পবিত্র ত্রিবেদীঃ মধ্যবঙ্গ নিউজঃ আহা কী আনন্দ আকাশে, বাতাসে। ঢাক বাজছে । পুজো আসছে । দূর থেকে দেখে মনে হবে কোনও পাড়াতে দুর্গাপুজো চলছে । বাড়িতে রান্নার কাজ সেরেই ঢাক বাজানো শুরু করছেন মহিলারা । বেশ কয়েকদিন ধরে ঢাকের বোলে মেতে উঠছেন মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমার একটি গ্রামের মহিলারা । পুজো শুরু হওয়ার দিন যত এগিয়ে আসছে । ঢাকের আওয়াজ তত বাড়ছে। ময়ূরাক্ষী নদীর দুই ধারে শরতের কাশফুল ইতিমধ্যেই পুজোর আগমনী শোভা বাড়িয়েছে। ভরতপুর থানা এলাকার লোহাদহ গ্রামে ১৪ জন মহিলা ঢাকি এখন ঢাক বাজানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন । তার প্রস্তুতিতে প্রতিদিন ঢাক বাজছে সেখানে। তাতেই মনে হচ্ছে যেন পুজো চলে এসেছে এগিয়ে। ওই মহিলা ঢাকিদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় আমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠু দাস নিজেই । তিনি ও তাঁর সঙ্গী টিম দুর্গাপুজোয় কলকাতা যাবেন ঢাক বাজাতে।
বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পুজোয় ঢাক বাজাবেন প্রধান ও তাঁর ওই সহযোগী টিম। রাজ্য প্রশাসনে ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পুজোতে ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রশাসনের মেলবন্ধন হয়ে উঠছে বাংলার ঢাক । একই সাথে শহর কলকাতার সঙ্গে গ্রাম বাংলার মিলন । তাঁদের দেখে অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন অন্য মহিলারাও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের মহিলা ঢাকিদের মোট দুটি টিম রয়েছে। প্রতিটা টিমে দশজন করে সদস্য। গত চার বছর ধরে মহিলা ঢাকির দল ঢাক বাজানো শুরু করেছেন । ক্রমে সংখ্যাটা বাড়ছে। দু’বছর করোনা পরিস্থিতি কাটানোর পর এবার সেখানে খুশির হাওয়া। বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক আসছে। ইতিমধ্যে কালীপুজোর ডাকও এসেছে। সেখানকার মহিলা ঢাকি জ্যোৎস্না দাস শনিবার বলেন, ত্রিপুরাতে ঢাক বাজাতে গিয়ে খুব ভাল লেগেছিল। তারপর থেকে ঢাক বাজানো চলছে ।
আমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠু দাসের স্বামী সুভাষ দাস নিজেও একজন ঢাকি। সুভাষ দাস এদিন বলেন, আমরা প্রথম এখানে মহিলা ঢাকির দল তৈরি করি। ত্রিপুরা থেকে ডাক এসেছিল। তারপর থেকে ক্রমশ এই সংখ্যাটা বাড়ছে । মুর্শিদাবাদ জেলার মধ্যে এখানেই মহিলা ঢাকির দল রয়েছে। মহিলা ও পুরুষ মিলিয়ে ১৩ জনের আমাদের টিম এবার মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দুর্গাপুজোয় ঢাক বাজাবে। চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত আমরা সেখানে থাকবো । মেয়েদের মধ্যে ঢাক বাজানোর চরম উৎসাহ রয়েছে। এখান থেকে তাঁরা আয়ও করতে পারছেন ।