নিজস্ব প্রতিবেদনঃ সাংবাদিকতা শুধুই বৃত্তি নয়। ব্রত। সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। পরাধীন ভারতে ছাপার অক্ষরে বাংলা সাংবাদিকতার জন্ম। ১৮১৮ সালে সমাচার দর্পণকে বাংলা সাংবাদিকতার সূচনা ধরলে আজ তা দু’শো বছর পার হয়েছে। পরাধীন ভারতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লিখে জেল খাটতে হয়েছে সাংবাদিকদের। এখন অন্য জগতের মতো সংবাদ মাধ্যম পেশাতেও কর্পোরেটের ছোঁয়া। খবরের কাগজের পরে রেডিও, টিভি। স্যাটেলাইট টিভির বিশ্বায়নের পরে এখন ডিজিটাল যুগ। সামাজিক মাধ্যম বিপ্লব ঘটিয়েছে। ঘরের অন্দরের কথা এখন মুহূর্তে ভাইরাল। তবু এতো কিছুর মাঝেও চাপা থাকা কথা মাঝে মাঝে শোনা যায়। আলোতেই আলো পড়ে। প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর চাপা পড়ে থাকে। অবহেলিত এই বাংলার মধ্য-বঙ্গও। যে স্বরের প্রতিধ্বনি শোনা যাবে মধ্যবঙ্গ নিউজ সংবাদপত্রের প্রতিটা পাতায়।
Madhybanga News News Paper মধ্যবঙ্গের প্রতিটা প্রান্তের কথা উঠে আসবে। ডানে, বামে, উত্তরে ও দক্ষিণে কোনও দিকে হেলার প্রশ্ন ওঠে না। সোজা থাকার অভ্যাসকে সঙ্গী করেই নতুন পথ চলা শুরু করল মধ্যবঙ্গ নিউজ। ডিজিটালের পরে এবার সংবাদপত্র। মহালয়ার তর্পণের আগে শনিবার দুপুরে প্রকাশিত হল মধ্যবঙ্গ নিউজ সংবাদপত্র। বহরমপুরে জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে ইমাজিন কমিউনিটি মিডিয়ার মুর্শিদাবাদ কমিউনিটি কনক্লেভ ২০২৫-এ জন্ম নিল ‘নতুন শিশু’। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস শূর ও নিউজ ১৮ চ্যানেলের সর্বভারতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক সহ বিশিষ্টরা এই পত্রিকার উদ্বোধন করেন। ছিলেন মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শামসুর রহমান, বহরমপুর সদর মহকুমাশাসক শুভঙ্কর রায়, মধ্যবঙ্গ নিউজের সম্পাদক প্রশান্ত চৌধুরী। এছাড়া কান্দি বান্ধব পত্রিকার সম্পাদক নবকুমার মুখার্জি, সংবাদ পাঠক কৌশিক সেন, নাট্য ব্যক্তিত্ব প্রদীপ ভট্টাচার্য, চিত্র শিল্পী সুদীপ রায়, চিত্র পরিচালক মুজিবর রহমান, এই সংবাদপত্রের প্রকাশক সোমা মাইতি সহ বিশিষ্টরা। প্রেক্ষাগৃহে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক, প্রাক্তন সাংবাদিকরা শুভেচ্ছা জানাতে হাজির ছিলেন। ছিলেন ছাত্র ছাত্রী ও জেলার বিশিষ্টরা।
Madhybanga News News Paper এই মহতী উদ্যোগের জন্যে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস শূর বলেন, ২০২৫ সালের শারদীয়ার সময় নতুন একটি খবরের কাগজ আত্মপ্রকাশ করছে। সেটি একটি জেলা সদর থেকে। এই বিষয়টি সাংবাদিকতার ছাত্র হিসেবে আমাদের সবার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুর্শিদাবাদ জেলায় সাংবাদিকতার গৌরবজ্বল ইতিহাস আছে। তাতে আরেকটি সংবাদপত্রের সংযোজন হল। তিনি তাঁর কর্মজীবনের শুরুর দিনগুলিতে ফিরে যান। বলেন, সাংবাদিকতার শুরুতে কলকাতা থেকে লালগোলা ট্রেনে কাগজ ধরানোর জন্যে কী পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হত। আরও জানান, নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্টের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা পত্রিকাগুলির ছাপা সংস্করণ সব ডিজিটালে চলে যাচ্ছে। সেই অবস্থায় আঞ্চলিক কাগজ। স্থানীয় খবরের যে খিদে মানুষের আছে তা নতুন কাগজ আশা করি পূরণ করবে। একই সঙ্গে তিনি এদিন বলেন, ইমাজিন কমিউনিটি মিডিয়া কমিউনিটি রিপোর্টারের ঐতিহ্য তৈরি করেছে। তাঁরা নিজেদের সুখ দুখের কথা নিজেরা বলবেন। এই জেলায় মানব সম্পদের উন্নয়নের হার এখনও অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছয়নি। সাংবাদিকরা সমাজের বাইরে নয়। সংবাদ মহলের অতিরিক্ত দায়িত্ব আছে। এই কাগজ একটি ইতিবাচক দিক নিয়ে তার এলাকাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে। ইমাজিনের অন্য উদ্যোগকেও সাধুবাদ জানাই।
Madhybanga News News Paper স্নেহাশিসবাবু মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে যেসব সাংবাদিক জেলার সীমানা ছাড়িয়ে কলকাতা ও সর্বভারতীয় স্তরে কাজ করেছেন তাঁদের কথা তুলে ধরেন। ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক মধ্যবঙ্গ নিউজ সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় ‘লিড’ খবর বহরমপুর সদর হাসপাতালের খবরের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমি মধ্যবঙ্গ নিউজ সংবাদপত্রের শুরুতে লিড খবরের কথা বলব। যে খবর করার ক্ষেত্রে সাংবাদিক, সাংবাদিকের কাজ করেছেন। আমি বহরমপুর সদর হাসপাতালে জন্মেছি। সেই হাসপাতালে আজ এই অবস্থা। তা যে কোনও প্রশাসকের কাছে, যারা মঞ্চে আছেন তাঁদের কারও কাছে সুখকর খবর নয়। এই মঞ্চে অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক জানতে পারলেন সদর হাসপাতালের এই অবস্থা। তিনি আরও বলেন, আমি সারা দেশ ঘুরি। আমি জানি জেলার সাংবাদিকদের সুরক্ষা খুব কম। এই খবরের কাগজ প্রকাশ ও ইমাজিনের সংশ্লিষ্ট উদ্যোগের জন্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক স্নেহাশিস শূর ও ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক প্রশংসায় ভরিয়ে দেন।