Lotus: পুজো আসছে, হঠাৎ পাওয়া পদ্ম ফুল আগলে অপেক্ষায় গৃহকর্তা

Published By: Madhyabanga News | Published On:

বৃষ্টি ভেজা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, বাড়ির সামনে ফুটেছে পদ্মফুল।পদ্মপাতায় চুঁয়ে পড়া জল ও প্রস্ফুটিত ফুলের সৌরভ বাতাসে নেচে বেড়াচ্ছে। অদ্ভুত এক আনন্দ। অপার বিস্ময় আবিষ্ট করে রাখে। ঠিক যেন রুপকথার গল্প। মা ঠাকুর্মাদের মুখে কাহিনী শোনা যায়- পদ্মফুলের শোভা বাড়িয়ে তাতে উপবিষ্ট হয়ে দেবী মর্তে নামলেন । আকস্মিক ওই ঘটনায় গৃহকর্তা আনন্দে মুর্ছা যায় প্রায়।–এসব কল্পনার ঘটনা বাস্তবে সত্যি না হলেও আচমকাই বহরমপুর-কান্দি রাজ্য সড়কের ধারে একটি পুকুরে পদ্মফুলের আগমন ঘটার কাহিনী গল্পের মতোই। পরবর্তীতে পুষ্করিণী জুড়ে সেই ফুলের চারা ছড়িয়ে পড়ে ।তারপর কেটে গিয়েছে মাঝখানে মাস তিনেক। এবার দুর্গা পুজো যত এগিয়ে আসছে পুকুরের প্রতি ওই গৃহকর্তার নজর বাড়ছে। শারদীয়ায় ওই ফুল মায়ের পায়েই দেবেন তিনি। তখনই পুজোর জন্যে ফুল বেচতেও চান।কিন্তু, তা বলে কী অযত্নের এঁদো পুকুরে রূপসী পদ্ম পড়ে থাকে? স্থানীয় বাশিন্দাদের কাছ থেকে একের পর এক অনুরোধ রাখতে পুকুর থেকে এখন ফুল প্রায় নিঃশেষিত।এবার বর্ষায় টানা অনাবৃস্টির পরে ৩-৪ দিন ধরে বৃষ্টি পড়ছে। সব চাষের মতো পদ্ম চাষিও আশায় বুক বাঁধছেন। এবার ওই পুকুরের কালো জলে নতুন করে ফুল খেলবে। সেই ফুল আর কাওকে দেবেন না গৃহকর্তা। রাখা থাকবে শুধুমাত্র পুজোর জন্যে।
রাজ্যসড়কের ধারে উদয়চাঁদপুর চেকপোস্টের কাছে ওই পুকুর। কিছুটা দূরে বাড়ি বাবলু মণ্ডলের। তিনি বললেন, আমি ওই ফুল চাষ করিনি। এই পুকুরে কোনও দিন পদ্মফুল হয়ওনি। আচমকাই একদিন দেখলাম একটি পদ্মফুলের চারা জলে গজিয়েছে। সেখান থেকেই পুকুর ভর্তি হয়ে গেল। আগলে রেখে দিয়েছি।পদ্মফুলের চাষের জন্যে পুকুর যত্ন করে তৈরি ছিল না। তবে আগলে রেখে চাষ করেছি।অনেকে বিক্রি করতে বলেন। আমি বিক্রি করিনি। তবে পুজো পার্বনের জন্যে কেও চাইলে ফেরাতে পারি না। তাতেই প্রায় শেষ। এখনও পর্যন্ত কারও কাছে পয়সা নিইনি।এবার ফুটলে নিজেদের পুজোতে লাগবে। ওই সিজনে ফুল বিক্রি করে কিছু আয়ও করতে পারব বলে মনে করছি। এখন ফুল খুব কম আছে। কারণ খরা যা গেল, তাতে ফুল টিকে থাকা মুশকিল। কয়েক দিন হল বৃষ্টি হয়েছে আবার ফুটবে । আশেপাশে বোঝাতে দূরে বিলে কয়েকবার পদ্ম চাষ হয়েছে। এখানে এটা হঠাৎ ঘটেছে।–কান্দি থেকে বহরমপুরের পথে বাস থেকে ওই পদ্মফুল চোখে পড়ে সবার। আগমনী সুর, ঢাকের বোল ক্রমশ জোরাল হচ্ছে।এক ভিন রাজ্যের বাসিন্দা কান্দি থেকে ট্রেন ধরার জন্যে বহরমপুর বাসে যেতে যেতে বলছিলেন, পর্যটনের জেলা মুর্শিদাবাদ। রাজ্য সড়কের ধারে এরকম ভাবে পুকুরগুলিতে পদ্মফুলের চাষ হলে শোভা বাড়বে জেলার। আয় হবে চাষির। কাশের সঙ্গে পদ্মের দোলাতে মা দুর্গার আগমনের আনন্দ মুখর হয়ে উঠবে নবাব-রাজাদের জনপদ নতুন পুরনো মুর্শিদাবাদ জেলার সব প্রান্তই।