নিজস্ব সংবাদদাতা, জলঙ্গিঃ লোকসভা ভোটের আগে দুই মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া ও ফুরফুরা হাই মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। সাগরপাড়ার বাম কংগ্রেস জোট ও ফুরফুরার বাম আইএসএফ জোটের কাছে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। হাই কোর্টের নির্দেশে সাগরপাড়া থানার কুমারপুর নেসারুদ্দিন হাই মাদ্রাসার স্কুল নির্বাচন হয় রবিবার। একই দিনে ফুরফুরা হাই মাদ্রাসা পরিচালন সমিতিতেও ভোট হয়। দুই যাওয়ায় ভোটে জোটের কাছে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের আগে এই জয়ে উচ্ছ্বসিত বাম কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানান, “গত পঞ্চায়েতে ভোট হলে মুর্শিদাবাদ, মালদা আমাদের ছিল। ভোট হলেই আমরাই জিততাম। ডিএম, এসডিওকে সরকারের হয়ে ভোট চুরি করতে হয়েছে এর থেকে দুর্ভাগ্যের আর কী হতে পারে।” ভোট যদি শান্তিপূর্ণ হয় তবে সাধারণ মানুষ তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধেই ভোট দেবে। ছয় আসনের মধ্যে ছয় আসনেই বাম-কংগ্রেসের জয় এরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। লোকসভা ভোটেও যদি গণতান্ত্রিকভাবে ভোট হয়, তবে এই ছবিই উঠে আসবে, জানান সিপিএম নেতা সচ্চিদানন্দ কান্ডারি।
রবিবার সকাল থেকেই সাগরপাড়ায় ভোটকে ঘিরে ছিল টানটান উত্তেজনা। সাগরপাড়ায় বিশাল পুলিশী নজরদারিতে হয় ভোট। ৬ টি আসনে প্রার্থী দেয় তৃণমূল। সিপিআইএম কংগ্রেস তিনটি আসন ভাগাভাগি করে লড়াই করে। সন্ধ্যায় ফল প্রকাশের পর দেখা যায় সব কটি আসনেই জয়ী হয়েছে বাম কংগ্রেস প্রার্থীরা। এরপরই উচ্ছ্বাসে মাতেন বাম কংগ্রেস নেতা কর্মীরা। কাঁটাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, “তৃণমূলের এমএলএ প্রায় ১১ বছর এই নির্বাচন করতে দেয়নি। শাসকদলের ভয় ছিল ভোট হলে আমরাই জিতব। তাইই হল।”
লোকসভা ভোটের আগে এই মাদ্রাসার ফলাফলে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তৃণমূলের। কৌশলের কাছে হার বলেই মনে করছেন জলঙ্গির তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জানান, বাম কংগ্রেস জোট সেট করে। কাউকে হাত করে এই চক্রান্ত করেছে। বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার এই বিষয়ে সুর নরম করে জানিয়েছেন দলীয় স্তরে দুর্বলতা খুঁজে দেখা হবে।
মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির ভোটে জয়ের পর লোকসভা ভোটের আগে জেলায় নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করছে বাম কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে লোকসভা ভোটে কী হয় সেটাই দেখার।