Murshidabad Labour এক সপ্তাহেই বেঙ্গালুরুতে Bengaluru চলে গেল মুর্শিদাবাদের তরজাতা ৭ পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ। সোমবার বেঙ্গালুরুতে শ্রমিকের থাকার ঘরেই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানেই পুড়ে যান ৭ জন। বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছিল। রবিবার শেষ জীবিত পরিযায়ী শ্রমিক নূরজামান সেখেরও মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয় হরিহরপাড়ার খিদিরপুরের বাসিন্দা জাহেদ আলির। এরপর বহরমপুর থানার নাগড়াজোলের বাসিন্দা মিনারুল সেখ, তাজিবুল সেখ ও জিয়াবুর সেখেরও মৃত্যু হয় শুক্রবার। শনিবার ভোরে মৃত্যু হয় বহরমপুরের নাগড়াজোলের বাসিন্দা সাফিজুল শেখ। হাসান মল্লিককে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছিল । কিন্তু শনিবার তাঁরও মৃত্যু ঘটে। রবিবার মৃত্যু হয় সপ্তম জনের। রবিবার ৫ শ্রমিকের দেহ এসে পৌঁছায় মুর্শিদাবাদে।
Murshidabad Labour হরিহরপাড়ার হরিহরপাড়ার খিদিরপুরের বাড়িতে ফেরে জাহেদ আলির দেহ।
শোক জানাতে গ্রামে ভিড় করেন আত্মীয়রা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে শোকে পাথর পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। রবিবার হরিহরপাড়া মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়ি যান স্থানীয় বিধায়ক নিয়ামত শেখ, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা।
Murshidabad Labour vশুক্রবার থেকেই শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা বেঙ্গালুরুরু উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন । আশা করেছিলেন, ফিরিয়ে আনবেন ছেলেদের। কিন্তু ফেরানো যায় নি। রবিবার গ্রামে এসে পৌঁছায় ৫ জনের দেহ। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে হয় জানাজা। গ্রামজুড়ে শোকের মাঝেও প্রশ্ন উঠেছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের সংকট নিয়ে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ঠিকাদার সংস্থার অধীনে শ্রমিকরা বহুতল নির্মাণের কাজ করছিলেন সেই সংস্থা পরিবার পিছু ৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেছে। মরদেহ এবং সঙ্গীদের ফেরার টিকিটের ব্যবস্থাও করেছে। তবে তরজাতা ৭ জনকে হারিয়ে কার্যত নিঃস্ব ৭ পরিবার। প্রশ্ন উঠছে, ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকার জায়গার নিরাপত্তা নিয়েও। শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি সামনে এসেছে।
Murshidabad Labour সব ছাপিয়ে গ্রামের মানুষ জানতে চাইছেন, এই সাতটা সংসার চলবে কীভাবে ?
Murshidabad Labour কান্নায় ভেঙ্গেপড়ে মৃত শ্রমিক সাফিজুল শেখের মা কোহিনুর বিবি বলেছেন, “ আমি গরীব মানুষ। ছেলেও চলে গেল। এই রকম বিপদ হবে কেউ ভাবে নি। এখন সংসার চলবে কিভাবে ? সরকার দেখুক” । “সাতটা মানুষ কাজের জন্যই তো গিয়েছিল। এখানে তো কোনও কাজ নেই। ছেলের ঘরও নেই। চার মাস আগে ছেলে কাজে গিয়েছিল। ভেবেছিল , ঘর করবে। শুক্রবার ছেলের জীবনটা চলে গেল। বৌমা, নাতিতা কিভাবে থাকবে ?”, প্রশ্ন জিয়াবুর সেখের মা রাহেলা বিবির। মিনারুল সেখের স্ত্রী আয়েশা বিবি ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলছেম “ সেদিন রাত সাড়ে এগারোটা অবধি কথা হয়েছে। বেঙ্গালুরুতে আমার বোন থাকে। সে আড়াইটের সময় খবর দেয়। আমরা সবাইকে বলি। এভাবে সব শেষ হয়ে যাবে কেউ বুঝিনি”।