাঝ বৈশাখ হল আদর্শ সময় । দিনে ঝাঁঝালো রোদ্দুর। বিকেলের দিকে মাঝে মাঝে বৃষ্টি। এমন আবহাওয়াই পাট বোনার জন্য উপযুক্ত।
কিন্তু এ বারে বৈশাখের শেষের দিকে দেখা মিলল কালবৈশাখীর বৃষ্টির। ফলে পাট চাষে ক্ষতি হবে সেই আশঙ্কায় ছিলেন পাট চাষিরা। যদিও এখন পাট চাষিরা কমবেশি সবাই মেশিনের জল দিয়েই পাট চাষ করছেন। কিন্তু তাতে খরচা বেশি। তাই কালো মেঘ ভর্তি আকাশের দিকে তাকিয়ে চাষিরা। এখনও পর্যন্ত খুব একটা বেশি বৃষ্টি জেলায় হয় নি।
যদিও ক্ষণিকের এই বৃষ্টিতে খুশি পাট চাষিরাও। পাশাপাশি প্রচণ্ড খরার কারণে ক্ষতি হয়েছে অন্যান্য ফসলেরও বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। বেলডাঙার কৃষক শুভঙ্কর মণ্ডল জানান, ” পরশু দিনের বৃষ্টিতে আমাদের পাট চাষে লাভ হয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে যেহেতু এত খরা আর গরম তাই অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। আরও যদি এখন বৃষ্টি আমরা পায়। তাহলে পাট চাষ আরও ভালো হবে” । পাট চাষে জলের পরিমাণ অনেক লাগে। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে আবহাওয়া ততই খারাপ হয়ে পরছে। ফলস্বরূপ জলের অভাব। তাই অনেক চাষিরা এই ক্ষণিকের বৃষ্টিতে খুশি হলেও সন্তুষ্ট নয়।
সমস্ত ফসলের ক্ষেত্রেই দরকার প্রচুর পরিমাণ জলের। কিন্তু প্রচণ্ড গরমের কারণে ভূগর্ভের জল ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। জল সংকটের মতন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা । সেজন্য পাট চাষ অনেকটা কমিয়ে দিচ্ছেন জেলার চাষিরা। জলের অভাবেই পাট চাষ কমিয়ে দিচ্ছেন বলে জানালেন জেলার চাষিরা। কৃষক অসিত মণ্ডলজানান, ” আজ দীর্ঘদিন ধরে পাটের চাষ করছি। প্রতি বছর জলের অভাব হচ্ছে। তাই মেশিন চালিয়ে জল আনতে হচ্ছে। কিন্তু এইভাবে চললে আমরা পরের বছর হয়ত আর এই পাট চাষ করতে পারব না। একেই এত খরচা তার ওপর দাম ওঠে না। কেন করব এই পাট চাষ ?”
পাটকে ‘সোনালি তন্তু’ বলা হয়। এবং সেই সোনালি তন্তু বহু প্রাচীন সময় থেকে ফলিয়ে গোটা দেশে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলার চষিরা। কিন্তু বর্তমানে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কার’ণে। সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়াই জল সংকটের দরুন। পাট চাষ থেকে ধীরেধীরে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। খুঁজে নিচ্ছেন বিকল্প ফসল যেমন তিল, ভুট্টার মতন লাভদায়ক ফসল।