Microplastics এক কাপ জল, এক প্লেট ভাত কিংবা এক টুকরো মাছ—সব কিছুতেই অদৃশ্য এক বিষ! নাম তার মাইক্রোপ্লাস্টিক। এত দিন যা ছিল বিজ্ঞানীদের গবেষণাগারে, এখন তা ঢুকে পড়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে, অগোচরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP), এমনকি ভারতের নিজস্ব গবেষণা সংস্থাগুলি বারবার সাবধান করে এসেছে—এই মাইক্রোপ্লাস্টিক কণাই হতে পারে ভবিষ্যতের ভয়ঙ্কর জনস্বাস্থ্য সঙ্কটের উৎস।
Microplastics কী এই মাইক্রোপ্লাস্টিক?
মাইক্রোপ্লাস্টিক হল ৫ মিলিমিটারের কম আকারের প্লাস্টিক কণা, যা চোখে দেখা যায় না। ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল, ব্যাগ, প্রসাধনী দ্রব্য, এমনকি কাপড় থেকেও এই কণাগুলি তৈরি হয়। এগুলি নদী, খাল, পুকুর, মাঠের মাটি, এমনকি নলকূপের জলের মধ্যেও মিশে যাচ্ছে।
শরীরের ভিতরে কী করে ঢুকছে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিক খাচ্ছি—জলের বোতল থেকে শুরু করে রান্নার লবণ, মাছ-মাংস, দুধ এমনকি শাকসবজিতেও এই কণার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। WHO-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, এক জন ব্যক্তি বছরে গড়ে ৫ গ্রাম পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক খেয়ে ফেলছেন—যার পরিমাণ একখানা ATM কার্ডের সমান!
কী বিপদ হতে পারে?
চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে গেলে তা রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। লিভার, কিডনি, অন্ত্র, এমনকি মস্তিষ্কেও জমে গিয়ে সৃষ্ট করতে পারে দীর্ঘস্থায়ী রোগ—ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি। শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য তা আরও বিপজ্জনক।
প্রতিরোধের উপায়?
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা
সচেতনতা গড়ে তোলা স্কুল স্তর থেকে
নদী, খাল, পুকুরের প্লাস্টিক পরিস্কার করা ও নিয়মিত জল পরীক্ষার ব্যবস্থা
গ্রামে গ্রামে ওয়াটার ক্লাব তৈরি করে শিশুদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা
পানীয় জল শোধনের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
Microplastics আমরা ভাবছি আমরা জল খাচ্ছি, আসলে খাচ্ছি প্লাস্টিক। এখনই যদি সতর্ক না হই, তবে ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য রেখে যাব বিষময় পৃথিবী। জল বাঁচাও, প্লাস্টিক বর্জন করো—এই হোক স্লোগান।