Murshidabad বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নাশকতার ছক? রাজ্য এসটিএফ-এর হাতে বিস্ফোরক এই তথ্য আসার পরই কার্যত ঘুম উড়েছে সকলের। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত , বর্তমানে বহরমপুরে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি এক জঙ্গি, ওই জঙ্গিকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চলেছে এসটিএফ। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চাইছে এসটিএফ। তৎপর রাজ্য এবং অসম দুই রাজ্যের এসটিএফ।
Murshidabad অভিযুক্ত জঙ্গি তারিকুল ইসলাম ওরফে শাদিক সুমনকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছে এসটিএফ। আবেদনের পরিপেক্ষিতে সোমবার বহরমপুর সিজিএম কোর্টে তোলা হয় তারিকুল ইসলাম ওরফে শাদিক সুমনকে। এসটিএফ সুত্রে জানা গেছে, তারিকুল জেলবন্দি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মডিউল পরিচালনা করছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম মগজধোলাইয়ের কাজ। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই নওদা থেকে ধৃত এসটিএফ STF এর হেফাজতে থাকা সাজিবুল ও মুস্তাকিমকে তারিকুলের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় এসটিএফ। তারিকুলের সাথে হরিহরপাড়া থেকে ধৃত আব্বাস আলী ও মিনারুলের যোগাযোগের একটি সুত্র মিলেছে বলেও দাবি এসটিএফের।
Murshidabad এদিন সকালেই বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আসেন এসটিএফ আধিকারিকেরা। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই তারিকুল ইসলাম ওরফে শাদিক সুমনকে বহরমপুর সিজিএম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। কোর্টে আসেন এসটিএফ বেঙ্গল ও এসটিএফ আসামের আধিকারিকেরা। তারিকুল ইসলামের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। আগামী ১৩ ই জানুয়ারি কোর্টে তোলার ক্ষেত্রে পরবর্তী দিন ধার্য করা হয় । সরকারী আইনজীবী বিশ্বপতি সরকার জানান, ” আজকে কোর্টে তোলা হয় তারিকুল ওরফে শাদিক সুমনকে। এস টি এফ সাত দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়েছিল। মানিনীয় কোর্ট সমস্ত কিছু বিবেচনা করে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আগে যে দুজন ইতিমধ্যেই এস টি এফ এর হেফাজতে গিয়েছে সেই ঘটনায় ১১৩/২/৩/৪ যে সেকশন গুলো ছিল সেই সেকশনেই এই মামলায় তাঁকে যুক্ত করা হয়েছে। এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কারা যুক্ত, কী কী ক্রিয়াকলাপ ছিল- সেগুলো জানার জনই এসটিএফ PC নিয়ে যাচ্ছে।”
Murshidabad উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরের শেষে ঝাড়খন্ডের রামগড় জেলা থেকে এন আর ও ঝাড়খণ্ড পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তারিকুল ইসলাম ওরফে শাদিক সুমন। সামনে আসে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ- জেলবন্দী জঙ্গিও এ রাজ্যে এবিটি-এর সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
Murshidabad গত বছর ডিসেম্বর মাসের ১৮ তারিখে হরিহরপাড়া থানা এলাকায় এসটিএফ অভিযান চালিয়ে মিনারুল শেখ এবং আব্বাস আলী নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের অনুমান, এরা এবিটি-র সদস্য। আব্বাসের বিরুদ্ধে এলাকায় একাধিক অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে সম্প্রতি আব্বাস এলাকায় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে কাজ করছিল। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বছর আগে পকশো আইনে গ্রেপ্তার হয়ে বহরমপুরে জেলবন্দি ছিল আব্বাস। সেই সময় তার সঙ্গে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তারিকুল ওরফে সুমনের পরিচয় হয়। অভিযোগ, জেলবন্দী থাকার সময়ে তারিকুল, আব্বাসের মাধ্যমে হরিহরপাড়া- নওদা এবং মুর্শিদাবাদের বাকি অংশে জঙ্গি সংগঠন বিস্তারের পরিকল্পনা করেন।
Murshidabad সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের ‘চিকেন্স নেক’ হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়ি এবং সংলগ্ন এলাকায় বড়সড় নাশকতার ছক কষেছিল এবিটির সদস্যরা। কিন্তু তার আগেই অসম পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে যায় একের পর এক এবিটি জঙ্গি। এই জঙ্গিদের মধ্যে পাঁচজনের সরাসরি মুর্শিদাবাদ জেলার সঙ্গে যোগ রয়েছে। এসটিএফ সূত্রের খবর, বহরমপুর জেলে থেকেই খাগড়াগড় বিস্ফোরণে সাজাপ্রাপ্ত তারিকুল, মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আব্বাস ,মিনারুল, সাজিবুল, মুস্তাকিমের মতো আরও কিছু জঙ্গির সাহায্যে এ রাজ্যে এবিটি-র সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। তবে মুর্শিদাবাদে ধৃত জঙ্গিদের নেতা ছিল কেরল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মহম্মদ সাব শেখ। হরিহরপাড়া এবং নওদা, এই দু’টি ব্লকে ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে সাবের। সাব এবং তারিকুল এর জঙ্গিজাল কতদূর বিস্তৃত! সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে রাজ্য এসটিএফ।