Murshidabad Lychee Journey গাছ থেকে কীভাবে পাড়া হয় রসালো লিচু ?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

গরমের জনপ্রিয় ফল কী সেটা গুগলে সার্চ করলে। সহজেই চলে আসবে লিচু। আর সেই জনপ্রিয় ফল শয়ে শয়ে চাষ করছেন মুর্শিদাবাদ জেলার লিচু চাষিরা। কিন্তু কিভাবে এই ছোট রসালো ফল আমাদের প্লেট পর্যন্ত আসছে? লিচু বাগানের মালিক সাদেক সেখ জানান, ‘আমাদের লিচু গাছ থেকে পারার কাজ ভোর ৩টে থেকে শুরু হয়। তিন থেকে চারজন গাছে চাপে দিয়ে ঝুড়ি করে নামায়’।

নরম লিচু ফেলা যাবে না মাটিতে। তাই থাকে বিশেষ ব্যবস্থা। লিচুর পাড়ার জন্য ব্যবহার করা হয় বেতের ঝুড়ি। তৈরী করা হয় লিভার । ফিজিক্সের নিয়ে বাঁধা  এই জটিল যন্ত্র নিজেরাই বানান চাষিরা। গাছে দড়ি বেঁধে তৈরী করা হয় কপিকল। কখনো মই বেয়ে, কখনও সিঁড়ি বেয়ে গাছে ওঠেন শ্রমিকরা। এরপর গাছে তুলে দেওয়া হয় ঝুড়ি। লিচু বোঝাই সেই ঝুড়ি সন্তর্পণে নামানো হয় মাটিতে। এরপর চলে ঝাড়াই বাছাই পর্ব ।

ধীরে ধীরে বেছে নেওয়া হয়। লিচুর অতিরিক্ত অংশগুলি। এবং ৫০ পিসের বান্ডিল তৈরি করা হয়। সহজেই সকালে বাজারে লিচু পাওয়া যায়। কিন্তু সেই সকালের শুরু হয় ভোর ৩টে থেকে। যখন ৩/৪ জন লিচু গাছে ওঠে। উঁচু গাছ থেকে এক এক করে পারে লিচুর থোকা। এইভাবেই ১৫-২০ টি ঝুড়ি লিচু ভর্তি করে নামানো হয়। বেশ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। ২০-২৫ ফুট গাছের ওপর কোনো রকমের সেফটি বেল্ট না ব্যবহার করে ওঠা। সত্যি ঝুঁকিপূর্ণ। এই কাজের জন্য তাঁদের মজুরি ৫০০ টাকা দিন। এই সব কিছুর তোয়াক্কা না করেই রোজ উঠে পরছেন গাছে। যাতে বাজারে দুটো লিচু যায় আর সেই লিচু মানুষ উপভোগ করতে পারে।

কিন্তু কাজ এখানেই শেষ নয়। ধীরে ধীরে বেছে নেওয়া হয় সমস্ত ভালো লিচু গুলো। অতিরিক্ত অংশ বাদ দিয়ে তৈরি করা হয় ৫০ পিসের আঠি। এবং ধীরে ধীরে ভর্তি করা হয় বাক্সে। এবং সেই বাক্স করেই পৌঁছে যাচ্ছে দেশ দেশান্তরে। এই বছর ফলন অনেক বেশি। ফলে চাহিদাও অনেক । জেলার লিচু খালি জেলার মানুষ নয় সমস্ত দেশ তথা দেশের বাইরেও চলে যাচ্ছে এক ফোনেই এমনই জানাচ্ছেন বাগানের মালিক থেকে আড়ত মালিক থেকে ক্রেতারা।

এই বছর প্রায় ৩২০০ হেক্টর জুড়ে সমস্ত জেলায় লিচু চাষ হয়েছে। ফলন যেমন বেশি তেমনই রপ্তানিও হচ্ছে দ্বিগুণ। আগের বছরের তুলনায় লিচুর দাম কম হলেও। রপ্তানি প্রচুর বলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে না লিচু চাষিদের। সহজলভ্য এই রসালো লাল ফল আমাদের প্লেট পর্যন্ত রোজ পৌঁছে দিচ্ছেন এই মানুষেরাই। পাশাপাশি জেলার এই ফলের এবার এত চাহিদা হওয়াই খুশি সকলেই।