Migrant Worker কথা ছিল রোজা শেষে পরবে বাড়ি ফেরার। কথা ছিল, বাড়ি এসে পরিবারের সকলের জন্য নতুন জামা কাপড় কেনারও। কিন্তু কথা আর রাখা হল না। দীর্ঘ চার মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে প্রাণ হারাল পরিযায়ী শ্রমিক। আপনজনদের ছেড়ে ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের এই করুণ পরিণতিতে পরিবার জুড়ে শুধুই হাহাকার। ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর মা। স্বামীকে হারিয়ে অকালেই বিধবা স্ত্রী। ছোট্ট দুই সন্তান নিয়ে একপ্রকার দিশেহারা। পাড়া প্রতিবেশীরাও শোকস্তব্ধ। প্রায় চার মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বোখরা ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নেকবাস সেখের। রবিবার গ্রামে আসে মৃত্যু সংবাদ।

Migrant Worker পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, মাত্র পাঁচ মাস আগে হায়দ্রাবাদের সেকেন্দ্রাবাদে রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়েছিল নেকবাস সেখ। বাড়িতে স্ত্রী, দুই সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা মাকে রেখে পারি দিয়েছিল ভিন রাজ্যে। কীভাবে হল দুর্ঘটনা? পরিবার সূত্রে জানা যায়, বহুতলে কাজ করার সময় দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন নেকবাস। সেখানেই স্থানীয় হাসপাতালে প্রায় চার মাস ধরে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। মৃতের দাদা ফুলবার সেখ বলেন, রোজা চারটে হলে কাজে গিয়েছিল। ১৭ তম রোজার দিন পড়ে গিয়েছিল। চার মাস ভর্তি ছিল হাসপাতালে। চিকিৎসায় সাড়া দিল না। বলেছিল রোজা শেষে পরবে আসবে। পরবে এসে জামা কাপড় কেনার কথা ছিল। এরই মাঝে এই ঘটনা ঘটে। বাড়ি আর এল না। হায়দ্রাবাদের সেকেন্দ্রাবাদে কাজ করত। এখন নেকবাসের কফিনবন্দী নিথর দেহ বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় পরিবার পরিজনেরা।
Migrant Worker নেকবাসের মতো মুর্শিদাবাদ জেলার বহু পরিযায়ী শ্রমিক আছেন যারা এভাবে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ আবার নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগও আনছেন প্রকাশ্যে। সোমবারই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবক্তব্যে উঠে আসে ভিনরাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘ নির্যাতনের’ প্রসঙ্গ। বাংলার যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা রাজ্যে ফিরে আসতে চান, তাঁদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম এবং মন্ত্রী মলয় ঘটককে আলোচনায় বসতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রী পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, রাজ্যের প্রায় ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে কর্মরত। তাঁরা রাজ্যে ফিরে এলে তাঁদের ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। রেশন কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও করের দেওয়ার আশ্বাস দেন।