Alkap Song: মুর্শিদাবাদের আলকাপ বাঁচবে কোনপথে ? Murshidabad Alkap

Published By: Madhyabanga News | Published On:

পবিত্র ত্রিবেদীঃ বহরমপুরঃ পদ্মার ভাঙ্গনে তলিয়ে গিয়েছে কারও বাড়ি। মাঠে খাটতে খাটতে জীবনের শেষের দিকে পৌঁছেছেন অনেকেই। জীবন ধারনের জন্যে কেউ বেছে নিয়েছেন অন্য কাজ। কিন্তু তাঁদের সবার মধ্যে মিল হচ্ছে প্রত্যেকেই ঐতিহ্যের আলকাপকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে রয়েছেন। প্রত্যেকেই প্রতিদিন সংগ্রাম করে চলেছেন। লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের আয়োজনে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে আলকাপ শিল্পীদের নিয়ে কর্মশালায় শিল্পীরা তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরলেন। মঙ্গলবার সেখানে তারা বলেন, ভেঙ্গে যাচ্ছে লোকসঙ্গীতের এই দল। সরকার থেকে মাসে ১ হাজার টাকা সাম্মানিক ও সরকারি প্রকল্পের প্রচার করলে টাকা পাওয়া ছাড়া সেভাবে আয় হচ্ছে না। সিরিয়াল ও ডিজিটালের দৌলতে আলকাপ নাট্যের চাহিদা নেই। ২০০ এর বেশি আলকাপ দল এখন হাতে গোনা কয়েকটি সংখ্যায় এসে দাঁড়িয়েছে। সঙ্কটে মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি আলকাপ । তবে সেখানে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা বাসুদেব ঘোষ বলেন, টিভি, এন্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। পশ্চিমের সংস্কৃতির সঙ্গে অসম লড়াই চলছে । তবে জয় হবে লোকসংগীতের। পুরনো মাটির সুর হারিয়ে যাচ্ছে। আলকাপের ঐতিহ্যের প্রতি শিল্পীর দায়বদ্ধতা আছে। সরকার চাইবে প্রকল্পের মাধ্যমে প্রচার হোক। আঙ্গিক বাঁচাতে গেলে পুরনো গান সংগ্রহ করতে হবে। যুগ বদলাচ্ছে, রুচি বদলেছে ।
অনুষ্ঠানে ছিলেন বিশিষ্ট আলকাপ শিল্পী করুনাকান্ত হাজরা, মরতুজ সেখ। এদিন ওই অনুষ্ঠানে আলকাপ পরিবেশন করেন বিভিন্ন আলকাপ দলের শিল্পীরা। তবে বিশিষ্ট শিল্পী ভগবানগোলার মরতুজ সেখ বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে আলকাপ গান শিখেছি ছোটবেলায়। গোরুর গাড়ি চেপে মাঠে-মাঠে গান করতে গিয়েছি। অন্ধকারে হ্যাজাক জেলে গান করেছি। এখন অনেকেই পরিশ্রম করতে চায় না। শিল্পী করুনাকান্ত হাজরা বলেন, এখনই চাহিদা কমতে শুরু করেছে। সিনেমা আমাদের হারাতে পারেনি। তবে সিরিয়াল ও মোবাইলের দাপটে এটা হয়েছে। শিল্পীরা আর কী করবেন সারাদিন মাঠে ধান কেটে সারা রাত গান করে ।
এদিন সেখানে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের প্রচারে আলকাপ কিভাবে ব্যবহার হয় তা তুলে ধরেন শিল্পীরা। সেখানে গান গেয়ে শোনানো হয়, তোমরা যাইও তোমরা যাইও, কন্যাশ্রীর ফরম দিতে যাইও। দুয়ারের সরকার, লক্ষীর ভান্ডার ঘরে ঘরে দিচ্ছে ভাই, সোনার বাংলা গড়তে চাই।
অনুষ্ঠানে শিল্পীরা অনেকে বলেন, আমাদের সবার সরকারি পরিচয়পত্রের কার্ড হয়নি এখনো। কারো বক্তব্য, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ট্যাবলোতে শিল্পীর সংখ্যা বাড়ানো হোক।