দলত‍্যাগীদের নিয়ে অশান্তি কংগ্রেসের ঘরে, কর্মীদের বোঝাতে ভোকাল টনিক নেতাদের

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুরঃ “এ যেন পুনর্বাসন শিবির। তৃণমূলের হয়ে টিকিট না পেয়ে সটান চলে আসছেন কংগ্রেসে। যখন কংগ্রেসের পতাকা নিচ্ছেন তখন শাসক দলের কু্ৎসা শুনে সেই নেতাকে যেন বড় বিপ্লবী মনে হচ্ছে। ও মা! যেই দলীয় প্রতীকে জিতে গেল অমনি ভোল বদল। সেই বিপ্লবী তখন মা মা করে ফের মমতার দলে চলে যাচ্ছেন। এ আবার কী? একবারও দলে নেওয়ার আগে যাচাই করা হবে না সেই ফেক বিপ্লবীকে। এরাই বা কোন ধরনের নেতা।” আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দলের অবস্থান কী জানতে চাওয়ায় একেবারে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন পোড় খাওয়া এক কংগ্রেস নেতা। বললেন, “এই দল লোকসভায় ভোট চাইতে নামবে কোন লজ্জায়। মানুষ যদি ভোট দেয় তাহলে জানতে হবে তা অধীর মিথে ভর করে ভোট দেবেন। দল বলে আর এ জেলায় কিছু নেই।” কিন্তু তিনি নিজের নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না। বললেন “রোষে পড়তে কে চায় বলুন?” বাইরন বিশ্বাসের পর আনারুল হক বিপ্লব। পরপর দুই জনপ্রতিনিধির বেমক্কা কংগ্রেস ত‍্যাগের পর মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের কর্মীদের মনোবল অবশ্য সকলেরই ওই নেতার মতো।

তাঁরা সকলেই জেলা তথা প্রদেশের প্রতি ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, দলের প্রকৃত কর্মীদের টিকিট দিক দল। সেকথা মানছেন প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি কংগ্রেসের শিলাদিত্য হালদার ও। তিনি বলছেন, “কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ দলে আসছেন। আমাদের কর্মীরা তার হয়ে প্রাণপাত করছেন। আর তাঁরা জিতে পুরনো দলে ফিরে যাচ্ছেন। এর ফলে কর্মীদের মনোবল ভাঙছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”

দলের জঙ্গিপুর মহকুমার সভাপতি হাসানুজ্জামান (বাপ্পা) বলেন, ” কর্মীরা এরফলে হতাশ হচ্ছেন। মানুষের আস্থা হারাচ্ছে দল। নেতাদের উচিত আরও একটু বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া।” এটা অস্বীকার করার কোনও কারণ নেই বলছেন জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস। তিনি বলেন, যাঁরা দলত‍্যাগ করে চলে যাচ্ছেন তাঁদের জন্য দলের প্রতি কর্মীদের  রাগ হয়। তাঁদের মনোবলে চিড় ধরে বৈকি। বারবার ধাক্কা খেতে খেতে এগুলো হয়। ওদের কোনও দোষ নেই।” নতুন জেলাপরিষদে ইতিমধ্যে সব পদেই নতুন পুরনো দলীয় জনপ্রতিনিধিদের বসিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধরা বলছেন ” যাঁরা পদ পাননি তাঁরা ফের বিপ্লবী হবেন। আবার কংগ্রেসের কাছে ঘুরঘুর করবেন লোকসভা ভোটের আগে।” যা শুনে হাসানুজ্জামান বলছেন, ” যে কেউ দলে আসতে পারেন। কিন্তু কংগ্রেসের প্রতি তাঁদের দরদ আছে কি নেই তা নেতৃত্বকে যাচাই করে দেখতে হবে।” দলবিরোধী আইন না থাকায় দলত‍্যাগীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না বলে আক্ষেপ করছেন শিলাদিত্য। জয়ন্ত বলছেন, ” রাজনীতি করি। কখনও দেখে শিখি। কখনও ঠেকে শিখতে হয়। তবে কংগ্রেস পুনর্বাসন শিবির নয়। যাঁরা আগামী দিনে দলে আসতে চাইছেন তারা এটা মনে রাখলে ভালো হয়।”