MSME Berhampore ফেলে দেওয়া কাঠ দিয়ে দুল, মালা, কলমদানি, পথ দেখাচ্ছেন
MSME Berhampore দৃষ্টিহীন ধৃতরাষ্ট্রকে মহাভারতের বর্ণনা দিয়ে আলো দেখাতেন সঞ্জয়। নিজের উদ্যোগে কাঠ মিস্ত্রির ছেলে সঞ্জয় সরকার (Sanjoy Sarkar) কোটি-কোটি টাকার ব্যবসা করে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বেকার যুবক যুবতীদের পথ দেখাচ্ছেন। বিদ্যুৎ দফতরে চুক্তিভিত্তিক কর্মীর চাকরি ছেড়েছেন। ব্যাঙ্গালোরের আইটি সেক্টরের চাকরি ছেড়েছেন। এরপর বহরমপুরে (Berhampore) নিজের উদ্যোগে তাঁর ব্যক্তিগত কাঠের ব্যবসা এখন ৩-৪ কোটি টাকার। এছাড়া বিভিন্নভাবে ২২২ জনের কর্ম সংস্থানের সঙ্গে জড়িত তিনি। বাবা-দাদু একসময় কাঠের লাঙ্গল করতেন। তৈরি করতেন ঘোড়ার গাড়ি। তারপরে কোনও কারণে চলছিল না ব্যবসা। সেই মার খাওয়া ব্যবসাকে নতুনভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন সঞ্জয়। তারপরে ফেলে দেওয়া কাঠ, কাঠের গুঁড়ো থেকে কানের দুল, বোতাম, কলমদানি, চিরুনি, খেলনা, দোলনা তৈরি করছেন তিনি। ঘরে রাখা কাঠের শিব মূর্তি। সঙ্গে বাহন। দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। প্রশিক্ষণ দেন উৎকর্ষ বাংলা, খাদি, সরকারি আইটিআইয়ে। যুব প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করেন।

আরও পড়ুনঃ SSC GD ২৫ হাজার কর্মচারী নেবে এসএসসি । কীভাবে আবেদন ?
MSME Berhampore সঞ্জয়ের কথায়, যে পরিমাণ কাঠ দরকার হয় একটি দুল তৈরি করতে তাতে হয়তো ১ টাকা খরচ হয়। তা অনেক বেশি টাকায় বিক্রি হয়। কাঠের মালা বিক্রি হবে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। একদিনে অনেক তৈরি করা যায়। এখন কাঠের গয়না পড়বার প্রবণতা বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের খাদি, রাজ্যের আইটিআইয়ে ট্রেনিং করাচ্ছি। ছাঁট কাঠ থেকে ২-৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া জ্বালানির কাঠকে ৫০-১০০ টাকা মূল্যের করা হচ্ছে। কাঠের গুঁড়োও ফেলা যাবে না। ফলে গুঁড়োরও দাম পাবেন। তা দিয়ে অনেক টাকার বোর্ড তৈরি হচ্ছে।

MSME Berhampore কীভাবে শুরু?
MSME Berhampore বহরপুর কমার্স কলেজ থেকে পঠন পাঠন। তখন থেকেই জেলা শিল্প কেন্দ্রে যাওয়া আসা বাড়ে। এরপর বিসিএ। পরে এমটেক। কলেজ পড়তে পড়তেই নিজে কিছু করবার প্রচেষ্টা। বাবা কাঠে জীবন যাপন করতেন। দেখেছিলেন কীভাবে বাবার কাঠের সামগ্রী তৈরির ব্যবসা মার খাচ্ছে। তাঁর কথায়, সেই ব্যবসাকে ঘুরে দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা। বাবা ও পরে তাঁর নামে ঋণ নেওয়া হল। এরপর সেখান থেকে করা হল ক্লাস্টার। তাতে ১০০-র বেশি বিভিন্ন কাঠের মিস্ত্রিকে বিনা টাকায় যন্ত্র কিনে দেওয়া হল। নিজেদের হয়তো ১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। সরকার দিয়েছে ১৯ হাজার টাকা। একের পর এক সরকারের প্রকল্পতে ঢুকেছেন তিনি। সঞ্জয়ের কথায়, একা নই। আমি ১০০-র বেশি কাঠ মিস্ত্রিকে নিয়ে কাজ করেছি। সবাইকে সাহায্য করেছি। পঞ্চাননতলায় জেলাপরিষদের কর্মতীর্থে দোকান রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে, ব্যাঙ্গালোরে ক্লাস্টার দেখে উদ্বুদ্ধ হন সঞ্জয়। তিনি জানালেন, জলঙ্গী রোডে মুক্তিনগরে সরকারি উদ্যোগে কাঠের ক্লাস্টার তৈরি হচ্ছে। ৫ কোটি টাকার প্রকল্প হচ্ছে মুক্তিনগরে।

MSME Berhampore কীভাবে কাজ হয়?
MSME Berhampore শিশু, সেগুন, ফুল কড়াই, নিম, জাম, আকাশমণির মতো কাঠ কিনে আনেন। তাকে শুকনো করা হয়। পালিশ করা হয়। তারপর বিভিন্ন মিস্ত্রিদের দিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে মিস্ত্রিরা সামগ্রী বানান।
MSME Berhampore বেকারত্ব বাড়ছে। নতুন ছেলে মেয়েদের শিল্পমুখী করতে এই উদ্যোগপতির পরামর্শ, সঙ্কোচ ছাড়তে হবে। ব্যবসা করতে লজ্জা পেলে হবে না। একসময় লেখা পড়া শিখে রিক্সা চালাতে লজ্জা পেতেন শিক্ষিত যুবকরা। কিন্তু এখন টোটো চালাচ্ছেন। সবাই মিলে মিশে মেশিন কিনে যেভাবে কাঠ মিস্ত্রিরা লাভ করছেন সেভাবে করতে পারবেন।

MSME Berhampore শিল্পের সমাধানে অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদ জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার স্বপন প্রামাণিক ছাত্র ছাত্রীদের কাছে সঞ্জয় সরকারের উদাহরণ তুলে ধরছিলেন। চাকরি ছেড়ে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছেন তিনি। এরপর ছাত্র ছাত্রীদের উজ্বল মুখগুলো সব তাঁর দিকে ঘুরে যায়। সঞ্জয় জানায়, সরকারি ভর্তুকিতে ঋণ তাঁকে ব্যবসায় প্রচুর সাহায্য করেছে। তবে সঞ্জয় ছাড়া আর উদাহরণ কোথায়? তিনি কি সবেধন নীলমণি? সঞ্জয়দের তৈরি করতে মুর্শিদাবাদ জেলা শিল্পকেন্দ্র কী উদ্যোগ নিচ্ছে? বেকারদের কর্মসংস্থানে কী ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে সেদিকে নজর রাখবে মধ্যবংগ নিউজ।
















