Murshidabad Politics: লোকসভা ভোটের আগে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর লোকসভা (Berhampore Loksabha) কেন্দ্রে একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনা সামনে আসছে। গত দুদিন দুজায়গায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এর সাথে দুদিনে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০টি তাজা বোমা। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। রবিবার রেজিনগর ( Rejinagar) থানার নাজিরপুরে বিস্ফোরণের ঘটনা সামনে আসে। সোমবার সকালে বেলডাঙায় ঝুনকা এলাকায় ঘটে বিস্ফোরণ। এই বিস্ফোরণে একটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। রবিবার রেজিনগরের ছেতিয়ানি ঘোষপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছিল ২৩টি তাজা বোমা। সোমবার আবার একই জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছে আরও ২৭টি বোমা। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। একের পর এক বিস্ফোরণ ও বোমা উদ্ধারে চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। এনিয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা।
জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস এই বিষয়ে বলেন, “নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বানানো এই সমস্ত বোমাগুলো। ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এমনি ফাটছে। এইগুলি ফাটার কথা নির্বাচনের দিন বা তার আগের মুহূর্তে। এইগুলি সব তৈরি করা হচ্ছে বিরোধীদের মাড়ার জন্য”। ভোটের সময় ভোট লুঠের মতন বিষয় নিয়ে তিনি এদিন বলেন, “তৃণমূল জানে ভোটের সময় কোনভাবে ভোট লুঠ করা সম্ভব হবে না। তাই ভোটের আগে ওরা যা পারছে করে নিচ্ছে”। মুখ্যমন্ত্রী গতকাল মুর্শিদাবাদ জেলায় এসেছেন। এবং একটি শিল্পতালুকে রাত্রি বাস করেন। তারপর আজ সোমবার খড়গ্রাম এবং ভগোবানগোলায় খলিলুর রহমান, আবু তাহের খান এবং ভগবানগোলা উপনির্বাচনের প্রার্থী রিয়াত হোসেন সরকারের জন্য নির্বাচনী সভা করেন। সেই নিয়েও জয়ন্ত সাহা কটাক্ষ করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই জেলায় রয়েছেন। তারপরেও এই জেলায় বোমা ফাটছে এবং ধরা পরছে। তাহলে ভাবুন বোমা কারবারি, মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ প্রশাসন একই সমান্তরাল রেখায় অবস্থান করছে। এবং এই সমান্তরাল রেখায় অবস্থান করে বিরোধী পক্ষকে মাড়ার চেষ্টা করছে”।
এখনও এপ্রিল মাস পুরোপুরি শেষ হয় নি। এর মধ্যেই যে পরিমাণে বোমা মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া যাচ্ছে তাতে বাড়ছে উদ্বেগ। ভোটের দিন কী হবে ? উঠছে প্রশ্ন। বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি শাখারভ সরকার এই বিষয়ে বলেন, “যত তৃতীয় এবং চতুর্থ দফার ভোট এগিয়ে আসবে। ততই দ্রুততার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ প্রশাসনকে চোখে বালি দিয়ে। দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাবে দিদির ভাইয়েরা”। ভোটের আগে বিস্ফোরণ ও বোমা উদ্ধারে অস্বস্তিতে তৃণমূল। তবে এনিয়ে বিরোধীদেরই কাঠগড়ায় তুলছে তৃণমূল।
বহরমপুর মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপূর্ব সরকার এইদিন বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় দেখানোর প্রয়োজন হয় না কাউকে। ২১’এর নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন, পঞ্চায়েত নির্বাচন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কংগ্রেস-সিপিআই(এম) এবং বিজেপির গুলি বোমায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মারা গিয়েছেন। তাই আমরাও আশঙ্কা করছি। কংগ্রেস-সিপিআই(এম) এবং বিজেপি মিলিত ভাবে পঞ্চায়েত ভোটের পুনরাবৃত্তি না ঘটায়”।
বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে ১৩ই মে ভোট। এর আগে এই কেন্দ্রে শক্তিপুরের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্টের বিচারক। এরপর এবার একের পর এক বিস্ফোরণ ও বোমা উদ্ধারে বহরমপুর লোকসভা ভোট আদৌ কতটা শান্তিপূর্ণ হবে এখন সেটাই দেখার।